রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল, ১৪৪৫ | ০২:১২ পূর্বাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


বৃহস্পতিবার, ২২ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৪০:৫১ পূর্বাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

সিআইডির দাবি

যে ভাই-ভাবি খাওয়াতেন, সন্তানসহ তাঁদেরই খুন করেন রায়হান

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই পরিবারের চারজনকে খুনের রহস্য উদঘাটিত হয়েছে দাবি করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বলেছে, নিহত মো. শাহিনুর রহমানের ভাই রায়হানুল পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে একাই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।

 

আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির খুলনার অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ওমর ফারুক এই দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত রায়হানুলকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে। এজন্য তাঁকে হাজির করা গেল না।’

জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত ডিআইজি ওমর ফারুক বলেন, ‘রায়হানুল নিজে তাঁর ভাই শাহিনুর, ভাবি সাবিনা খাতুন এবং তাদের দুই শিশু সন্তান মাহি ও তাসনিম সুলতানাকে ধারালো চাপাতি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করেছেন। এর আগে তিনি বাজার থেকে ঘুমের ওষুধ ও এনার্জি ড্রিংক কিনে আনেন।’

‘গত ১৪ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে রায়হানুল দুই শিশু এবং ভাবিকে ওষুধ মেশানো পানীয় পান করান। পরে রাত দেড়টার দিকে তাঁর ভাই শাহিনুর মাছের ঘের থেকে বাড়ি এলে তাঁকেও ঘুমের ওষুধ মেশানো এনার্জি ড্রিংক পান করান।’

রায়হানুলের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে অতিরিক্ত ডিআইজি আরো বলেন, ‘রায়হানুল নিজে ঘরের ছাদের কার্নিশ বেয়ে উপরে উঠে ঘরে ঢুকে প্রথমে তার ভাই শাহিনুরকে ঘুমন্ত অবস্থায় হত্যা করেন। এরপর তাঁর হাতের রগ কেটে পায়ে রশি বেঁধে দেন। এর পরই তিনি পাশের কক্ষে ভাবি সাবিনাকে গলাকেটে হত্যা করেন। তাঁর চিৎকারে শিশুরা জেগে উঠলে তাদেরও একইভাবে গলাকেটে হত্যা করেন।’

‘রায়হানুল সিআইডিকে বলেছেন, তাঁর ওপর শয়তান ভর করেছিল। তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও শিশু দুটিকে তিনি হত্যা করেছেন। খালি গায়ে হত্যার পর তিনি রক্তমাখা তোয়ালে ও চাপাতি মাছের ঘেরে ফেলে দেন’, যোগ করেন ডিআইজি।  

কেন এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে- এর জবাবে রায়হানুলের বরাত দিয়ে সিআইডি কর্মকর্তা জানান, রায়হানুল একজন বেকার মানুষ। ৯-১০ মাস আগে তাঁর স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে চলে গেছেন। সেই থেকে তিনি ভাইয়ের সংসারে খাওয়া-দাওয়া করতেন। নিজে কোনো কাজ করেন না এবং খরচও দেন না। এসব কারণে প্রায়ই ভাই-ভাবির সঙ্গে তার ঝগড়া হতো। তাঁরা তাঁকে গালমন্দ করতেন।

রায়হানুলের জবানবন্দির বরাতে সিআইডি কর্মকর্তা আরো জানান, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ভাবির সঙ্গে তাঁর একই বিষয়ে বাদানুবাদ হয়। ভাবি তাঁকে বকাবকি করেন।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, “রাত দেড়টার দিকে রায়হানুল ঘরে বসে টিভি দেখছিলেন। এ সময় তাঁর ভাই শাহিনুর ঘের থেকে এসে তাঁকে বকাবকি করেন। তখন রায়হানুল বলেন, ‘তুমি মাথা ঠাণ্ডা করো। এবারের বিদ্যুৎ বিল আমি দিয়ে দেব।’ এই বলে তিনি তাকেও ঘুমের ওষুধ মেশানো এনার্জি ড্রিংক খাওয়ান। পরে শাহিনুরও ঘুমিয়ে পড়েন। পরে তিনি এক এক করে তাঁদের খুন করেন।”

সিআইডি কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘হত্যার সময় রায়হানুলের সঙ্গে আর কেউ ছিল না। কেবল ভাই-ভাবির বকাবকির কারণেই তিনি হত্যার সিদ্ধান্ত নেন বলে জানিয়েছেন সিআইডিকে।’ রিমান্ডে থাকা রায়হানুলকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমানসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

গত ১৪ অক্টোবর রাতে কলারোয়া উপজেলার খলিসা গ্রামে একই পরিবারের চারজনকে হত্যা করা হয়। সেদিনই পুলিশ রায়হানুলকে গ্রেপ্তার করে।






আরো খবর