বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান, ১৪৪৫ | ১১:৫০ পূর্বাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


শুক্রবার, ০৮ জুন ২০১৮ ০২:২৮:৩৭ অপরাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

নীলফামারীর গ্রামাঞ্চলে নেই ঈদের আনন্দ

ঈদ খুবই নিকটে তবে এখনো জমে ওঠেনি নীলফামারীতে ঈদের বাজার। ঈদ যতই সামনে ঘনিয়ে আসছে ততটাই বাজারে ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাজারের মূল ক্রেতা এখন শহুরে বাঙ্গালী আর খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষজন। গ্রামের ৮০ শতাংশ কৃষক পরিবারের মাঝে নেই কোন ঈদ আনন্দ। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্রমাগত ফসল আবাদের লোকসানের জন্য ঋণগ্রস্ত হবার কারণে আজ ঈদের আনন্দ তাদেরকে ছুয়ে যেতে পারছে না। চলতি মৌসুমে ধান সহ অন্যান্য কৃষি পণ্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধংস হয়ে যাওয়া ও কম মূল্যর কারণে কৃষকের উৎপাদন খরচ না উঠায় তারা পরবর্তী ফসলের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সে ফসল উৎপাদনের খরচ মেটাতে তাদের নাভিশ্বাস। এ কারণেই ঈদ নেই জেলার ভূ-সম্পত্তির মালিক কৃষক পরিবারের মাঝে। তবে ঈদের বাজারের অধিকাংশ ক্রেতা শহুরে বাঙ্গালী, চাকুরে আর খেটে খাওয়া তথা দিন আনে দিন খায় এমন নিম্ন আয়ের মানুষজন। বাজারের উর্ধ্বমূল্যর কারণে গ্রামাঞ্চলের ক্রেতা সাধারণ তাদের সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটিয়ে কেনাকাটা করতে পারছেন না। জেলার বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, দোকানগুলোতে থরে থরে সাজানো বিদেশী পোষাক। আর এ পোষাকগুলোতেও রয়েছে ভারতীয় সিরিয়ালের আগ্রাসন। ক্রেতা টানতে ব্যাবসায়ীরা পাশাপাশি লাকী কুপনের আয়োজন করেছে। বরাবরের মতো দোকানগুলোতে এবারো শিশু ও মেয়েদের পোশাকে ভারতীয় ছাপ বেশী লক্ষ্য করা গেছে। এগুলোর চাহিদাও অনেক। এসব পোষাকের বেশিরভাগ ক্রেতাই শহুরে বাঙ্গালী আর খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের লোকজন। গতবারের তুলনায় এবার দাম বেড়েছে ব্রান্ডের, মান নয় ভারতীয় সিরিয়ালের নাম বুঝে ৬০ হতে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত। মার্কেটগুলোতে দেশীয় পোশাকের চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। এসব দেশীয় পোষাকের ৮০ হতে ৯০ শতাংশ ক্রেতা হলেন, গ্রামের সাধারণ ও অভিজাত কৃষক পরিবারগুলো এবং সেই সাথে শহরের গুটি কয়েক ক্রেতা। তবে দেশী পোষাকের চাহিদা থাকলেও জেলায় চলছে ভারতীয় পণ্যের রমরমা ব্যবসা। বেশ কয়েকটি মার্কেট ঘুরেই এমন চিত্র দেখা যায়। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে আধুনিক সব ভারতীয় পোষাকের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। তবে ব্যাবসায়ীদের দাবি, বিদেশী তথা ভারতীয় পোষাকের ভিড়েও দিন দিন বাড়ছে দেশীয় পোষাকের চাহিদা। দেশী পোষাকের ক্রেতাদের দাবি, দেশীয় পোশাকের গুণগত মান ভিনদেশী তথা ভারতীয় পোশাক অপেক্ষা অনেক উন্নত বলে মনে করেন তারা। অনেকে দেশীয় পোষাকের ক্রেতারা মনে করেন, দেশীয় পোশাক পড়ে তারা নিজেকে ধন্য মনে করছেন। ভারতীয় পোষাক পরে বাংলাদেশী হওয়া যায় না। দেশের অনেক নামি দামী পোষাক নির্মাতারা এখনও দেশীয় ঐতিহ্য আকড়ে ধরে নতুন নতুন পোশাক বাজারজাত করছেন যা জেলার দুএকটি মার্কেটে এখনও পাওয়া যাচ্ছে। বিদেশী তথা ভারতীয় পোষাকের এ আগ্রাসনের কারণ হিসাবে ব্যাবসায়ী ও ক্রেতাদের বলেন, মানুষজন খুব দ্রুত আধুনিক হয়ে উঠছে এবং সেই সাথে দেশীয় সংস্কৃতিতে ভারতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন প্রধান নিয়ামক হিসাবে কাজ করছে। যে সকল বাড়িতে ভারতীয় সিরিয়ালের আসক্তি রয়েছে সেই সব পরিবারে বিভিন্ন সিরিয়ালের নামের পোষাক তারা কিনছেন। এ কারনেই ভারতীয় সিরিয়ালের নামে নামকরণ করা পোষাকের ক্রেতার সংখ্যাই বেশী। তাই বিক্রেতারা এসব পোশাক বিভিন্ন নামে বিক্রি করছেন। যেখানে ভারতীয় ও বিদেশী পোষাকের চেয়ে দেশীয় পোষাক উন্নত সে সবের বালাই নেই এ সকল ক্রেতাদের মাঝে। তাদের কাছে ভারতীয় সিরিয়ালের নামের পোষাকেই প্রধান মূখ্য বিষয়। তাছাড়া এ দেশীয় এক শ্রেণীর ব্যাবসায়ীরা এখন নানা কারণে দেশীয় পণ্য উৎপাদনে আগ্রহ হারিয়ে অধিক লাভের আশায় বিদেশী পণ্যের এজেন্ট হয়ে কমিশন বাণিজ্যে মনোযোগী হয়েছেন। এ কারণে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের দেশীয় পোষাক। আর এ কারনে ইচ্ছা থাকলেও অনেকে বাজারে দেশীয় পোষাকের অভাবের কারণে কিনতে পারছে না দেশীয় পোষাক। তাই তারা নিরূপায় হয়ে বিদেশী পোষাক পড়ছেন।





আরো খবর