জাতীয় / গুম-খুন-ধর্ষণের কঠোর শাস্তি না হলে মুখ ফিরিয়ে নেবে জনগণ: সংসদে মেনন
সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ ০২:৩৮:৪৯ অপরাহ্ন
গুম-খুন-ধর্ষণের কঠোর শাস্তি না হলে মুখ ফিরিয়ে নেবে জনগণ: সংসদে মেনন
সরকারের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে এ সুবাতাস টিকে নাই। এবারের প্রশ্ন ফাঁসের মহামারী কেবল পরীক্ষার্থী নয়, তাদের অভিভাবকদেরও সরকার সম্পর্কে বিরূপ ধারণার জন্ম দিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ দায়িত্ব নিতে রাজি নয়। জিপিএ-৫ পেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে না শিক্ষার্থীরা।
মেনন বলেন, এটা নির্বাচনের বছর। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি, গ্যাস সংকট, পানি সংকট এসব দৈনন্দিন বিষয় মানুষকে আলোড়িত করে। আতঙ্কিত করে খুন, ধর্ষণ, গুমের ঘটনাবলি। মানুষ বিরক্ত হয় দলবাজি, দখলবাজি, অন্তর্দলীয় কোন্দলে। এক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা না নেয়া গেলে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নেবে। ভারতে অটল বিহারী বাজপেয়ীর সাইনিং ইন্ডিয়া এসব ইস্যুতে মুখ থুবড়ে পড়েছিল।
সোমবার জাতীয় সংসদের রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে মন্ত্রী একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু দুভার্গ্যজনক ঘটনা আমাদের সব অর্জনকেই ধূলিসাৎ করে দিচ্ছে। ২০১০ সালে আমরা অত্যন্ত সাফল্যজনকভাবে জাতীয় শিক্ষানীতি গ্রহণ করি। এ সরকারের প্রথম থেকেই বছরের প্রথম দিন বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের বই দেয়া হচ্ছে, যার সংখ্যা এবার দাঁড়িয়েছে ৩৫ কোটি। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকে উপবৃত্তি ছাড়াও উচ্চতর শিক্ষা, গবেষণার জন্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। দেশে বিপুল সংখ্যক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। যে সব উপজেলায় কোনো সরকারি ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ নাই সে সব জেলায় একটি করে স্কুল ও কলেজকে সরকারি করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর মতোই তার কন্যা ২৬ হাজার ১৯৩টি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছেন।
তিনি বলেন, মাদরাসা শিক্ষার আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। এমনকি কওমি মাদরাসার স্বীকৃতির পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। কিন্তু সেসব প্রতিষ্ঠানে কী শিক্ষা দেয়া হচ্ছে, তা কারও বিশেষ অজানা নয়। আমার সাবেক ড্রাইভারের ভাইকে আমার কাছে পাঠিয়েছে কর্মসংস্থানের জন্য। মাদরাসায় পড়েছে। কিন্তু জিজ্ঞাসা করতে জানলাম নামাজের নিয়মকানুন দূরে থাক, সুরা ফাতেহাও সে জানে না।
মন্ত্রী বলেন, এমনিতেই এ বহুমুখী শিক্ষা আমাদের সমাজ সংস্কৃতিকে বিভক্ত করছে, তার ওপর যা তৈরি করা হচ্ছে তাতে তারা হয় মাদকাসক্ত অথবা জঙ্গিবাদীতে পরিণত হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষার পাশাপাশি ব্যাংকিং খাতের নৈরাজ্য চূড়ান্ত। খেলাপি ঋণ বাড়ছেই। সরকারকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মূলধন জোগাতে হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির টাকা ফিরে পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে কিনা আমি জানি না। প্রতিনিয়ত বিদেশে অর্থ পাচার হচ্ছে। এ পাচারকৃত অর্থ বাংলাদেশের কয়েকটি বাজেট হতে পারে।
‘জনগণ আশা করে দুদক ব্যাংক লুট, জালিয়াতি, অর্থ পাচার এসব ক্ষেত্রে দুর্নীতির তদন্ত করবে, আইনের আওতায় আনবে। পাকিস্তান যদি পানামা পেপারস-প্যারাডাইস পেপারস নিয়ে তদন্ত করতে পারে, আমরা পারছি না কেন।’ বলেন মন্ত্রী।