বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল, ১৪৪৫ | ০২:০৮ অপরাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:১৫:২১ পূর্বাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

জোটের শরিকসহ ১৫০ আসনে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বিএনপি

ঢাকা: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আসনভিক্তিক প্রার্থী বাছাইয়ে প্রায় ১৫০ আসনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোটের একক প্রার্থী চূড়ান্ত হয়েছে। এ ছাড়া বাকি ১৫০ আসনের প্রতিটিতে ৩ জন করে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম বিবেচনায় রয়েছে। বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, জোটের শরিকদের জন্য বরাদ্ধকৃত আসনও অনেকটাই চূড়ান্ত। আগামীর প্রার্থীদের মধ্যে বিএনপির ৫০৬ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্থায়ী কমিটি সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, যুগ্ম মহাসচিব ও নির্বাহী কমিটির সদস্যদের নাম রয়েছে। লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় সেখানে অবস্থানরত বেশ কয়েকজন প্রার্থী তালিকা অনেকটাই গুছিয়ে এনেছেন। দলের চেয়ারপারসনের সঙ্গে এ নিয়ে ঢাকা-লন্ডন দফায় দফায় আলোচনা হচ্ছে বলেও জানা গেছে। তবে শেষ মুহূর্তে ভোটার সংখ্যা বিবেচনায় নির্বাচন কমিশন নতুন করে আসন বিন্যাস করলে প্রার্থী তালিকায় কিছুটা পরিবর্তন আনা হতে পারে বলেও জানা গেছে। এরইমধ্যে চূড়ান্ত হওয়া প্রার্থীরা নির্বাচনের আবহ তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দলের হাই কমান্ড থেকে সবুজ সংকেত পাবেন। তবে শারীরিক অসুস্থতা এবং আইনি জটিলতায় যদি শেষ মুহূর্তে কেউ করতে না পারেন সেজন্য সব আসনেই বিকল্প প্রার্থীর নাম বিবেচনায় রাখা হয়েছে। ২০ দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে জামায়াত ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ১০ এবং বাকি ১৮ দলকে ১০-১২টি আসন দেয়ার ব্যাপারে আলোচনা অনেকটাই চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে। লন্ডনে অবস্থানরত ছাত্রদলের একজন সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা এবং দলের একাধিক নীতিনির্ধারকের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। অপর একটি সূত্র মতে, এবার ঢাকার বেশ কয়েকটি আসনে বিএনপির পুরনো প্রার্থী বদলের আভাস রয়েছে। দলে নিষ্ক্রিয়রা আগামীতে মনোনয়ন পাবেন না এমন খবর রয়েছে তৃণমূলে। বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই। লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান সাজাপ্রাপ্ত আসামি। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবারো ফেনীর একটিসহ ৫টি আসনে প্রার্থী হবেন। তিনি সিলেট-১ আসনেও প্রতিযোগীতা করতে পারেন। তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান সিলেটে এবং প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান ফরিদপুরের একটি আসনে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হবেন এমন ভাবনা রয়েছে দলের হাই কমান্ডে। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, তরিকুল ইসলাম, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস (ঢাকা-৯), গয়েশ্বর চন্দ্র রায় (ঢাকা-৩), ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহ উদ্দিন আহমেদ এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিজ নিজ এলাকায় মনোনয়ন অনেকটাই চূড়ান্ত। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিঞার মনোনয়ন নিয়ে জটিলতা রয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের ৭৩ উপদেষ্টার মধ্যে উকিল আবদুস সাত্তার, তাহমিনা রুশদি লুনা (সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াছ আলীর স্ত্রী), ফজলুর রহমান (কিশোরগঞ্জ), ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান খান (ঢাকা-২০), আমান উল্লাহ আমান (ঢাকা-২), মিজানুর রহমান মিনু, জয়নাল আবেদীন ভি পি, আফরোজা খান রীতা (মানিকগঞ্জের হরিরামপুর), আবুল খায়ের ভুঁইয়া, মেজর (অব.) কামরুল ইসলাম, জয়নুল আবদিন ফারুক ও অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের মনোনয়ন নিয়ে জটিলতা নেই বলে জানা গেছে। জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল নোমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বরকত উল্লাহ বুলু, ড. ওসমান ফারুক, আবদুল মান্নান ও গিয়াস কাদের চৌধুরীর মনোনয়ন অনেকটাই নিশ্চিত। এ ছাড়া সিনিয়ির যুগ্ম মহাসচিব (দপ্তরের দায়িত্বে) অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন ও হাবিব উন নবী খান সোহেল, কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান সিনহা, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, নজরুল