বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আওয়াল, ১৪৪৬ | ১২:৩৪ অপরাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


সোমবার, ০২ এপ্রিল ২০১৮ ০৯:৫৪:০৪ অপরাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

যৌন সন্ত্রাসের মহামারি রুখে দাঁড়ানোর ডাক

দেশে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ধর্ষণ। প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও ঘটছে ধর্ষণের ঘটনা। শুধু ধর্ষণ নয়, গণধর্ষণ ও শিশু ধর্ষণ এখন হরমামেশা হচ্ছে। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) তাদের  ত্রৈমাসিক এক প্রতিবেদনে বলেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ এই তিন মাসে সারা দেশে ১৮৭ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।  এর মধ্যে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১৯ জনকে। ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ২জন। এ ছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে আরো ২১ জনকে।

আরেক মানবাধিকার সংস্থা অধিকার গতকাল তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে জানুয়ারি মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৪৬ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে ৭৮ জন ও মার্চ মাসে ৫৯ জন। এ ছাড়া এই তিন মাসে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন আরো ৫৪ জন। মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশে এখন ধর্ষণের মহামারি চলছে। বিচারহীনতার কারণে ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়াতে এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ ব্যবস্থা না নিলে অবস্থা আরো চরম আকার ধারণ করবে। বিদ্যমান আইনেই এসব ঘটনা বন্ধ করা সম্ভব উল্লেখ করে তারা বলেন, আইনের সঠিক প্রয়োগ খুবই জরুরি। এ ছাড়া ঘটনার পর মামলা হলে এর সুষ্ঠু তদন্ত ও আইনে যে সময় দেয়া হয়েছে তার মধ্যেই তদন্ত ও বিচার শেষ করতে হবে। বিশিষ্টজনরা বলছেন, ধর্ষণের মতো অপরাধের বিরুদ্ধে সবার আগে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এ সমাজে ধর্ষকের স্থান নেই এমন মনোভাব নিয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে উঠলে কেউ এ ধরনের অপরাধ করার সাহস পাবে না। ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান মনে করেন, ধর্ষণের ঘটনা রোধে সামাজিক আন্দোলনই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। এজন্য সামাজিক আন্দোলন আরো বেগবান করতে হবে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মানবজমিনকে বলেন, নারী ও শিশু ধর্ষণ মামলা দ্রুত শেষ করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এ বিষয়ে বলেন, ধর্ষণ যেভাবে বাড়ছে একটি বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। স্বাভাবিকভাবে ধর্ষণ হলে মামলা হয়, তদন্ত হয়, অপরাধীকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। অপরাধীকে একসময় শাস্তি দেয়া হয়। কিন্তু আমাদের দেশে আইনে একটা দীর্ঘসূত্রতা আছে। অপরাধের সঙ্গে সঙ্গে অপরাধীকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং দৃশ্যমান শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে যেভাবে মহামারির মতো ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে এটা বন্ধ করা যাবে না। মহামারি আসলে যেমন জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয় ঠিক তেমনি এখন ধর্ষণ বন্ধে বিদ্যমান আইনের বাইরে জরুরি কিছু করা দরকার। এর বাইরে এই অপরাধের শাস্তি আরো বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন তিনি।

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, প্রথমত ধর্ষণ বাড়ছে ধর্ষকের শাস্তি না হওয়াতে। শাস্তি না হওয়ার কারণ হলো তাদের পেছনে ক্ষমতাধর লোক আছে। দ্বিতীয়ত, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারী পুরুষের স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপন হয় না। তারা জানে না নারীর সঙ্গে কি ধরনের সম্পর্ক থাকা উচিত। নানা ভাবে নারীকে নিপীড়ন করে। এটা নিপীড়নেরই একটা অংশ। তাই শিশু ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটছে। তৃতীয়ত, সমাজের মানুষের নির্মমতা চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এখানে কারো সহমর্মিতা, সহানুভূতি, সংবেদশীলতা কমে গেছে। তিনি বলেন, এগুলো কোনো যুক্তিগত সমস্যা বা ব্যত্তিগত সমস্যা না এটা সামাজিক সমস্যা। সমাজ না বদলালে ধর্ষণ বন্ধ হবে না। এর বাইরে অপরাধীকে শাস্তি দিতে হবে। শুধু আইন থাকলে হবে না। আইনের প্রয়োগ করতে হবে। অপরাধীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেন, ধর্ষণের ঘটনা আগেও ছিল এখনও আছে। থানায় মামলা বা সংবাদ মাধ্যমে আসে বলে একটা পরিসংখ্যান থেকে আমরা জানতে পারি ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে। কিন্তু বাস্তবে কতগুলো ঘটনা ঘটেছে তার কোনো পরিসংখ্যান কারো কাছে নেই। কয়েক বছর আগেও যেখানে এত খবর আসত না। ধর্ষণের ঘটনা কতটা চেপে যায় তার কোনো পরিসংখ্যান আমাদের কারো জানা নাই। কারণ বেশির ভাগই দরিদ্র, নিম্নবিত্ত নারীরা ধর্ষণের শিকার হয়। আর এদেশে বহু বছর ধরে নিম্নবিত্তদের ওপর করা অপরাধের কোনো বিচার হয় না। ধর্ষণের বিদ্যমান আইন ও শাস্তি নিয়ে শাহদীন মালিক বলেন, শাস্তি বাড়ালে অপরাধী দোষী সাব্যস্ত হওয়ার রেটিং কমে যায়। এটা সারা বিশ্বে গত ৩০০ বছর ধরে স্বীকৃত। শাস্তি বাড়ায় অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে যায়। তিনি বলেন, শাস্তি বাড়ানো কোনো সমাধান নয়। নারী ও শিশু আইন হওয়ার আগে ধর্ষণের শাস্তি ছিল ১০ বছর। কিন্তু একই অপরাধে শাস্তি বাড়ানোর পরে গত ১০/২০ বছরে কোটি মানুষের বসবাসের ঢাকার ৬টি নারী শিশু আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার নজির কম। ধর্ষণের ঘটনা বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, সমাধানটা আমাদের সবারই জানা আছে। শুধু প্রয়োগটাই দরকার।

