বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল, ১৪৪৫ | ০৯:৩২ অপরাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


শনিবার, ১৫ জুন ২০১৯ ০৬:৩১:০০ পূর্বাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

মাঝপথে সংযোগ হারিয়ে ফেলেছিল প্রথম চন্দ্রযান

চন্দ্রযান অ্যাপোলো-১১-এর চাঁদে যাত্রা প্রথম চার দিন পরিকল্পনামতোই ছিল। কিন্তু চাঁদে অবতরণের ২০ মিনিট আগেই শুরু হয় গড়বড়। বিরূপ আবহাওয়ার কারণে বিভিন্ন সমস্যায় পড়েন পাইলটরা। দিনটি ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই। ঐতিহাসিক এদিনই চাঁদের বুকে পা রাখেন কোনো মানব। তবে এটি ঐতিহাসিক নাও হতে পারত। কারণ চন্দ্রযানটি যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন কন্ট্রোল সেন্টারের সঙ্গে মাঝপথেই রেডিও সংযোগ হারিয়ে ফেলেছিল। তখনই একটি সতর্ক ঘণ্টা বাজতে শুরু করে। অ্যাপোলো লুনার মডিউল ঈগল তখন গন্তব্যস্থলের মাঝপথে। এডউইন বাজ অলড্রিন ও মিশন কমান্ডার নীল আর্মস্ট্রং ছিলেন চন্দ্রযানে। অ্যাপোলোর প্রধান কমান্ড মডিউল কলাম্বিয়া থেকে নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা আগে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল লুনার মডিউলটি। আর্মস্ট্রংয়ের জন্য এটা খুবই উদ্বেগের ছিল। কিন্তু বুদ্ধিমান পাইলট ও অ্যারোনোটিক ইঞ্জিনিয়ার আর্মস্ট্রং সব সামলে নিয়েছিলেন। মিশন কন্ট্রোলকে তিনি জানান, ১২০২ প্রোগ্রাম অ্যালার্ম আমাদের পড়ে শোনান। তারা অভিযান অব্যাহত রাখতে বলেন। কিছুক্ষণ পর আর্মস্ট্রং ও অলড্রিন বুঝতে পারেন যে, চাঁদের বুকে বড় বড় পাথরের স্তূপ। অলড্রিন আর্মস্ট্রংকে কম্পিউটার থেকে উচ্চতা দেখে অভিযান অব্যাহত রাখতে বললেন। এদিকে জ্বালানিও তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে আসছিল। অবশেষে একটি বালুময় স্থানে অবতরণ করেন লুনার মডিউল। হঠাৎই ইঞ্জিনের সুইচ বন্ধ হয়ে যায়। হিউস্টনের সঙ্গে সংযোগও মেলে। আর্মস্ট্রং ঘোষণা করেন, হিউস্টন, ঈগল অবতরণ করেছে। গ্রাউন্ডের ক্যাপসুল কমিউনিকেটর চার্লি ডিউক বলেন, গ্রাউন্ড থেকে আমরা কপি করছি। আমরা আবারও নিঃশ্বাস ফেলছি। থ্যাংকস এ লট। অ্যাপোলো প্রোগ্রামে কাজ করেছে ৪ লাখ মানুষ : ঐতিহাসিক রেকর্ড অনুসারে, অ্যাপোলো প্রোগ্রামের পেছনে কাজ করেছে প্রায় ৪ লাখ মানুষ। ১৯৬১ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জনএফ কেনেডি তার ভাইস প্রেসিডেন্ট লিন্ডন জনসনকে মহাকাশে সোভিয়েত ইউনিয়নকে টেক্কা দেয়ার নির্দেশ দেন। এর বছর খানেক আগে এক ম্যাগাজিনে কেনেডি লেখেন, আমরা রাশিয়ার সঙ্গে একটি কৌশলগত যুদ্ধে লড়ছি এবং আমরা হারছি। জনসন নাসার মহাকাশ প্রোগ্রামের গডফাদার ওয়ার্নহার ভন ব্রাউনের দ্বারস্থ হন। জার্মানির এ বিজ্ঞানী ভি-২ রকেটের আবিষ্কারক। রকেটটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লন্ডনে তাণ্ডব চালিয়েছিল। যুদ্ধের পর আমেরিকার কাছে আত্মসমর্পণ করেন ব্রাউন। তিনি জনসনকে বলেন, রাশিয়াকে পরাজিত করতে হলে এখনই চাঁদে মানুষ পাঠাতে হবে। এ জন্য একটি বড় বুস্টার রকেট প্রয়োজন। ওই বছরই কংগ্রেসে কেনেডি ঘোষণা করেন, চলতি দশকের মধ্যেই চাঁদে মানুষ পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র। আট বছর পর ক্ষমতায় আসেন রিচার্ড নিক্সন। তিনিও চন্দ্র অভিযানের গুরুত্ব উপলব্ধি করেন। অক্টোবর ১৯৬৮ এবং মে ১৯৬৯ সালের মধ্যে চারটি অ্যাপোলো মিশন পরিচালনা করা হয়। ১৯৬৮ সালের ডিসেম্বরে অ্যাপোলো-১১-এর নেতৃত্ব দেবেন বলে ঘোষণা দেন আর্মস্ট্রং। এটাই সফল হয়। ছোট পদক্ষেপ, বিশাল লাফ : ভন ব্রাউনের নকশা করা দৈত্যাকার রকেটে চড়ে অ্যাপোলো-১১ ক্যাপসুলের যাত্রা হয় ১৯৬৯ সালের ১৬ জুলাই। ক্যাপ কানাভেরাল থেকে সেদিন ১০ লাখেরও বেশি মানুষ সে দৃশ্যের সাক্ষী ছিল। প্রথম প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের সফল চন্দ্রযান অভিযান নিয়ে অনেকের সন্দেহ ছিল। ১৯৯৯ সালে আর্মস্ট্রং স্বীকার করেন, আমাদের ফিরে আসার সম্ভাবনা ছিল ৯০ শতাংশ আর সফলভাবে চাঁদে অবতরণের সম্ভাবনা ছিল ৫০ ভাগ। চাঁদে পা রাখার আগে একটি সাদাকালো ক্যামেরা নিয়েছিল আর্মস্ট্রং। এরপর রেডিওতে তিনি বলেন, ওকে, এখনই আমি লুনার মডিউল থেকে চাঁদে পা ফেলছি। এরপরই তার ঐতিহাসিক উক্তি, এটা মানুষের জন্য একটি ছোট পদক্ষেপ; মানবজাতির জন্য একটি বিশাল লাফ। তার ২০ মিনিট পর নামেন অলড্রিন। দু’জনে একত্রে সোয়া দুই ঘণ্টা চাঁদের বুকে পদচারণা করেছেন, বিভিন্ন নমুনা নিয়ে আসেন। ৮৫৭টি সাদাকালো এবং ৫৫০টি রঙিন ছবি তোলেন তারা। এর মধ্যে মাত্র চারটিতে আর্মস্ট্রংকে দেখা গেছে। অলড্রিনকে দেখা গেছে বেশিরভাগ ছবিতে।





আরো খবর