বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ০১:০৩

প্রকাশিতঃ বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ১১:২২:০৬ পূর্বাহ্ন

রোহিতের তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরিতে রেকর্ড চুরমার

২৯৯ রানে অপরাজিত থেকে ক্রিকেটকে বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন ডন ব্র্যাডম্যান। সে সময় একটা ট্রিপল সেঞ্চুরির জন্য মানুষের কত আকুতি, আর একজন একাই টেস্টে তিনটি ট্রিপল সেঞ্চুরি করে ফেলবেন! না, ব্র্যাডম্যান পারেননি। দুটো ট্রিপল সেঞ্চুরিতে সন্তুষ্ট হতে হয়েছিল ব্র্যাডম্যানকে। কিন্তু রোহিত শর্মা সে পথে হাঁটেননি। ওয়ানডে ক্রিকেটে একাই তিনটা ডাবল সেঞ্চুরি করে ফেললেন রোহিত! একটা সময় মনে হচ্ছিল, হয়তো নব্বইয়ের ঘরে থেমে যেতে হবে তাঁকে। না, সেই আক্ষেপটায় পুড়তে হলো না। ১৫৩ বলে ১৩ চার ও ১২ ছক্কায় ২০৮ রান করে শ্রীলঙ্কার বোলারদের নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছেন। ৪ উইকেটে ৩৯২ রান তুলে প্রথম ম্যাচের পরাজয়ের জ্বালা জুড়োতে শুরু করেছে ভারত। ২০১৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০৯ রান করে ডাবল সেঞ্চুরি ক্লাবে ঢুকেছিলেন। আর পরের বছরই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেটাকে ভুলিয়ে দিলেন প্রায় অমানবিক এক ইনিংসে। ওয়ানডেতে এক ইনিংসে এক ব্যাটসম্যান যখন ২৬৪ রান করেন, সে ইনিংসকে যে কোনো উপমাতেই আটকানো যায় না। এত দিন সেটাই ছিল পরম বিস্ময়ের ব্যাপার। ওয়ানডের জন্মের ৩৯ বছর পর যেখানে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির দেখা মিলেছিল। ৪ জন ব্যাটসম্যান যেখানে মাত্র একবার সে চূড়ায় উঠতে পেরেই তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছেন। সেখানে রোহিত আজ আবার পেলেন ডাবল সেঞ্চুরি। একাই তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি! এটাও সম্ভব? বছরটাই দুর্দান্ত যাচ্ছে তাঁর। ২০ ম্যাচে ১২৮৬ রান করে ফেলেছেন। এর মাঝে ১১ ইনিংসেই পেরিয়েছেন পঞ্চাশ। এর ৬টিই তিন অঙ্কের। ৯৯.৬১ স্ট্রাইক রেটে ৭৫.২৩ গড়ে রান তোলা এক ব্যাটসম্যানের জন্য বছরের সবচেয়ে মধুরতম সমাপ্তিই বলা চলে। শেষ ১০ ওভারেই ১০৭ রান তুলেছেন রোহিত। তাঁর এমন ভয়ংকর রূপেই শেষ ৬০ বলে ১৪৭ রান পেয়েছে ভারত। তরুণ ব্যাটসম্যান শ্রেয়াস আইয়ার ৭০ বলে ৮৮ করে আউট হয়েছেন। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ২১৩ করেছেন। এর আগে শিখর ধাওয়ানের সঙ্গে রোহিতের ১১৫ রানের ওপেনিং জুটিও হয়েছিল, যেখানে ধাওয়ানই ছিলেন এগিয়ে (৬৮ রান)। তবে রোহিতের এমন ইনিংসের পর ভারতের রানের হিসাব মনে হয় না কেউ নিতে যাচ্ছে! ১৬তম সেঞ্চুরি করে বীরেন্দর শেবাগকে পেরিয়ে গেছেন। ওয়ানডেতে ভারতের পক্ষে তৃতীয় সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিও এখন তাঁর। এবার অধিনায়ক হিসেবে শুধু জয় তুলে নেওয়ার অপেক্ষা। আজকের ইনিংসে কী করেননি রোহিত! যখন যা খেলতে চেয়েছেন, সেটাই খেলেছেন। শ্রীলঙ্কান বোলাররা কোনোভাবেই বশে আনতে পারেনি তাঁকে। না পেসাররা, না স্পিনার। না শর্ট বল করে, না ইয়র্কার দিয়ে। যেন ভিডিও গেম খেললেন! সুইপ করে অনায়াসে পেসারকে চার মেরেছেন; যেন সেটা ব্যাপারই না! অথচ ক্রিকেটের সবচেয়ে কঠিন শট পেসারদের সুইপ করাই! খুব যে জোরের ওপর খেলেছেন, তা নয়। আগের দিনই ক্রিস গেইল ১৮ ছক্কার ইনিংস খেলেছেন বিপিএলের ফাইনালে। কিন্তু রোহিতের খেলায় গা-জোয়ারি ব্যাপার নিয়ে। বরং আশ্চর্য পেলবতা থাকল তাঁর শটে। থাকল চোখে মায়াঞ্জন বুলিয়ে দেওয়ার স্নিগ্ধতা। এভাবেও তো শাসন করা যায়! একপর্যায়ে তাঁর প্রতিযোগিতা হলো কেবল ফুরিয়ে আসা বলের সঙ্গে। লঙ্কান বোলাররা ততক্ষণে হাল ছেড়ে দিয়েছেন। রোহিত ডাবল সেঞ্চুরিটা পাবেন কি না, সেটাই তখন সংশয়ে কেবল। কিন্তু কোহলি নয়, মাঠে যে তার অবতার খেলছিল। আর অলক্ষ্যে ভিডিও গেমের জয়স্টিক নিয়ে বসে ছিল কেউ! আজ রোহিতের ইনিংসটার আর কোনো ব্যাখ্যা যে খুঁজে পাওয়া যায় না!
43A Railway Pde Lakemba, NSW 2195
email: editor@amardesh24.com
Copyright © 2016. Allright Reserved amardesh24.com