শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৭:২৫

প্রকাশিতঃ রোববার, ১৯ আগস্ট ২০১৮ ১১:০৯:২২ পূর্বাহ্ন

সৌদি থেকে নির্যাতিত নারীর করুণ আকুতি

ভাই আমাকে বাঁচান। আমাকে নিয়ে যান। না হলে আমি মরে যাবো। একরাতে ছেলে আসে, আর এক রাতে বাপ আসে। আমি আর থাকতে পারছি না। আমার ঠ্যাং বেয়ে রক্ত পড়ছে। আমাকে বাঁচান ভাই, আমাকে বাঁচান। সৌদি আরবে গৃহকর্মে যাওয়া এক নারী গতকাল মোবাইলে এভাবেই তার দুর্দশার কথা তুলে ধরে দেশে ফেরার আকুতি জানান। ব্রাকের মাইগ্রেশন প্রোগামের মিডিয়া শাখার এক কর্মকর্তার সঙ্গে কথপোকথনে তিনি তার এই দুদর্শার কথা তুলে ধরেন। ওই নারী জানান, তিনি ৪ মাস আগে সেদেশে গেছেন। দেশটির আল বাহার এলাকার একটি বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ দেয়া হয়েছে তাকে। একমাস সেখানে ভালোই ছিলেন। কিন্তু এরপর থেকেই তার ওপর শুরু হয়েছে নির্যাতন। কাঁদতে কাঁদতে হতভাগা এই নারী বলেন, আপনি আমার আপন ভাই, আমাকে বাঁচান, রাত্রিরি... । এক রাত্রিরি ছেলে আসে, আরেক রাত্রিরি বাবা আসে। আমার জানডা বোরোয় যাচ্ছে। ‘ওই জায়গায়’ হালিস বেরোয় গেছে। জানডা বেরোয় যাচ্ছে। থাকতি পারতিছি নে ভাই। আমারে একটু বাঁচান ভাই। আমারে একটু নিয়ে যান ভাই। (কাঁদতে কাঁদতে) ওরে ভাই, আমি মরে গিলাম ভাই। কতদিন সেখানে গেছেন জিজ্ঞেস করলে ওই নারী জানান, চার মাস হলো গেছেন। এরমধ্যে এক মাস তিনিই ভালো ছিলেন। বলেন, ‘চার মাসে একমাস ভালো ছিলাম আর তিন মাসে আমার জানডা বেরোয় গেছে ভাই। আমি এখানে থাকলে বাঁচতি পারবো নানে।’ ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে পুলিশের কাছে যাওয়ার সুযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না ভাই, বাইর হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তিনটা গেটে তালা দিয়ে রাখে।’ তিনি বলেন, ‘ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা কলি নেই না। খালি একটা বড়ি দেয়। ডাক্তারের কাছে নিলি আমি দেহাবানে, কয়ে দিবানে, তাইতি নেয় না।’ নারী বিলাপ করতে করতে আবারো বলেন, আমাকে বাঁচান ভাই। না হলি, আমি বাংলাদেশে যাতি পারবো নানে। আমাকে নিয়ে যান। আমি বাংলাদেশে কাজ করে খাবানে। একেনে কাজ করতি পারবো নানে। আমার ঠ্যাং বেয়ে বেয়ে রক্ত পড়ছে। এ সময় নারীটি অঝোরে কান্না করতে থাকেন। একইসঙ্গে ভীতসন্ত্রস্ত বলে মনে হয় তাকে। জানা গেছে, ওই নারীর বাড়ি খুলনায়। গত ৩রা এপ্রিল আল মিনার ওভারসিজ (আরএল নং- ১২৩৫) নামে একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি আরব যান। তার এ দুর্দশার কথা জানিয়ে পরিবারের সদস্যরা ব্রাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সংস্থাটি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে তাকে ফেরত আনতে গত ২৫শে জুলাই প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে আবেদন করেন। একইসঙ্গে নারীর বর্তমান অবস্থা জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে।
43A Railway Pde Lakemba, NSW 2195
email: editor@amardesh24.com
Copyright © 2016. Allright Reserved amardesh24.com