শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল, ১৪৪৫ | ০১:০১ পূর্বাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


রোববার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:২০:৩৬ অপরাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

সিনহার বিরুদ্ধে অভিযোগ দুদক তদন্ত করছে: আইনমন্ত্রী

প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে দুদক তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের আদালত প্রাঙ্গণে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী কমিটির অভিষেক ও ডিজিটাল বার ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এ কথা জানান। আইনমন্ত্রী বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার দুর্নীতি বিষয়ে আরেকটি প্রশ্ন আসতে পারে? একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতি অভিযোগ থাকার পরেও কেন এখন পর্যন্ত মামলা হয় নাই। আমরা সব সময়ে বলে এসেছি আইন সকলের ঊর্ধ্বে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন সেটা খতিয়ে দেখছে এবং তদন্ত করছে। তারা যখন তার বিরুদ্ধে মামলা করবেন তখনই মামলা হবে। সেখানে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আরও জানান, প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা দুর্নীতিবাজ বলে আপিল বিভাগের সহযোগী বিচারকরা তার সাথে বসে বিচার কাজ পরিচালনা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। সেই কারণে উনারা যখন তার সাথে বিচার কাজে বসতে বারবার অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন, তখন অন্য কোনো উপায় না দেখে এসকে সিনহা পদত্যাগ করেছেন। সাবেক প্রধান বিচারপতি সিনহার লেখা বই 'এ ব্রোকেন ড্রিম' গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্বখ্যাত অনলাইন মার্কেট অ্যামাজনে প্রকাশিত হয়েছে। ওই বইতে তিনি পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পরিস্থিতিসহ নানা বিষয়ে খোলামেলা বর্ণনা দিয়েছেন। সেখানে এসকে সিনহা লিখেছেন, “দেশের বাইরে আসার পর আমি আমার স্ত্রী ছাড়া কারো সাথে কথা বলতে পারতাম না, কারণ হয়রানির ভয়ে আমার কোনো কর্মকর্তা কিংবা শুভাকাঙ্ক্ষীও আমার ফোন রিসিভ করছিলেন না।” “ডিজিএফআই কর্মকর্তারা অব্যাহতভাবে তাদেরকে হুমকি দিচ্ছিলেন। আমার সব ফোনই তারা মনিটর করছিলেন।” ব্যবসায়ী ও বেলেরুশ অনারারি কনসাল অনিরুদ্ধ রায় ঢাকা থেকে গুম হন ২০১৭ সালের ২৭ আগস্ট। ৮১ দিন নিখোঁজ থাকার পর বাড়ি ফেরেন ১৭ নভেম্বর। সেই প্রসঙ্গে সিনহা লেখেন, নিখোঁজের দুদিন পর অনিরুদ্ধর স্ত্রী তার বাসায় এসে জানান যে, সরকারের মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ তাকে জানিয়েছেন, অনিরুদ্ধ সরকারের জিম্মায় রয়েছেন। “এর মানে এটা জানা কথা যে, সে ডিজিএফআইর হেফাজতে রয়েছে।” সিনহা জানান, পরবর্তীতে লে. কর্নেল নাজিমুদ্দৌলা অনিরুদ্ধ তাদের জিম্মায় থাকার বিষয়টি তাকে নিশ্চিত করেন। নভেম্বরের ১০ তারিখ সাবেক প্রধান বিচারপতি অস্ট্রেলিয়া থেকে কানাডা যাবার পথে সিঙ্গাপুরে যাত্রাবিরতি করেন। ওই সময় রাত আড়াইটার দিকে তার হোটেল কক্ষে লে. কর্নেল নাজিমুদ্দৌলা দেখা করে অনিরুদ্ধ সম্পর্কে তাকে জানান, “স্যার ডিজিএফআই তাকে ছেড়ে দিয়েছে।” “তিনি আমাকে এও জানান যে, আমি যদি পদত্যাগ না করি, তবে ডিজিএফআই এবং অসৎ লোকেরা আবারো অনিরুদ্ধকে তুলে নিয়ে যাবে।” “আমি তাকে জানাই, আমি আমার স্ত্রী আর মেয়েদের সাথে কথা না বলে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারব না।” এছাড়া তিনি কানাডায় গিয়ে সিদ্ধান্ত নেবার কথা বললেও ডিজিএফআইর লে. কর্নেল নাজিমুদ্দৌলা রাজি হন না। ততক্ষণে ভোর পাঁচটা হয়ে গেছে এবং তার কানাডার ফ্লাইট ছিল সকাল আটটায়। নাজিমুদ্দৌলা তাকে জানান, সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে এয়ারপোর্ট পৌঁছে গেছেন। এই পরিস্থিতিতে বিচারপতি সিনহা অস্ট্রেলিয়া থেকে লিখে নিয়ে আসা পদত্যাগপত্রটি হস্তান্তর করলে নাজিমুদ্দৌলা সেটি ফোনে উচ্চপদস্থ কাউকে পড়ে শোনান। এরপর ফোনের অন্যপাশ থেকে পদত্যাগপত্রের কয়েকটি ভাষা পরিবর্তনের পরামর্শ আসলে সিনহা তা করতে অস্বীকৃতি জানান। এরই মধ্যে নাজিমুদ্দৌলা অনিরুদ্ধর সাথে কথা বলার জন্য তাকে ফোন ধরিয়ে দেন। “আমি অনিরুদ্ধর গলা শুনতে পাই, সে আমাকে বলে, স্যার আমার প্রতিবন্ধী ছেলেটার মুখ খেয়াল করে অফিসারের কথামতো পদত্যাগপত্রটি স্বাক্ষর করেন।” এরপর সংশোধিত পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা। আইনমন্ত্রীর দাবি, পদত্যাগের প্রায় ১ বছর পর এসকে সিনহা এই নতুন গল্প সৃষ্টি করেছেন। এটা একজন পরাজিত ব্যক্তির হা-হুতাশ বলে মনে করি। নির্বাচন হবে না বলে কেউ কেউ অপপ্রচার করলেও সংবিধান অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বর মাসে নির্ধারিত সময়েই জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলেও এ সময় সাংবাদিকদের বলেন আনিসুল হক। বিএনপিকে এই নির্বাচনের অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণ যাকে ভোট দিবে সেই ক্ষমতায় আসবে।





আরো খবর