মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আওয়ামী লীগ দলীয় রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারা শহীদ বেদীতে জুতা পায়ে উঠেন। এর কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়।
জানা গেছে, জাতীয় গণহত্যা দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রোববার সন্ধ্যায় পুঠিয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। সভা শেষে মিলনায়তনের সামনের অভিবাদন মঞ্চে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। সন্ধ্যায় সে মঞ্চেই প্রথমে জুতা পায়ে উঠে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেন সংসদ সদস্য দারা।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেম বলেন, ‘মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের উদ্দেশ্যে- শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। শুধু শহীদ মিনারই নয়, যে স্থানটিকে বেছে নিয়ে আমরা শ্রদ্ধা জানাব, অনুভব করতে হবে সেটি পবিত্র স্থান। সে পবিত্র জায়গায় জুতা পায়ে রেখে শ্রদ্ধা জানানো হয় না। আমি মনে করি, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা খালি পায়েই জানানো উচিত।’
দারার জুতা পায়ে ওই মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের কয়েকটি ছবি তার অনুসারীরাই ফেসবুকে আপলোড করেছেন। এসব ছবি সংসদ সদস্যকে ট্যাগও করা হয়েছে। সেই ছবিগুলোর নিচে শেখ নাজমুল হক নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘জুতা পায়ে কিসের কী দাদা ভাই?’
সিজার মাহমুদ জুন লিখেছেন, ‘এমপি সাহেব জুতা পায়ে কী করে?’
অন্য একজনের আপলোড করা এই ছবিতে রাজশাহী থিয়েটারের সভাপতি কামার উল্লাহ সরকার কামার মন্তব্য করেন, ‘এর চেয়ে লজ্জার আর কি হতে পারে?’
ইতি রহমান নামে একজন লিখেছেন, ‘ছি, জুতা পরে শহীদের শ্রদ্ধা?’
মুকাদ্দেশ ইউ আহমেদ লিখেছেন, ‘এটা বিনম্রর লোক দেখানো শ্রদ্ধা। আত্মীক শ্রদ্ধা নহে!’
এ বিষয়ে সোমবার সকালে সংসদ সদস্য কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারার মুঠোফোনে ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘মোমবাতি প্রজ্জ্বলনে কোনো সরকারি কর্মসূচি ছিল না। কিন্তু শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আলোচনা সভা শেষে ওই কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছিল। এ জন্য উপজেলা পরিষদ চত্বরের অভিবাদন মঞ্চকে বেছে নেয়া হয়েছিল।’
তবে উপজেলা পরিষদ চত্বরে একটি শহীদ মিনারও আছে। সেটি বাদ দিয়ে অভিবাদন মঞ্চে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা নিয়েও চলছে সমালোচনা।
এ প্রসঙ্গে ইউএনও বলেন, ‘অভিবাদন মঞ্চটি মিলনায়তনের সামনেই। তাই সৌন্দর্যের কথা ভেবে সেখানে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়েছিল।’