অপহরণ করে শিশু সাদমান ইকবাল রাকিনকে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে দুই কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মোবাইল রিচার্জের জন্য নম্বর লিখে দেওয়া টুকরো কাগজের সূত্র ধরে রবিবার রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদের একজন পারভেজ শিকদার (১৮) ছিল রাকিনের গৃহশিক্ষক; অন্যজন তার ঘনিষ্ঠ ফয়সাল আহমেদ (১৯)।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে শিশু রাকিন হত্যার রহস্য এবং আসামিদের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যাব-১-এর অধিনায়ক সারোয়ার-বিন-কাশেম। তিনি বলেন, ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে পরিকল্পিতভাবে শিশু রাকিনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে গ্রেপ্তার হওয়া পারভেজ ও ফয়সাল।
গাজীপুরের শ্রীপুর থানার প্রহ্লাদপুর ইউনিয়নের ফাউগান গ্রাম থেকে শিশু রাকিনকে অপহরণ করা হয় ৫ ডিসেম্বর বিকেলে। এর পাঁচ দিন পর নিজ বাড়ির বাঁশঝাড়ে শিশুটির অর্ধগলিত লাশ পাওয়া যায়। এদিকে সন্তান নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় ৭ ডিসেম্বর শিশুটির বাবা সৈয়দ শামীম ইকবাল শ্রীপুর থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাব।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, সাদমানকে অপহরণের পর একটি নম্বর থেকে ফোন করে মুক্তিপণ চাওয়া হয়। দ্রুত ফ্লেক্সিলোড করতে সিগারেটের ছোট কাগজে নম্বরটি লিখে একটি দোকানে দিয়ে চলে যায় অপহরণকারীরা।
একপর্যায়ে চিরকুটটি র্যাবের হাতে আসে। এরপর শুরু হয় অনুসন্ধান। অবশেষে হাতের লেখা মিলিয়ে খুনিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সারোয়ার-বিন-কাশেম বলে, দুই বছর ধরে সাদমানকে প্রাইভেট পড়াত পারভেজ। বড় অঙ্কের অর্থাৎ ১০ লাখ টাকা প্রাপ্তির আসায় ছয় মাস আগে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে সাদমানের বাবার মোবাইল ফোন চুরি করে সে। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী অপহরণের উদ্দেশ্যে ৫ ডিসেম্বর বিকেলে গোপনে সাদমানকে বাড়ির পাশের একটি বাঁশঝাড়ে নিয়ে যায় পারভেজ ও তার সহযোগী ফয়সাল। একপর্যায়ে শিশুটি ওদের হাত থেকে ছুটে যায়। ঘটনা জানাজানি হওয়ার ভয়ে শিশুটিকে জাপটে ধরে হত্যা করে জঙ্গলের মধ্যে লাশ ফেলে চলে যায়।
পারভেজের পরিকল্পনা সম্পর্কে ব্রিফিংয়ে র্যাব কর্মকর্তা জানান, রাকিনের বাবার ব্যবহার করা মোবাইল ফোন দিয়ে অপহরণের পর তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে খুব সহজে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ফাঁকি দেওয়া যাবে। এমনকি মোবাইল ফোনের কল ডিটেইলস থেকে ধরা পড়ার কথা মনে করে সে ছয় মাস আগে থেকে মোবাইল সেটটি বন্ধ রাখে।