বুধবার, ২২ মে ২০১৯ ০২:৫৩:১৬ পূর্বাহ্ন

বালিশ ইস্যুতে ভাইরাল যে ছবি

গত কয়েক দিন ধরে দেশের বেশিরভাগ গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশের অন্যতম নির্মাণাধীন মেগা প্রকল্প রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের দুর্নীতি নিয়ে বেশ বিতর্ক ও সমালোচনা চলছে। বালিশ হাতে নিয়ে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেছে গণঐক্য ও নাগরিক পরিষদ নামে দুটি সংগঠন। এমন বিতর্ক ও বিক্ষোভের পর ওই কাজের দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সব বিল আটকে দিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এদিকে এ দুর্নীতির বিষয়টিতে নজর রাখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তবে এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনার ঝড় অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (২১ মে) ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে একটি ছবি। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অনেকে ছবিটি শেয়ার করে ছবির ব্যক্তির প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করছেন। অনেকেই ছবিটি ভাইরাল করে তার মতো দুর্নীতিবাজের মুখোশ সমাজে উন্মোচনের আহ্বান জানিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছবিটি রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুল আলমের। সরকারি কোষাগারের টাকায় আকাশচুম্বী দামে এসব আসবাবপত্র কেনার পর তা ভবনের বিভিন্ন ফ্ল্যাটে তুলতে অস্বাভাবিক হারে অর্থ ব্যয়ের এ ঘটনা ঘটিয়েছেন গণপূর্ত অধিদফতরের পাবনা গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা, তাদের নেতৃত্বে ছিলেন এই মাসুদুল আলম। প্রসঙ্গত সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আবাসন পল্লিতে আসবাবপত্র কেনাসহ অন্য আনুষঙ্গিক কাজে দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এ নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ওই জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, ওই ভবনের জন্য এক হাজার ৩২০টি বালিশ কেনা হয়েছে। এদের প্রতিটির মূল্য দেখানো হয়েছে ৫ হাজার ৯৫৭ টাকা। আর সেই প্রতিটি বালিশ নিচ থেকে ভবনের ওপরে তুলতে খরচ দেখানো হয়েছে ৭৬০ টাকা! প্রতিবেদন থেকে আরও জানা গেছে, শুধু বালিশের বিষয়েই নয় প্রকল্পের আসবাবপত্র কেনার নথিপত্র পর্যালোচনা করে আসবাবপত্র কেনা ও ফ্ল্যাটে তোলার ব্যয়ে অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। সরকারি আসবাবপত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে অর্থ ব্যয়ের এমন অসঙ্গতির ঘটনা ঘটিয়েছেন গণপূর্ত অধিদফতরের পাবনা জেলার পূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা। জানা গেছে, এই প্রকল্পের আওতায় মূল প্রকল্প এলাকার বাইরে হচ্ছে গ্রিন সিটি আবাসন পল্লী। সেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্রেটির কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার জন্য ১১টি ২০তলা ও ৮টি ১৬তলা ভবন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ২০তলা ৮টি ভবন ও ১৬তলা একটি ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এই ৯টি ভবনে তৈরি হয়েছে ৯৬৬টি ফ্ল্যাট। সেই ৯৬৬টি ফ্ল্যাটের জন্য আসবাবপত্র কিনেছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে ২০তলা একটি ভবনের ১১০টি ফ্ল্যাটের আসবাবপত্র কেনা ও তা ভবনে ওঠাতে সব মিলে ব্যয় দেখানো হয়েছে ২৫ কোটি ৬৯ লাখ ৯২ হাজার ২৯২ টাকা। ওই ১১০টি ফ্ল্যাটের জন্য কেনা টিভি, ফ্রিজ ওয়াশিং মেশিন ও মাইক্রোওয়েভ কেনা হয়েছে। সেসব আসবাবের ক্রয়মূল্য ও সেগুলোকে ফ্ল্যাটে তুলতে যে ব্যয় দেখানো হয়েছে তা রীতিমতো অস্বাভাবিক।