শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল, ১৪৪৫ | ১১:৩৬ অপরাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


শুক্রবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৫০:২৩ পূর্বাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

বিআরটিএতে লাইসেন্স আগ্রহীদের ভিড়ে বেড়েছে দালালের উৎপাতও

রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বেপরোয়া বাসের চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফুঁসে উঠেছিল সারাদেশ। রাস্তায় নেমেছিল শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া হয় সড়ক পরিবহনে বিদ্যমান অরাজকতা আর অনিয়ম। তুলে ধরা হয় লাইসেন্স ছাড়াই যানবাহন চালানোর মতো ‘অনিয়ম নিয়ম’ হয়ে যাওয়ার বিষয়টিও। ওই আন্দোলনের জেরে সড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে আইন বাস্তবায়নসহ সচেতনতায় উদ্বুদ্ধ হয়েছে সরকার-প্রশাসনসহ জনসাধারণ। শিক্ষার্থীদের সেই আন্দোলনের সময় থেকেই ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে আবেদনকারীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। রাস্তার মোড়ে মোড়ে শিক্ষার্থীরা লাইসেন্স ঘেঁটে দেখার পর সেই ধারাবাহিকতায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও এ বিষয়ে আরও কড়া অবস্থান নেওয়ায় এখন লাইসেন্স ছাড়া কেউ গাড়ি নিয়ে নামতে সাহস পাচ্ছে না। কিন্তু লাইসেন্সের জন্য আবেদনকারীদের এই ভিড় যেন এক বিরাট সুযোগ হয়ে ধরা দিয়েছে বিআরটিএতে ওঁত পেতে থাকা দালালদের সামনে। ভুক্তভোগীদের মতে, ওই সময় থেকে লাইসেন্স আবেদনকারীদের সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে দালালের সংখ্যাও। লাইসেন্সের জন্য আবেদনকারী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিআরটিএ অফিসে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে গেলে সেখান থেকেই একপ্রকার বাধ্য করা হয় দালালদের মাধ্যমে যেতে। তাছাড়া লাইসেন্স পেতে লেগে যায় বছরের পর বছর। আবার এ অবস্থায় রাস্তায় লাইসেন্স না নিয়ে গাড়ি চালানোও একপ্রকার অসম্ভব। বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত বিআরটিএ কার্যালয়ে গেলে বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত এক শিক্ষানবীশ লাইসেন্স আবেদনকারী বাংলানিউজকে বলেন, এখানে আমি শিক্ষানবীশ লাইসেন্সের আবেদন করেছি। নিয়মানুসারে প্রথমে যেভাবে আবেদন করতে হয় সেভাবে আমি করেছি। কিন্তু আমার ড্রাইভিং পরীক্ষা নেওয়ার সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে আরও এক বছর পর। এদিকে আমার আরেক বন্ধু প্রায় ১৫-১৬ হাজার টাকা খরচ করে মাত্র ২০ দিনে ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্মার্টকার্ড পেয়ে গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই আবেদনকারী বলেন, এখানে মাত্র ২৫০ টাকায় মেডিকেল সার্টিফিকেট পাওয়া যায়। যা আবেদন করার সময় জমা দিতে হয়। সর্বোপরি এই প্রক্রিয়ায় দালালদের কাছে যেতে এক প্রকার বাধ্য করা হয়। ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করতে বিআরটিএ কার্যালয়ে এসেছেন আব্দুস সালাম নামের এক পেশাদার গাড়িচালক। দালালকে ধরে তিনি ৬ হাজার টাকা দিয়ে তার লাইসেন্সটি নবায়ন করে নিচ্ছেন। অথচ নবায়নের ক্ষেত্রে বিআরটিএ বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি অপেশাদার ড্রাইভারদের (হালকা যানবাহন) জন্য মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার ১৫ দিন পর্যন্ত ২ হাজার ৪২৭ টাকা এবং এর বেশি হলে বছরপ্রতি ২০০ টাকা করে জরিমানা। আর পেশাদারদের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে হলে ১ হাজার ৫৬৫ টাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার ১৫ দিন পরে বছরপ্রতি ২০০ টাকা জরিমানাসহ। আব্দুস সালাম বাংলানিউজকে জানান, দালাল ছাড়া লাইসেন্সের কাজ করা অসম্ভব একটি কাজ। আর এখন দালাল অনেক বেশি। সবাই কাজ করতে পারে না। অনেকে টাকা মেরে দেয়। আমার কাজ যে করে দিচ্ছে সে ‘ভালো লোক’। এখানে নবায়নের আবেদন করার পর তেজগাঁওতে পরীক্ষা দিতে হয়। যেহেতু টাকা দিছি সেহেতু পরীক্ষা শুধু নামমাত্র। এখন এমনিতেই লাইসেন্স নবায়ন হবে। তখন তিনি আতাউর নামের এক দালালের ফোন নম্বর দিলে তার সঙ্গে কথা হয় । আতাউর বলেন, লাইসেন্স নবায়নের ক্ষেত্রে (হালকা যানবাহন) ৬ হাজার টাকা লাগবে, আর নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য ১০ হাজার টাকা দিতে হবে। দর কষাকষির এক পর্যায়ে ১০ হাজার টাকারও কমে লাইসেন্স করে দেওয়ার আশ্বাস দেন আতাউর। অথচ গাড়ির লাইসেন্স আবেদনে সরকার নির্ধারিত ফি পেশাদারদের ক্ষেত্রে ১ হাজার ৬৭৯ টাকা ও অপেশাদারদের ক্ষেত্রে ২ হাজার ৫৪২ টাকা। এ বিষয়ে বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান মো. মশিয়ার রহমান ও এনফোর্সমেন্ট বিভাগের পরিচালক নুর মোহাম্মদ মজুমদারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা কল রিসিভ করেননি।





আরো খবর