মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ | ০৪:৪০ অপরাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


শুক্রবার, ১৮ জানুয়ারী ২০১৯ ০৩:১৫:০৭ পূর্বাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

৯৭ শতাংশ অভিযোগ আদালতে শুনানির পর্যায়ে যায় না

পারিবারিকভাবে সবচেয়ে বেশি সহিংসতার শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশের নারীরা। আর সহিংসতার শিকার প্রায় ৯৭ শতাংশ নারীর অভিযোগ আদালতে শুনানির পর্যায়ে যায় না বা গেলেও বাতিল হয়ে যায়। সহিংসতার শিকার নারীদের মাত্র ১.১ শতাংশ থানায় যান। অন্যদিকে কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি ও সহিংসতা প্রতিরোধবিষয়ক সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশনাও মানছে না অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান। ফলে ঘরে-বাইরে সর্বত্রই নারীর নিরাপত্তা ও ক্ষমতায়ন হুমকিতে। এমন অবস্থায় নারী-শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধ না হলে সব অর্জন বিলীন হবে।’ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে নারীর ওপর সহিংসতা নিয়ে দুটি পৃথক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। ‘বাংলাদেশে নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার ওপর দৃষ্টিপাত : প্রবণতা এবং সমাধান’ এবং ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ : সুপ্রিমকোর্টের ২০০৯ সালের নির্দেশনার প্রয়োগ ও কার্যকারিতা’ শীর্ষক দুটি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে একশনএইড বাংলাদেশের ম্যানেজার কাশফিয়া ফিরোজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক তাসলিমা ইয়াসমিন। রিয়াজুল হক বলেন, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি তথা সব অর্জন ম্লান করে দিচ্ছে। অবিলম্বে এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে শিক্ষার হার বাড়লেও সামাজিক ব্যাধি সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পায়নি। তাই সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে হবে। কর্ম ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষদের সচেতন করতে হবে। বিচার নিশ্চিতের জন্য সামাজিকভাবে একটি চাপ তৈরি করতে হবে।’ কাশফিয়া ফিরোজ বলেন, নারীরা ঘরেই বেশি অনিরাপদ। তবে পারিবারিক সহিংসতার মামলাগুলো ঠিকমতো সম্মুখে আসছে না। তাই নারীর ক্ষমতায়নের জন্য নারীকে ঘর থেকে বের হয়ে এসে শিক্ষা ও কর্ম পরিসরে অংশগ্রহণ করতে হবে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. সামিয়া হক বলেন, পারিবারিক সহিংসতার ঘটনার প্রভাব গিয়ে পড়ে পরবর্তী প্রজšে§র ওপরও। শিক্ষামাধ্যমে এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরির বড় সুযোগ রয়েছে। বাংলা ট্রিবিউনের বার্তা প্রধান হারুন-উর রশিদ বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবেদন উপস্থাপনের ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমের নীতিমালায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। দেশের আইন ব্যবস্থায় যে জটিলতা রয়েছে, ন্যায়বিচার নিশ্চিতে তার সংস্কার প্রয়োজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাসলিমা ইয়াসমিন বলেন, সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ প্রণয়নের নয় বছর পরেও প্রতিষ্ঠানগুলো যৌন হয়রানি প্রতিরোধে নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল করিম এনডিসি বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানে এবং নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে এবং নারীর অধিকারকে মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।’ ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টারের ডেপুটি কমিশনার ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, আমাদের দেশের নারীরা নিরাপত্তা এবং সহযোগিতার নিশ্চয়তার অভাবে সহিংসতার শিকার হয়েও অভিযোগ করতে পারেন না। পরিবার থেকেও তারা প্রয়োজনীয় সাহায্য পান না। এ জন্য অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন সহিংসতা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের বোর্ড মেম্বার ড. খলিলুর রহমান এবং ডেপুটি ডিরেক্টর ফারিয়া চৌধুরী।





আরো খবর