মানবাধিকার আইনজীবী সালমা আলী বলেন, ধর্ষণের ঘটনাগুলোর পেছনে বেশ কিছু শক্তি কাজ করে। রাজনৈতিক শক্তির পাশাপাশি টাকা পয়সার প্রভাব, পেশি শক্তি, পরিবারের বড় সন্তান হওয়াতে বেপরোয়া ভাব। এই শক্তিগুলো থাকার কারণে ধর্ষক ধর্ষণের মতো কাজে সাহস পায়। এর বাইরে ইন্টারনেট, পর্নোগ্রাফি ভিডিও নেতিবাচক প্রভাব আছে। কিন্তু অপরাধীরা দেখে না দেশে আইন আছে, অপরাধ করলে শাস্তি হয়। সালমা আলী বলেন, আইন করা হয় অপরাধীকে শাস্তি দেয়ার জন্য। অপরাধীরা যাতে শাস্তি পায় এবং অন্যরা দেখে যেন অপরাধ করতে ভয় পায়। কিন্তু আমাদের দেশে ধর্ষণের ঘটনায় এক শতাংশ অপরাধীকে শাস্তির আওতায় আনা যাচ্ছে না। পাশাপাশি জবাবদিহিতা না থাকার একটা প্রবণতা আছে। পহেলা বৈশাখ, ৭ই মার্চের মতো বিশেষ দিনে রাস্তায় নারীর ওড়না ধরে টানাটানি করে যৌন হয়রানি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে তার সত্যতা পাওয়া গেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অপরাধীকে আটক করা হয়নি। তাই অপরাধীরা বারবারই পার পেয়ে যাচ্ছে। অপরাধের মাত্রাও আরো বাড়ছে। আর অপরাধীরা মনে করছে অপরাধ করলে কিছু হয় না। তিনি বলেন, ধর্ষণের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গণতন্ত্র যত বেশি শক্তিশালী হবে অপরাধ ততবেশি কমে যাবে। তবে চারটি কাজ করলে ধর্ষণের মতো ঘটনা কমে যাবে বলে মনে করেন এই মানবাধিকার আইনজীবী। তিনি বলেছেন, কমিটমেন্ট থাকতে হবে পরিবারের সঙ্গে সন্তানের এবং একটা দায়িত্ববোধ থাকা জরুরি। আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা থাকতে হবে। এর বাইরে নারী ও তার পরিবারকে আরো সাহসী হতে হবে। সর্বোপরি দ্রুত বিচারের মাধ্যমে অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

