পৃথিবীর পেটের ভেতরে আরও একটা জগৎ! তার মানে পৃথিবীর ভেতরের একটা বড় অংশ ফাঁপা? আর সেখানে অন্যরকম কোনো দুনিয়া অবস্থান করছে?
শুনতে পাগলামি মনে হলেও ‘হলো আর্থ’ বা ‘ফাঁপা পৃথিবী’ নিয়ে সপ্তদশ শতক থেকে কিন্তু দস্তুরমতো একটা সিরিয়াস চর্চার বিষয়। ধূমকেতুখ্যাত ব্রিটিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডমন্ড হ্যালি বারবার বলে গেছেন পৃথিবী আসলে ফাঁপা।
আবার তার সমকালেই চার্লস হাটনের মতো সার্ভেয়ার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন। পরবর্তীকালে জুল ভার্নের মতো যুগন্ধর সাহিত্যিক আবার এই ফাঁপা পৃথিবীর তত্ত্বকেই আশ্রয় করে লিখেছিলেন ‘জার্নি টু দ্য সেন্টার অব দ্য আর্থ’-এর মতো উপন্যাস। পৃথিবীর বেশ কিছু জনগোষ্ঠী মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে ‘হলো আর্থ’ তত্ত্ব।
প্রাচীন গ্রিক সভ্যতায় এমন বিশ্বাস প্রচলিত ছিল যে, ভূপৃষ্ঠের কোথাও কোথাও গর্ত রয়েছে, যেগুলো দিয়ে ‘ভিতরের পৃথিবী’তে প্রবেশ করা যায়। তিব্বতি বৌদ্ধধর্মেও মনে করা হয়, পৃথিবীর ভেতরে শম্ভলা নামের এক শহর বিদ্যমান। হিন্দু মিথোলজিতেও ‘পাতাল’ একটা কমন ব্যাপার। আজকের পৃথিবীতেও ‘হলো আর্থ’ নিয়ে ভাবিত মানুষের সংখ্যা কম নয়। তাদের একাংশ মনে করেন, ইউএফও বলে পরিচিত বস্তুগুলো পৃথিবীর পেটের ভেতর থেকেই বেরিয়ে আসে।
সেগুলোর চালক পৃথিবীর ভেতরের বাসিন্দারা। পৃথিবীর দুই মেরুতে যে মেরুপ্রভা দেখা যায়, তা আসলে ভেতরের পৃথিবী থেকে বেরিয়ে আসা আলো।
মার্কিন নৌবাহিনীর অফিসার এবং বিখ্যাত অভিযাত্রী অ্যাডমির্যাল রিচার্ড ইভলিন বার্ড (১৮৮৮-১৯৫৭) বিমানযোগে দক্ষিণ ও উত্তর মেরু অভিযান করেন। ১৯৪৭ সালে উত্তর মেরু অভিযানের সময়ে তিনি হলো আর্থ-এর সন্ধান পান বলে জানান। বিশ্বব্যাপী ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রবক্তারা মনে করেন, নাসা নাকি হলো আর্থের অস্তিত্বের কথা জানে। কিন্তু তারা এটা মানুষকে জানাতে আগ্রহী নয়