ইসলাম মঞ্জু, আসাদুল হাবিব দুলু ও শামা ওবায়েদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আন্তর্জাতিক সম্পাদক এহসানুল হক মিলন, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, পল্লী উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক এ্যাড গৌতম চক্রবর্তী, সহশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, সহশ্রমিকবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান (বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা চৌধুরী তানভীর আহম্মেদ সিদ্দিকী দলত্যাগ করায় গাজীপুরের কালিয়াকৈর), সহউপজাতিবিষয়ক সম্পাদক কর্নেল (অব.) মনিষ দেওয়ান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আলী আজগর লবি, সহপরিবার কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা জেলা কমিটির সভাপতি ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু (ঢাকা-১৯), নির্বাহী কমিটির সদস্য রশিদুজ্জামান মিল্লাতের মনোনয়ন অনেকটাই চূড়ান্ত বলে জানা গেছে। অন্যদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় পাবনা-১, ফরিদপুর-৩ এবং শেরপুর-১ আসনে জামায়াতকে আর ছাড় দিতে হবে না বলে মনে করে বিএনপি। অন্যদিকে একই মামলায় মাওলানা আবদুস সোবহান ও এ টি এম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায় হওয়ায় পাবনা-৫ ও রংপুর-২ নিয়ে বিএনপির ভাবনা কমেছে। দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ড হওয়ায় পিরোজপুর-১ আসনটি নিয়ে জটিলতা কমলেও তার পুত্র উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদীকে মনোনয়ন দেয়া হতে পার বলে বিএনপিতে আলোচনা আছে। তবে ওই আসন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দারকেও ছেড়ে দেয়া হতে পারে। কুমিল্লা-১১ আসনে মরহুম কাজী জাফর আহমদের মেয়ে জয়া কাজী, মৌলভীবাজার-২ আসনে নওয়াব আলী আব্বাস এবং সাতক্ষীরা-৪ আসনে এ এইচ এম গোলাম রেজার নাম আলোচনায় রয়েছে। কক্সবাজার-২ আসনে জামায়াতের এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ ও চট্টগ্রাম-১৪ আসনে আ ন ম শামসুল ইসলামকে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী করা হতে পারে। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে যারা দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন এমন কয়েকজনকেও ছাড় দেয়ার চিন্তা আছে বিএনপিতে। তখনকার ফলাফলে জামায়াত দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল এমন ৩২টি আসনের মধ্যে আছে ঠাকুরগাঁও-২, দিনাজপুর-১ ও ৬, নীলফামারী-২ ও ৩, লালমনিরহাট-১, রংপুর-১ ও ২, গাইবান্ধা-১, ৩ ও ৪, সিরাজগঞ্জ-৪, পাবনা-১ ও ৫, চুয়াডাঙ্গা-২, ঝিনাইদহ-৩, যশোর-১ ও ২, বাগেরহাট-৩ ও ৪, খুলনা-৫ ও ৬,সাতক্ষীরা-২, ৩ ও ৪, পিরোজপুর-১, শেরপুর-১, সিলেট-৫ ও ৬, কুমিল্লা-১১, কক্সবাজার-২ ও চট্টগ্রাম-১৪। অন্যদিকে বাকি ১৮ দলকে ১০ থেকে ১২টি আসন ছেড়ে দেয়ার কথা ভাবছে বিএনপি। দলটির নেতাদের মতে, অলি আহমদের লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ৩টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি সর্বোচ্চ দুটি, বিজেপি দুটি, জাগপা একটি, জমিয়তে ওলামা ইসলাম একটি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) একটি ও মুসলিম লীগ একটি আসনে ছাড় পেতে পারে। বাকি বেশির ভাগ দলের নিবন্ধন নেই, নেতাদের আসনও নেই। এরমধ্যে চট্টগ্রাম-১৩ আসনে অলি আহমদ, কুমিল্লা-৭ আসনে দলটির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ এবং লক্ষীপুর-১ আসনে এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমের মনোনয়ন অনেকটা নিশ্চিত। এ ছাড়া প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল করিম আব্বাসীর জন্য নেত্রকোনা-১, আবদুল গণির জন্য মেহেরপুর-২ ও আবু ইউসুফ খলিলুর রহমানের জন্য জয়পুরহাট-২ আসনে মনোনয়ন চাইবে এলডিপি। বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ ভোলা-১ এবং জমিয়তে ওলামা ইসলামের চেয়ারম্যান মুফতি মোহম্মদ ওয়াক্কাস যশোর-৫ আসন থেকে জোটের প্রার্থী হতে পারেন। দিনাজপুর-৩ আসন থেকে মনোনয়ন পেতে পারেন সদ্য মরহুম জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের স্ত্রী রেহানা প্রধান। কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমানের জন্য পাবনা-১ এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক ইকবাল হাসান মাহমুদের জন্য নারায়ণগঞ্জ-২ আসন জোট নেত্রীর কাছে চাইবে দলটি। বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি নীলফামারী-১, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি এ এইচ এম কামরুজ্জামান কিশোরগঞ্জ-৫ এবং বাংলাদেশ লেবার পার্টির সভাপতি ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান পিরোজপুর-২ আসনে জোটের প্রার্থী হতে চান।





আরো খবর