আইনজীবী এলিনা খান বলেন, বিদ্যমান আইন যথেষ্ট কঠোর। কিন্তু তার প্রয়োগ হচ্ছে না। বলা হয়েছে ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত ও ১৮০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে হবে। সবকিছুতেই সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় চাঞ্চল্যকর মামলা হলে পুলিশের তৎপরতা দেখা যায়। পরে আগের মতই হয়ে যায়। তাছাড়া সঠিকভাবে অনেক মামলার তদন্ত হয় না। তদন্তের জন্য অনেক মামলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই তদন্তের ক্ষেত্রে যে সমস্যা হচ্ছে এগুলো যদি দূর করা যায় আর বিচার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে যে সময় বেঁধে দেয়া আছে তার ভেতরে বিচার শেষ করতে হবে। তাহলে মানুষের কাছে এক ধরনের গ্রহণযোগ্যতা আসবে। যখনই মানুষের মধ্যে ভীতি সঞ্চার হবে সচেতনতা আসবে তখনই এ ধরনের ঘটনা বন্ধ হবে। এলিনা খান বলেন, শুধুমাত্র আইন দিয়ে ধর্ষণ বন্ধ করা সম্ভব নয়। মূল্যবোধ ফিরিয়ে আনতে হবে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি এ ধরনের ঘটনায় অর্থনৈতিক,  রাজনৈতিক ও অন্যভাবে যারা প্রভাব খাটাচ্ছে তাদের যেকোনোভাবে প্রতিহত করতে হবে। পুলিশের সাবেক মহাপরিচালক নুর মোহাম্মদ বলেন, যখন একটা মেয়ে ধর্ষিত হয় তখন একটা বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আবার ধর্ষণের পরে সংশ্লিষ্টতা ২/১ জনের থাকলে ধরে নিয়ে আসা হয় ৪/৫ জনকে। আমাদের দেশে এখনও খোলা মন নিয়ে পরিচ্ছন্ন হৃদয়ে আদালতে যাওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। আর এরকম সুযোগে কিছু লোক বিভিন্ন প্রভাবে একটা সুবিধা নেয়। একারণেই মামলার শুরুটাই অনেক কঠিন হয়ে পড়ে এবং দীর্ঘসূত্রতার সৃষ্টি হয়। আর মামলাটি যতদিন যাবে মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সাক্ষী প্রমাণ পাওয়া যাবে না। এ ছাড়া বিভিন্ন আলামত নষ্ট হয়ে যায়। সাবেক এই আইজি মনে করেন যে আইন আছে সেটা যথেষ্ট। এর যথাযথ প্রয়োগ দরকার। কারণ মামলা নিষ্পত্তিতে অনেক সময় লেগে যায়। সিভিল আইনে থানা থেকে শুরু করে আদালত পর্যন্ত একটি মামলায় কেটে যায় অনেক বছর। এজন্য মামলা দ্রুত তদন্ত করতে হবে। যারা মামলা তদন্ত করবে তাদের তদারকিটা গভীরভাবে করতে হবে। তদন্তে যেন কোনো গাফিলতি না থাকে। এর বাইরে তদন্তে দীর্ঘসূত্রতার ক্ষেত্রে যারা জড়িত তাদের জবাবদিহিতার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি মানুষকে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সবাই মিলে স্কুল, কলেজ মাদরাসায় গিয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ সকলেই কাজ করতে পারে।

ব্যরিস্টার সারা হোসেন এ বিষয়ে বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় আমরা বিচার চাইতে পারি। কিন্তু আইনটা একটু ভালোভাবে দেখা দরকার। কারণ আমাদের আইনটা সেই বৃটিশ আমলের। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আইনে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে। আমরা কেন তেমন পরিবর্তন আনতে পারিনি। ২০০০ সালে কিছু পরিবর্তন আনা গেলেও মূল সংজ্ঞাটা প্রায় একই রয়ে গেছে। সেখানে কিছু পরিবর্তন আনা দরকার। বিভিন্ন ধরনের যৌন হয়রানির ঘটনায়ও আমাদের আইনে প্রতিকার চাওয়ার ব্যবস্থা থাকা দরকার। এ ছাড়া ধর্ষণ প্রমাণের যে সাক্ষ্য আইন সেটাও ১৮৬০ সালের বৃটিশ আমলের। সেখানে বলা আছে কেউ যদি ধর্ষিত হয় আর সাক্ষী দেয় সেখানে তার ব্যক্তিগত ইতিহাস, চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে। অথচ অন্য কোনো অপরাধের ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের তার ব্যক্তিগত ইতিহাস নিয়ে জেরা করা হয় না। এ জন্য আইনটি পর্যালোচনা করার দরকার আছে। পাশাপাশি সাক্ষীদের এবং ভুক্তভোগীর কিছু সুরক্ষার ব্যবস্থা রাখা দরকার।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) নির্বাহী পরিচালক শিপা হাফিজা বলেন, শুধু আইন দিয়ে কিছু করা যাবে বলে মনে হচ্ছে না। আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর নিরাপদ একটা সমাজ তৈরি করার যে মনমানসিকতা সেটা নাই। নারীদের সঙ্গে সব রকম সহিংসতা বেড়েছে। এর বিভিন্ন রকম কারণ  আছে। যদিও আমরা দেখেছি ইতিমধ্যে টেলিফোনে হেল্প লাইনে একজন ভুক্তোভোগী ধর্ষণ সংক্রান্ত বিষয়ে সাহায্য চেয়ে ফোন করলে টেলিফোনের অপর প্রান্ত থেকে জানানো হয় যে এটাতো আমাদের বিষয় না। তার মানে আমাদের যারা রক্ষাকর্তা তাদের বুঝাপড়ায় অনেক গলদ রয়েছে।সুত্রঃ mzamin






আরো খবর