শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল, ১৪৪৫ | ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


রোববার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:০২:৪০ পূর্বাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

পাইলস রোগের জটিলতা

ভদ্রলোককে স্ট্রেচারে শুইয়ে চেম্বারে নেওয়া হলো, হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে সরাসরি ডাক্তারের চেম্বারে। ৬৫ বছরের ভদ্রলোক, সাধারণভাবে পরীক্ষা করে দেখা গেল শরীর রক্তশূন্য, পা, নাড়ি অত্যন্ত ক্ষীণ। রোগীর সঙ্গী লোকজনকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘কী হয়েছে?’ তারা বললেন, ‘তার পাইলস হয়েছে’। পাইলসের রোগীরা স্বাভাবিকভাবে হেঁটে আসে এবং স্বাভাবিকভাবেই যায়। এ ধরনের রোগীর স্টেচারে আসার কথা নয়। যাই হোক রোগীকে পরীক্ষা করে দেখা গেল রোগীর নাড়ির গতি ক্ষীণ, চোখ পরীক্ষা করে দেখা গেল রোগী রক্তশূন্য সাদা, পায়ুপথ পরীক্ষা করে দেখলাম সেখানে ভয়াবহ অবস্থা। পাইলস পায়ুপথ দিয়ে বেরিয়ে বর্তমানে রীতিমতো পচন ধরেছে। জানা গেল, রোগীর বহু বছর ধরে পাইলস। বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন চিকিৎসা বিভিন্ন সময়ে করেছেন। কিন্তু চিকিৎসকের কাছে যান নাই। কারণ, বিভিন্ন জন ভয় দেখিয়েছেন, ‘ডাক্তারের কাছে গেলেই অপারেশন করে দেবে, আর একবার অপারেশন করলে বার বার অপারেশন করতে হবে’। যাই হোক এজন্যই তিনি ছিলেন বহু বছর। রক্ত যেত, পায়ুপথের মাংসপিণ্ড বেরিয়ে যেত তিনি ঠেলে ঢুকিয়ে দিতেন। এভাবেই চলে যাচ্ছিল। কিন্তু সাতদিন আগে তার পায়ুপথ টয়লেটের সময় বের হয়ে যায়, তিনি নানাভাবে চেষ্টা করেন কিন্তু কোনোভাবেই সেটি আর ভিতরে যায় না। তিনি নানা ধরনের ওষুধ খান, কবিরাজি, হোমিওপ্যাথি এবং ডাক্তারি কিন্তু পায়ুপথের ফোলা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। তীব্র ব্যথা শুরু হয়, মলত্যাগ বন্ধ হয়ে যায়, তিনি চরমভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। রোগীকে পরীক্ষা করে দেখা গেল— রোগী শক এ। নাড়ির গতি অত্যন্ত দুর্বল। ব্লাড প্রেশার খুব কম, পায়ুপথ পরীক্ষা করে দেখলাম পায়ুপথ সম্পূর্ণ বেরিয়ে গেছে এবং সেখানে স্থানে স্থানে পচন ধরেছে। এটি একটি ভয়াবহ অবস্থা। এটিকে বলা হয় angrenous Piles। অর্থাৎ পাইলস বেরিয়ে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে পচন ধরা। আর পায়ুপথ যেহেতু অত্যন্ত Infected area, অর্থাৎ জীবাণুযুক্ত এলাকা, তাই সেখান থেকে জীবাণু রক্তের মাধ্যমে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে, যাকে বলা হয় ঝবঢ়ঃরপবসরধ এই অবস্থায় রোগীর মৃত্যুর হার উন্নত দেশেও ৫০ শতাংশের বেশি। এই রোগের অপারেশন অত্যন্ত জটিল। কারণ পায়ুপথের অনেক অংশ পচে যাওয়ায় সেটি আবার তৈরি করতে হয়েছিল (Reconstruct)। এসব ক্ষেত্রে বিদেশে সাধারণত কলোস্টমি করে দেয়। অর্থাৎ মলত্যাগের জন্য আর একটি অস্থায়ী পথ করা। এখন বাংলাদেশেই কলোস্টমি (Colostomy) ছাড়াই অপারেশন করা যায়। তাই এসব বিষয়ে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। অধ্যাপক ডা. এসএমএ এরফান, কোলোরেক্টাল সার্জন, জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হসপিটাল, ঢাকা।





আরো খবর