মিয়ানমারে চরম নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের তথ্য অযাচিত অসঙ্গতভাবে সংগ্রহ করেছে জাতিসংঘ। পরে কোনো ধরনের সম্মতি না নিয়েই রাখাইনের এই মুসলিম জনগোষ্ঠীর তথ্য মিয়ানমারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমন অভিযোগ এনে এ ঘটনায় তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। খবর আলজাজিরা ও এএফপির।
খবরে বলা হয়, গত তিন বছর ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে হাজার হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীর নিবন্ধন করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা। রোহিঙ্গাদের সেবা ও সহায়তা দেওয়ার প্রয়োজনে তাদের পরিচয়পত্র সরবরাহে এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশ সরকারের ব্যবহারের জন্য সংগৃহীত এসব তথ্য প্রতিবেশী মিয়ানমারকেও যে দেওয়া হবে—তা রোহিঙ্গাদের অবগত করা হয়নি। সম্ভাব্য প্রত্যাবাসনের কথা বিবেচনায় নিয়ে মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষকে রোহিঙ্গাদের বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে।
এইচআরডব্লিউ’র গবেষক বিলকিস উইলি বলেন, এতে আমরা পরিষ্কার হয়েছি, আমরা যেসব রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের কারো কাছ থেকে সম্মতি চাওয়া হয়নি।
মানবাধিকার সংস্থাটির সংকট ও সংঘাত বিষয়ক পরিচালক লামা ফাকিহ বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের উপাত্ত সংগ্রহ কার্যক্রম জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার নিজস্ব নীতিমালার বিপরীত। এতে শরণার্থীদের আরও বড় ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।
তবে অভিযোগ খণ্ডন করে ইউএনএইচসিআর বলছে, বিশ্বজুড়ে শরণার্থীদের নিবন্ধন করার মাধ্যমে তাদের তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের স্পষ্ট নীতিমালা রয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, শরণার্থীদের বোঝার উপায় ছিল না যে ছবি, আঙুলের ছাপ ও বায়োগ্রাফিক উপাত্ত নেওয়া হচ্ছে, তা মিয়ানমারকেও দেওয়া হবে।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত ২৪ রোহিঙ্গার সাক্ষাৎকার নিয়েছে বৈশ্বিক মানবাধিকার সংস্থাটি। এসব রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, সহায়তা কর্মসূচির বাইরে কোথাও এ তথ্য কাজে লাগানো হবে, তা তাদের জানানো হয়নি।