আন্তর্জাতিক / উ. কোরিয়া সীমান্তে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার যৌথ মহড়া কেন?
শনিবার, ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০৯:৫৭:৫৬ পূর্বাহ্ন
উ. কোরিয়া সীমান্তে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার যৌথ মহড়া কেন?
মস্কো: প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের রুশ বাহিনী বিদেশী সামরিক বাহিনীর সাথে চলমান সৌহার্দ্যরে অংশ হিসেবে উত্তর কোরিয়ার উপকূলীয় সীমান্তে ভারতের সাথে যৌথ মহড়া শুরু করেছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাস এ খবর দিয়েছে।
ইন্দ্র-২০১৭ নামের এই মহড়ায় দুই দেশের ৭০০ স্থল সেনা, জঙ্গিবিমান ও হেলিকপ্টারসহ ৫০টি বিমান অংশ নিচ্ছে। রাশিয়ার প্রিমোরি অঞ্চলের রাজধানী ভ্লাদিভস্টকে এই মহড়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়।
গত দুই মাস ধরে উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত-সংলগ্ন পূর্ব প্রিমোরি এলাকায় ছোট থেকে মাঝারি মানের কয়েকটি মহড়ায় অংশ নেয় রাশিয়া। চীনের সাথে মহড়ায় রাশিয়ার এলিট প্যারাট্রুপাররাও অংশ নেয়। রাশিয়া তার সামরিক শক্তি প্রদর্শনের জন্য বিশ্বজুড়ে নানা মহড়ায় অংশ নিচ্ছে। তবে বিশেষ করে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তার শক্তি কিছুটা বেশি করেই প্রদর্শন করছে।
বর্তমানে রাশিয়ার প্যাসিফিক ফ্লিটের দুটি ডেস্ট্রোয়ার চার মাস ধরে ওই অঞ্চলের পানিতে টহল দিয়ে বেড়াচ্ছে। অন্যান্য নৌবাহিনীর কাছে মস্কোর এই অবস্থানটি সহজেই দৃষ্টিগোচর হচ্ছে।
১০ দিনের ইন্দ্র-২০১৭-এর সময় রুশ ও ভারতীয় সৈন্যরা নৌ অবরোধ এবং সাবমেরিনবিধ্বংসী যুদ্ধকৌশলে অংশ নেবে। এই কার্যক্রমে তিনটি ডেস্ট্রোয়ার, একটি বড় আকারের সাবমেরিনবিধ্বংসী জাহাজ অংশ নেবে। এই মহড়ার লক্ষ্য কেবল সামরিক নয়। দুই দেশের যৌথ মহড়ায় ব্যবসায়িক কৌশলও গুরুত্ব পাচ্ছে। দুই দেশ এখন ১০ বিলিয়ন ডলারে রুশ অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি চূড়ান্ত করছে।
রাশিয়া কোনো রাখঢাক ছাড়াই প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আরো দৃশ্যমান বাণিজ্যিক ও নিরাপত্তা বাহিনীতেই পরিণত হচ্ছে না, সেইসাথে আঞ্চলিক সামরিক বাহিনীগুলোর কাছে আরো বেশি অস্ত্র বিক্রি করতে চাচ্ছে। ভারতের কাছে বিক্রির অন্যতম রুশ অস্ত্র হচ্ছে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, চারটি ফ্রিগেট রণতরী, হেলিকপ্টার ও সাবমেরিন। অবশ্য এসব বিক্রি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।
গত মাসে রাশিয়া জানিয়েছে, তারা আগামী বছর ১০টিরও বেশি দেশের সাথে যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নেবে। তাছাড়া রাশিয়ার অন্যতম অস্ত্রবাজার এশিয়ার প্রত্যন্ত পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব এলাকায় সামরিক প্রতিনিধিদলও পাঠানো হবে। এসব এলাকার মধ্যে রয়েছে- ভারত, চীন, জাপান, লাওস, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া।
লন্ডনভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক চাথাম হাউজের ম্যাথু বলিগ নিউজউইককে জানিয়েছেন, রাশিয়ার টার্গেট হলো, তার যে অংশীদার আছে, তা প্রচার করা। এসব দেশ যে রুশ অস্ত্র কিনতে আগ্রহী, সেটা ভালোভাবেই পাশ্চাত্যকে জানাতে চাইছে রাশিয়া।
রুশ-ভারত সামরিক মহড়া সম্পর্কে বলিগ বলেন, এটা আসলে উত্তর কোরিয়ার উত্তেজনা এবং দক্ষিণ চীন সাগর ও এর আশপাশের এলাকায় যা কিছু ঘটছে, সব বিবেচনা করে দেয়া একটি রাজনৈতিক বিবৃতি। এসব ঘোষণায় সামরিক অভিব্যক্তি প্রকাশ পাচ্ছে। তবে এতে রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থও জড়িত। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, থাইল্যান্ডের দিকে রুশ সেনাবাহিনীর নজর নিরাপত্তা সরঞ্জাম বিক্রির জন্য একটি সুখবর।
মস্কোর রফতানি বাজারের একটি বড় অংশ দখল করে আছে চীন ও ভারত। ২০০০ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত রুশ অস্ত্র রফতানির ৫৬ ভাগই গেছে এই দুই দেশে