জাতীয় / ২ কর্মচারীর মৃত্যুতে কর্মকর্তা বললেন, ‘এখন মরে গেছে কি আর করার’
মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৭:২৪:২৭ পূর্বাহ্ন
২ কর্মচারীর মৃত্যুতে কর্মকর্তা বললেন, ‘এখন মরে গেছে কি আর করার’
সাভার: অসুস্থ থাকা অবস্থায় পর্যাপ্ত ছুটি না দেয়ায় সাভার কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের দুই কর্মচারীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই দুই কর্মচারীকে হারিয়ে পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। নিহত দুই জন হচ্ছেন সাভার কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের পরিচ্ছন্নতাকর্মী সাবেদ আলী (৫৫) ও গোয়ালা শফি উদ্দিন মোল্ল্যা (৫৬)।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানায়, সাভার কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের পরিচ্ছন্নতাকর্মী সাবেদ আলী গত ১১ ডিসেম্বর তারিখে দায়িত্ব পালনের সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে চার দিন ছুটি চাইলে তাকে দুই দিনের ছুটি দেয়া হয়। এসময় সে দুই দিনের ছুটি শেষ হলে তাকে অফিসে ডেকে আনেন কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের বায়ার অফিসের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ফিরোজ। এসময় সে অসুস্থ অবস্থায় অফিসে এসে দায়িত্ব পালনের সময় ১৩ তারিখে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কর্তৃপক্ষ উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অসুস্থ থাকায় তাকে ছুটি না দেয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী মিনারা বেগম। এঘটনায় সংসারের একমাত্র উর্পাজনের ব্যক্তিকে হারিয়ে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবন যাপন করছে।
অন্যদিকে অসুস্থ থাকার পরেও ছুটি না পাওয়ায় শফি উদ্দিন মোল্ল্যা নামের এক গোয়ালা গত ১১ ডিসেম্বর তারিখে নিজ বাড়ি মেহেরপুরে গিয়ে মৃত্যু বরণ করেন। তাকে সময় মত ছুটি না দেয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে তার পরিবারের সদস্যরা। তাদের অভিযোগ সে যখন বেশী অসুস্থ ছিলো তখন তাকে ছুটি না দিয়ে কয়েকদিন পরে দুই দিন ছুটি দেন কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে সাভার কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামার এর বায়ার অফিসার ডা. গৌরাঙ্গা বসাক বলেন, আমাদের ভুল হয়েছে, তাদেরকে সঠিক সময়ে ছুটি দিলে তারা মারা যেত না । এখন মরে গেছে কি আর করার। এখন থেকে কেউ অসুস্থ হলে আগেই ছুটির ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।
কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারনে ওই দুই কর্মচারীর মৃত্যু হয়েছে বিষয়টি স্বীকার করে সাভার কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামার এর উপ-পরিচালক লুৎফর রহমান বলেন, সরকারী প্রতিষ্ঠানে একজন মরবে আবার একজন চাকুরিতে প্রবেশ করবে এটাই নিয়ম, ইচ্ছে করলেই কাউকে সহজে ছুটি দেওয়া যায়না। তাদের পরিবার যদি আমার কাছে এবিষয়ে কোন অভিযোগ দেয় বিষয়টি আমি তদন্ত করে দেখবো।
সাভার কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের কর্মচারীদের অভিযোগ, এই সরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা শুধু সরকারী গরু চুরি করে বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এমনকি দুধ বিক্রির টাকাও তারা লুটপাট করছে। কেউ এবিষয়ে প্রতিবাদ করলে তাদেরকে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে হুমকি ধামকি প্রদান করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
এছাড়া গত কয়েকদিন আগে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েকটি গরু চুরির অভিযোগে প্রায় কয়েকজনকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বদলি করা হয়।