মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারী ২০১৮ ১২:৩২:২৫ অপরাহ্ন

সাধারণ শিক্ষার্থীদের পেটাল ছাত্রলীগ, আহত ১০

যৌন নিপীড়নকারী ছাত্রলীগ নেতাদের বহিষ্কারসহ তিন দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইনের নেতৃত্বে লোহার রড ও লাঠিশোটা নিয়ে এ হামলা চালানো হয়। এ সময় অন্তত ১০ জন সাধারণ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাবির ভিসি কর্যালয়ের সামনে এ হামলা হয়। আহতরা হলেন- লিটন নন্দি, রাজিব কুমার দাস, তাজওয়ার, জাফর লাল রায়, অপু, আরশাদ, বেনজির, রায়হান, জাফরুল নাদিম ও রাসেল। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। এর আগে, দুপুরে যৌন নিপীড়নকারী ছাত্রলীগ নেতাদের বহিষ্কারসহ তিন দফা দাবিতে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ভিসিকে উদ্ধার করতে আন্দোলনকারীদের ওপর কয়েক দফায় হামলা চালিয়ে তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এ সময় ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র মাসুদ আল মাহাদী, ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের প্রগতি বর্মনকে মারধর করে ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল শাখার নেতাকর্মীরা। জানা গেছে, রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী’ ব্যানারে গত ১৫ জানুয়ারির আন্দোলন কর্মসূচিতে ছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগের ‘নিপীড়নের’ প্রতিবাদে বর্তমানের ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দের’ ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়। অধিভুক্তি সমস্যার সমাধান ছাড়াও নিপীড়নে জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বহিষ্কার ও প্রক্টরের অপসারণসহ চার দফা দাবিতে গত সপ্তাহ থেকে এই আন্দোলন চালিয়ে আসছে তারা। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে এসে অন্তত তিনটি ফটক ভেঙে বেলা দেড়টার দিকে উপাচার্যের দরজার সামনের করিডোরে অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে বিকেল ৪ টায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসানসহ ছাত্রলীগের ২০-২৫ জন নেতাকর্মী ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। তারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে উপাচার্যকে মুক্ত করে ফের তার কার্যালয়ে নিয়ে যান। এসময় উপাচার্যের কক্ষের সামনের করিডোরে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের রড নিয়ে তাড়া করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এরপর কিছুক্ষণের জন্য অবরোধকারীদের উপাচার্যের দরজা সামনে রেখে সরে গেলেও বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বিভিন্ন হল থেকে বিপুল সংখ্যক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী এসে লোহার রড় ও লাঠিশোটা নিয়ে আন্দোলনকারীদের অবস্থানে ফের হামলা চালায়। হামলার পর উপাচার্য কার্যালয় থেকে সিনেট ভবনের দিকে যাওয়ার ফটক দিয়ে চলে যেতে চাইলেও সেখানে আরেকদল ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর হামলার শিকার হয় আন্দোলনকারীরা। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া করলে প্রশাসনিক ভবনের ভেতর দিয়ে মূল ফটক হয়ে বেরিয়ে যেতে চান আন্দোলনকারীরা। কিন্তু ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ধাওয়া করে আন্দোলনকারীদের মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দীকে বেধড়ক মারধর করা হয়।