শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল, ১৪৪৫ | ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


শুক্রবার, ১৭ মে ২০১৯ ১০:৩১:৫৭ অপরাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

হঠাৎ কালবৈশাখীর তাণ্ডব: রাজধানীতে ৩ জনসহ সারা দেশে নিহত ১০, আহত ৩০

শুক্রবার সকাল ও সন্ধ্যায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখীর তাণ্ডব চলেছে। সঙ্গে ছিল ব্যাপক বজ্রপাত। সকালের দিকে ঝড়ে উত্তরাঞ্চলে অন্তত সাড়ে ৩শ’ ঘরবাড়ি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। ভেঙে পড়েছে বিপুলসংখ্যক গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি। নষ্ট হয়েছে ফসল। সন্ধ্যার ঝড় এবং বজ্রপাতে রাজধানীসহ দেশের উত্তরাঞ্চলে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া টাঙ্গাইলে বজ্রপাতে মা-ছেলে দগ্ধ হয়েছে। পাবনার ভাঙ্গুরায় রেল লাইনের ওপর গাছ ভেঙে পড়ায় ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের রেল যোগাযোগ সাময়িক বন্ধ রয়েছে। ঝড়ো হাওয়ার কারণে মাওয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। ঝড়ের তাণ্ডবে অভ্যন্তরীণ রুটের দুটি ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ না করে চট্টগ্রামে অবতরণ করেছে। বায়তুল মোকারম মসজিদে প্যান্ডেল ভেঙে পড়ার ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ইসলামী ফাউন্ডেশন। আবহাওয়া বিভাগ (বিএমডি) জানিয়েছে, জ্যৈষ্ঠের তৃতীয়দিন সন্ধ্যায় ঢাকাসহ রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগের বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী ঝড় হয়েছে। এছাড়া সিলেট, মৌলভীবাজার, কুমিল্লায়ও ঝড় হয়েছে। এ সময়ে ঝড়ো ও বজ হাওয়ার তীব্রতাও ছিল অনেক বেশি। আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানান, সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকা এবং দেশের উত্তরাঞ্চলে কালবৈশাখী বয়ে যায়। এর মধ্যে সন্ধ্যা ৭টা ২ মিনিটে ঢাকায় বয়ে যাওয়া কালবৈশাখীর গতিবেগ ছিল ৬৫ কিলোমিটার। তবে সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে রাজধানীর হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঝড়ের গতিবেগ ছিল ৯৩ কিলোমিটার। এটাই ছিল ঢাকায় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ। ঢাকায় ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টিও ছিল। এর পরিমাণ ছিল ২৩ মিলিমিটার। তিনি আরও জানান, সকালে রংপুরে ৬৭ কিলোমিটার বেগে কালবৈশাখী বয়ে যায়। বৃষ্টিও ছিল। ঝড়ে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে ঢাকার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে। সন্ধ্যায় ইফতারের পর নামাজের প্রস্তুতিকালে বয়ে যায় কালবৈশাখী ঝড়। তখন প্যান্ডেল ভেঙে পড়ে। এতে ২৫ জন আহত হন। তাদের মধ্যে শফিকুল ইসলাম (৪০) নামে একজন মারা গেছেন। প্রায় একই সময়ে ঢাকায় বাড্ডায় দেয়ালচাপায় বুলবুল বিশ্বাস (২৮) ও তপন (২৭) নামে দু’জন মারা গেছেন। এছাড়া পাবনার চাটমোহরে ঝড়ের সময়ে আম কুড়াতে গিয়ে ভেঙে পড়া গাছচাপায় মারা গেছেন গৃহবধূ মার্জিনা খাতুন (২৩)। রাজশাহীর বানেশ্বরে ঘরচাপায় সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুস সোবহান সরকার নিহত হন। এছাড়া নওগাঁর পোরশায় শফিনুর রহমান বিষু (৩২), হাসান আলী (৩০) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে মোশাররফ হোসেন (৩৫), রেজাবুল হক (৪০) ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে মারা গেছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে আরও একজনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তার নাম জানা যায়নি। বায়তুল মোকারম মসজিদে ঝড়ে আহতরা হলেন- রকিব হাসান (২২), হেলাল উদ্দিন (৪০), সাকিব (২২), মনিরুজ্জামান (৩৫), শফিকুল ইসলাম (৩৫), আবদুর রহমান (২০) মনিরুল ইসলাম (৩২) রুবেল হোসেন (২৯) তারেক (৩৫), আবদুুল্লাহ আল মাসুদ (২১), শরিফুল ইসলাম (৩০), শফিকুল ইসলাম (১৯), আল আমিন (২০), সোহাগ (২৪), আওয়াল (৩০), জানে আলম (২২), আমানুল্লাহ আমান (২৫০) আফজাল হোসেন (৫৮) হৃদয়। বাকিদের নাম জানা যায়নি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘বায়তুল মোকাররম মসজিদে ঝড়ে যারা আহত হয়েছেন তাদের মধ্যে ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক (মসজিদ ও মার্কেট বিভাগ) মুহাম্মদ মহীউদ্দিন মজুমদার বলেন, ‘শুক্রবার মসজিদে প্রচুর লোক হয়, এর মধ্যে রমজান মাস, তাই মসজিদের দক্ষিণ গেটে মুসল্লিদের নামাজের জন্য একটি প্যান্ডেল করা হয়। শুক্রবার মাগরিবের নামাজের সময় প্রবল ঝড়ে প্যান্ডেলটি ভেঙে পড়ে। তখন সেখানে ১০০ থেকে ১৫০ জনের মতো মুসল্লি ছিলের। এর পর আমরা ১৪-১৫ জন মুসল্লিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এর মধ্যে ২-৩ জনের অবস্থা গুরুতর।’ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদর দফতরের কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার রাসেল সিকদার বলেন, ‘বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে নামাজের জন্য তৈরি প্যান্ডেল ঝড়ো বাতাসে ভেঙে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।’ পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ঝড়ে মসজিদের দক্ষিণ গেটের প্যান্ডেল ভেঙে পড়ে। এ সময় বেশ কয়েকজন মুসল্লি আহত হয়েছেন। ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। তাদের সঙ্গে পল্টন থানা পুলিশও কাজ করছে। এছাড়া ঝড়ের পর রাত ৮টার দিকে উত্তর বাড্ডার একটি ভবনের পার্কিংয়ের দেয়াল ধসে বুলবুল বিশ্বাস (২৮) ও তপন (২৭) নিহত হন। বাড্ডা থানার এসআই মোস্তফা জানান, এ ঘটনায় আহত একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দুটি ফ্লাইটের চট্টগ্রামে অবতরণ : চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, প্রতিকূল আবহাওয়ায় ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে না পেরে অভ্যন্তরীণ রুটের দুটি উড়োজাহাজ চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। এর মধ্যে একটি বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের ও অপরটি ইউএস বাংলার। রাত ৮টা থেকে সোয়া ৮টার মধ্যে উড়োজাহাজ দুটি চট্টগ্রামে অবতরণ করে। বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের ম্যানেজার উইং কমান্ডার সারওয়ার-ই-জামান যুগান্তরকে জানান, বিমানের ফ্লাইটটি রাজশাহী থেকে আর ইউএস বাংলার ফ্লাইটটি সৈয়দপুর থেকে ঢাকা যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ থাকায় এই দুটি ফ্লাইট সেখানে নামতে পারেনি। চট্টগ্রামে ডাইভার্ট করা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের শ্রীরামপুরে বিকালে বজ্রপাতে দু’জন ধান কাটা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- শ্রীরামপুর গ্রামের মোতালেব হোসেনের ছেলে মোশাররফ হোসেন (৩৫) ও হযরত আলীর ছেলে রেজাবুল হক (৪০)। এ সময় হযরত নামে আরও এক ধান কাটা শ্রমিক আহত হন। বালিয়াডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম জানান, শ্রীরামপুর এলাকায় কয়েকজন শ্রমিক জমিতে ধান কাটছিলেন। বিকাল সাড়ে ৪টায় হঠাৎ করে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে শ্রমিক মোশাররফ হোসেন ও রেজাবুল হক মারা যান। এছাড়া হজরত আলী আহত হন। তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নওগাঁ : নওগাঁ প্রতিনিধি জানান, পোরশায় বজ্রপাতে দুই ধান কাটা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় বুলবুল হোসেন নামে এক শ্রমিক আহত হন। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টায় উপজেলার গানুইর গ্রামের মালিপুকুর মাঠে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- উপজেলার নিতপুর ইউনিয়নের গানুইর গ্রামের আজাদ হোসেনের ছেলে শফিনুর রহমান বিষু (৩২) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার পিঠাইল গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে হাসান আলী (৩০)। স্থানীয়রা জানান, গানুইর গ্রামের মালিপুকুর মাঠে ধান কাটার কাজ করছিলেন বুলবুল হোসেন, শফিনুর রহমান ও হাসান আলীসহ কয়েকজন। দুপুরের পর আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। বিকাল সাড়ে ৪টায় অন্ধকার নেমে আসে এবং ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। এ কারণে শ্রমিকরা মাঠ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। হঠাৎ করেই বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলে দুই শ্রমিক নিহত ও একজন আহত হন। টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানান, টাঙ্গাইলের মধুপুরে বজগুরুতর দগ্ধ হয়েছেন। সন্ধ্যায় পৌর শহরের কাজীবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- দিলরুবা, ছেলে সাকিব (১০) ও রাকিব (১২)। তাদের মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। চাটমোহর (পাবনা) : চাটমোহর প্রতিনিধি জানান, চাটমোহরে কালবৈশাখী ঝড়ের মধ্যে আম কুড়াতে গিয়ে গাছের চাপায় মার্জিনা খাতুন (২৩) নামে এক গৃহবধূ নিহত হয়েছে। