বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০৬

প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ০৪ জুন ২০২১ ১২:৪৬:১৫ পূর্বাহ্ন

প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২০ শতাংশ বাস্তব সম্মত নয়: সিপিডি

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২০ শতাংশ ধরা বাস্তবোচিত হয়নি বলে অভিমত দিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)।

সেইসঙ্গে করোনাভাইরাস মোকাবিলা এবং মহামারি থেকে ফিরে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করার জন্য যে বাজেট প্রয়োজন ছিল, তাও প্রস্তাবিত বাজেটে নেই বলে মনে করছে এ গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি।

বৃহস্পতিবার (৩ জুন) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনের পর ভার্চুয়ালি আয়োজিত সিপিডির তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এসব অভিমত তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

তিনি বলেন, ‘জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২০ শতাংশের কথা বলা হয়েছে। এখানে বলা হচ্ছে- ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির দেখানো হয়েছে ৬ দশমিক ১০ শতাংশ। এটা আমরা বলছি- অর্থনীতির অন্যান্য যেসব সূচক দেখা যাচ্ছে, সেই সূচকের প্রেক্ষিতে এটা একটু বেশি। এটা বাস্তবায়নের সম্ভাবনা খুব কম। সেটা যেহেতু আরও কম হবে, সেই লো বেঞ্চমার্ক থেকে এই যে ৭ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি হবে, এটা আসলে বাস্তবোচিত না এবং পূরণ হবে না।’

ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘এর প্রেক্ষিতে সামষ্টিক যে কাঠামো অর্থাৎ এখানে রাজস্ব আয়, ব্যয় এবং বিনিয়োগ ইত্যাদির যে কাঠামো দেয়া হয়েছে, তা বাস্তবসম্মত হয়নি বলে আমরা মনে করছি। রাজস্ব কাঠামোতে বড় ধরনের তেমন পরিবর্তন নেই। প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩০ শতাংশ বাড়াতে হবে। এটাও অনেকটা বেশি।’

তিনি বলেন, ‘করোনা মোকাবিলা এবং করোনা থেকে ফিরে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করার জন্য যে বাজেট প্রয়োজন ছিল, সেটা আমরা লক্ষ্য করিনি। সামগ্রিকভাবে আমাদের কাছে মনে হয়েছে- করোনাকালীন এ বাজেট দুর্বল অনুমিত এবং বাস্তবায়নের সীমাবদ্ধতা আমাদেরকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলবে।’

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘আয়করের সীমা ওপরের দিকে বাড়ানো হয়নি। একইভাবে নিচের দিকের সীমা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এর ফলে কর ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। নিচের দিকে আয়করের সীমা আর একটু বাড়ালে ভোগ ব্যয় বাড়তো। তা বিনিয়োগে সহায়তা করতে পারতো। অর্থাৎ পুনরুদ্ধারে সহায়তা করতে পারতো।’

তিনি বলেন, ‘সরকারি ব্যয়ের বর্ধিত যে বরাদ্দ, এখানে দেখা যাচ্ছে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জনপ্রশাসনে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পাবলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও একটা বর্ধিত বরাদ্দ দেখা যাচ্ছে। খাতওয়ারি বিষয়ের মধ্যে সবার আগে আসে স্বাস্থ্যখাত। স্বাস্থ্যখাতের মূল বিষয় এখন টিকাদান। করোনা কতদিন থাকবে কেউ জানে না। করোনা থেকে মুক্তি না পেলে অর্থনীতিতে চাঞ্চল্য ফিরে আসবে না। সেজন্য টিকাদান কর্মসূচি সবার জন্য, যারা যোগ্য সবাইকে টিকা দিতে হবে।’

ফাহমিদা বলেন, ‘টিকাদানের জন্য বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকা রাখা হয়েছে, এটা পর্যাপ্ত নয়। বাজেটে স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দ গত বছরের মতোই রাখা হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দ জিডিপির দশমকি ৮৩ শতাংশ ছিল। এ বছরেও দশমিক ৮৩ শতাংশ রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তাখাতে আমরা দেখছি- সেখানে সামান্য কিছু ভাতা ও বরাদ্দ বেড়েছে। কিন্তু সেখানে আগের মতোই সরকারি কর্মচারীদের পেনশন রয়েছে। এখানে পেনশন যতোটা বেড়েছে, সামাজিক নিরাপত্তার আসল যে অংশ সেখানে নিট ততোটা বাড়েনি। সুতরাং এখানে বরাদ্দ আরও বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।’

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘বাজেট অর্থায়নের ক্ষেত্রে কয়েকটি কাঠামোগত পরিবর্তন দেখানো হয়েছে। বিদেশি ঋণের কথা বলা হয়েছে। এটা ভালো হয়েছে। রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে যেসব নীতিমালা করা হয়েছে, সেখানে ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে নয় প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে করা হয়েছে। এটাও ইতিবাচক। একইসঙ্গে এসএমইকে স্বল্পসুদে ঋণ দেয়া হবে, এটাকে আমরা সমর্থন করছি।

43A Railway Pde Lakemba, NSW 2195
email: editor@amardesh24.com
Copyright © 2016. Allright Reserved amardesh24.com