আন্তর্জাতিক / সৌদি সরাসরি কাতারের সঙ্গে আলাপ চায় না: টিলারসন
সোমবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৬:৩৩:৩০ পূর্বাহ্ন
সৌদি সরাসরি কাতারের সঙ্গে আলাপ চায় না: টিলারসন
ঢাকা: দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে কূটনৈতিক সঙ্কট সমাধানে সৌদি আরব তাদের প্রতিবেশী কাতারের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করতে রাজি নয় বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন।
সঙ্কট সমাধানে কূটনৈতিক তৎপরতার অংশ হিসেবে স্থানীয় সময় রবিবার সৌদি আরব হয়ে কাতার গিয়ে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে টিলারসন এ তথ্য জানিয়েছেন।
চলতি বছরের ৫ জুন কাতারের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে জিসিসি ও আরব মিত্র সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), বাহরাইন ও মিসর। কাতারের বিরুদ্ধে দেশগুলো সন্ত্রাসে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ তোলেন । পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় আরো কয়েকটি দেশ।
ওই চার আরব রাষ্ট্রের কাতারের ওপর স্থল, নৌপথ ও আকাশপথ অবরোধও দেয়। এর পর থেকে সাড়ে চার মাসের বেশি সময় ধরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনসহ দেশটির কিছু জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল-আহমাদ আল-জাবের আল-সাবাহ সঙ্কট নিরসনে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মাঝখানে আরব লিগের বৈঠকেও এ নিয়ে তুমুল আলোচনা, বিতর্ক হয়েছে। এমনকি কাতারের শীর্ষস্থানীয় এক কর্মকর্তা সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে দেখাও করেছেন। কিন্তু এত কিছুর পরও সংকটের কোনো জট এখনো খোলেনি।
আলজাজিরার খবরে বলা হয়, কাতারের রাজধানী দোহায় দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল থানির সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে টিলারসন বলেন, সংকট নিরসনে সৌদি আরবের আলোচনায় আসার বিষয়ে আশাবাদী নন তিনি।
সৌদির রাজধানী রিয়াদে বৈঠকের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘(সৌদি) যুবরাজের সঙ্গে বৈঠকের সময় আমি তাকে বিনীতভাবে আলোচনায় বসতে বলেছিলাম। কিন্তু (তার পক্ষ থেকে) সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো আলোচনায় বসতে বলে জোরালো কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।’
‘যারা আলোচনার জন্য প্রস্তুত নয়, আমরা তাদের ওপর সেটা চাপিয়ে দিতে চাই না।’ সংবাদ সম্মেলনে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চার আরব দেশের আচরণে হতাশা প্রকাশ করেন।
প্রসঙ্গত, একটি গ্রুপ মনে করছে, এটি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের ছোট এই দেশটির সফল অগ্রযাত্রাকে রুখে দেয়ার সর্বশেষ প্রচেষ্টা। কয়েক দশক আগের উত্তেজনা তেল ও গ্যাস সমৃদ্ধ দেশ কাতার অনেক আগে থেকেই বাহিরের রাষ্ট্র কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত ছিল। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে অটোমান তুর্কিরা দেশটিতে প্রভাব বিস্তার করেছিল। বিংশ শতাব্দীর বেশিরভাগ সময় পর্যন্ত অর্থাৎ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পূর্ব পর্যন্ত কাতার ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।
তেল ও গ্যাস একসময়ের পরাধীন রাষ্ট্রটিকে বিশ্বের অন্যতম ধনী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। তাদের মাথা পিছু আয় বর্তমানে বিশ্বের সর্বোচ্চ। উপসাগরীয় অঞ্চলের ক্ষুদ্র দেশটি পৃথিবীর এক-তৃতীয়াংশ গ্যাস রিজার্ভ নিয়ন্ত্রণ করে। তবে, কাতারের নেতাদের প্রায় সবাই ক্ষমতাসীন আল-থানি পরিবারের। বর্তমানে তামিম বিন হামাদ আল-থানি দেশটির দায়িত্বে রয়েছেন। তারা রক্ষণশীল প্রভাবিত প্রতিবেশি সৌদি আরবের আধিপত্যবাদের বাইরে শাসন করছেন।