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মার্জিনা উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের আতিকুর রহমানের মেয়ে। ডোমার (নীলফামারী) : ডোমার প্রতিনিধি জানান, ডোমারে কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) : ফুলবাড়ী প্রতিনিধি জানান, ফুলবাড়ী উপজেলার ভাঙ্গামোর, খোচাবাড়ী ও দক্ষিণ নগরাজপুর, লক্ষ্মীকান্ত ও হোলখানা ধরলা বেষ্টিত গ্রামগুলো দিয়ে শুক্রবার ভোরে বয়ে যায় কালবৈশাখী ঝড়। এতে দু’শতাধিক বাড়িঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এ ছাড়া খোলাহাট বাজারের দোকানঘর উড়ে গিয়ে যত্রতত্র পড়ে আছে। খোচাবাড়ী মোস্তাকিয়া দাখিল মাদ্রাসার পুরো টিন শেড বিল্ডিংঘর দুটি ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। বৃষ্টির পানিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি ভিজে গেছে। খোলা আকাশের নিচে রয়েছে বেশ কিছু পরিবার। সকালে চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বাবু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজখবর নিতে গিয়ে নিজেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মারাত্মক আহত হয়েছেন। ঝড়ে ওই এলাকায় ক্ষতি হয়েছে বাড়িঘর, মৌসুমি ফল, পাট ক্ষেত ও ইরি-বোরো ধান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পরপর দু’বার কালবৈশাখী ঝড়ে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খোচাবাড়ী মোস্তাকিয়া দাখিল মাদ্রাসাটি। ভাঙ্গামোর ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বাবু জানান, কালবৈশাখীর ভয়াল থাবায় খোচাবাড়ী, দক্ষিণ নগরাজপুর ও ভাঙ্গামোড়সহ পাশের লক্ষ্মীকান্ত ও হোলখানা গ্রামের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় একটি গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। সকালে আকস্মিক ভাবে উপজেলার শুকানপুকুরী ইউনিয়নের বাংরোড গ্রামের ওপর দিয়ে এ ঝড় বয়ে যায়। চার থেকে পাঁচ মিনিটের ওই ঝড়ে নূর হক, খেলাফত, কান্দরু, শফিকুল ইসলাম, মোশারফ হোসেন, আবদুল করিম, আবদুর রহিম, অনিল চন্দ্র, সুধির ঘোষ, ঋষিকান্তের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া ঝড়ে উপড়ে পড়েছে গ্রামের অসংখ্য গাছপালা। বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বিদ্যুৎ সংযোগ। নষ্ট হয়েছে ফসল। পীরগাছা : পীরগাছা প্রতিনিধি জানান, সকালে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রচণ্ড কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে কমপেক্ষ ১৫টি গ্রামের আড়াই শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, কয়েকশ’ হেক্টর জমির উঠতি ধান, ভুট্টা, কলা ক্ষেত বিনষ্ট হয়েছে। ঝড়ে কমপক্ষে ২০টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়ায় এবং সংযোগ ক্যাবল ছিঁড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। সেহরির পর ফজরের নামাজ শেষে মানুষজন ঘুমন্ত থাকাকালে আকস্মিকভাবে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। উত্তর দিক থেকে প্রচণ্ড বেগে বাতাস ও শিলাবৃষ্টি উপজেলার পীরগাছা সদর, কৈকুড়ী ও কান্দি ইউনিয়নে আঘাত হানলে ওই ইউনিয়নগুলোর ১৫টি গ্রামের কমপক্ষে আড়াইশ’ কাঁচা ও আধাপাকা ঘরবাড়ি এবং কান্দিরহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিধ্বস্ত হয়। ঝড় ও শিলাবৃষ্টির আঘাতে কমপক্ষে দুই হাজার হেক্টর জমির পাকা ইরি ধান, উঠতি কলা ও ভুট্টা বিনষ্ট হয়েছে। রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ পীরগাছা জোনাল অফিসের এজিএম মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে পীরগাছা বাজারসহ কবলিত এলাকাগুলোর প্রায় ২০টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে গেছে। এছাড়া ৪০/৫০টি স্থানে ছিঁড়ে গেছে বৈদ্যুতিক ক্যাবল। ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন, কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টিতে উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের কমপক্ষে ৩শ’ হেক্টর জমির পাকা ধান, উঠতি কলা ও ভুট্টা ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে।





আরো খবর