শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০১:১১

প্রকাশিতঃ মঙ্গলবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:২৬:৩৪ পূর্বাহ্ন

রাব্বি কি অন্যদের জন্য আশার বার্তাও

বয়স ৩০ ছুঁলেই যেখানে বাতিলের খাতায় পড়ে যাওয়াটা অঘোষিত নিয়ম, সেখানে এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্তি অন্যদেরও দেখাতে পারে আশার ঝিলিক। তিনি যে ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতায় স্বপ্নের ঠিকানা খুঁজে পেয়েছেন, একই জায়গায় নিত্য রান করে চলা আরো কয়েকজনও সেই ঠিকানায় চিঠি পাঠিয়ে চলেছেন। কিন্তু জবাব মিলছে না! ফজলে রাব্বিকে সুযোগ দেওয়াতে কি তাঁদেরও এই বার্তাটা দেওয়া হলো না যে চোখের আড়াল হয়নি কেউই? ক্রীড়া প্রতিবেদক : তাঁর ক্যারিয়ারকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। খেলার ছাড়ার আগে এবং পরে। প্রথম ভাগ যদি শেষ হয়ে থাকে নিজেকে এগিয়ে নিতে না পারার অযুত হতাশায়, তাহলে দ্বিতীয় পর্বের শুরু আশায়। কঠোর পরিশ্রমে নিজেকে বদলে ফেলা ফজলে রাব্বি খাটুনি বাড়িয়ে, ওজন কমিয়ে পারফরম্যান্সের মান পরের ধাপে নিয়ে গিয়ে পেরিয়েছেন সেই শেষ দরজার চৌকাঠ। যেটি পেরোলেই জাতীয় দল। তত দিনে বয়স ছুঁয়েছে ৩০! বয়স ৩০ ছুঁলেই যেখানে বাতিলের খাতায় পড়ে যাওয়াটা অঘোষিত নিয়ম, সেখানে এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্তি অন্যদেরও দেখাতে পারে আশার ঝিলিক। তিনি যে ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতায় স্বপ্নের ঠিকানা খুঁজে পেয়েছেন, একই জায়গায় নিত্য রান করে চলা আরো কয়েকজনও সেই ঠিকানায় চিঠি পাঠিয়ে চলেছেন। কিন্তু জবাব মিলছে না! ফজলে রাব্বিকে সুযোগ দেওয়াতে কি তাঁদেরও এই বার্তাটা দেওয়া হলো না যে চোখের আড়াল হয়নি কেউই? খুব নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই অবশ্য। কারণ সবার ক্ষেত্রে যে একই মানদণ্ড ব্যবহার করা হবে, নেই সেই নিশ্চয়তাও। ত্রিশে সুযোগ পাওয়া ফজলে রাব্বি অবশ্য এই মানদণ্ডকেই শেষ কথা বলে ধরে নিচ্ছেন, ‘বয়স নিয়ে যে কথা হচ্ছে, আমি আসলে এসব ভাবি না। আমি যদি ফিট থাকি এবং আমার পারফরম্যান্স থাকে, তাহলে বয়স কোনো বিষয়ই নয়। ’ সেটিই সত্যি কথা। পারফরম্যান্স থাকলে বয়স কোনো বিষয় হওয়ার কথা অবশ্যই নয়। তবু কারো কারো ক্ষেত্রে ব্যাপারটি তা নয় বলেই সবার জন্য একই নিয়ম অনুসরণ করা হচ্ছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। যদিও প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের দাবি, কাউকে সুযোগ দিতে গিয়ে তাঁদের বিবেচনায় থাকে আরো কিছু বিষয়ও। ফজলে রাব্বির ক্ষেত্রেও বিবেচ্য ছিল সেসব। সব বিবেচনায় রাব্বির দলে ঠাঁই পাওয়ার ঘটনায় অন্যদের জন্যও আশার ঝিলিক আছে বলেও মনে করেন তিনি, ‘পারফরমারের সুযোগ সব সময়ই থাকবে। ফজলে রাব্বির সুযোগ পাওয়ার মাধ্যমে সেই বার্তাটিই আরেকবার দেওয়া হলো সবাইকে। তবে পারফরমারের যে শুধু ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরম করলেই হবে, তাও নয়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গিয়ে টেকার মতো টেকনিক্যাল দক্ষতা কতটা আছে, চিন্তা করতে হবে সেটিও। ওইভাবেই আমরা দল নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যাই। ’ এর আগে ফজলে রাব্বিকে এই পর্যায়ের জন্য গড়ে তোলার প্রক্রিয়াও মনে করিয়ে দিতে চাইলেন মিনহাজুল, ‘‘ফজলে রাব্বি তো এইচপিতে (হাই পারফরম্যান্স স্কোয়াডে) ছিল। বাংলাদেশ ‘এ’ দলেও খেলেছে। আমরা তো ওকে নার্সিং করেছি। এইচপিতে নার্সিং করাতেই তো সে এই মানে পৌঁছেছে। ঘরোয়া ক্রিকেটেও ভালো পারফরম করেছে। ’’ এর আগে কখনো জাতীয় দলে না খেলা রাব্বি নিজেকে পরিণত করার নানা ধাপ পেরিয়ে এসেছেন। সুযোগ পেলে এবার দেবেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থাকার পরীক্ষাও। নাঈম ইসলামের মতো কেউ কেউ আছেন, যাঁরা সেই পরীক্ষায় উতরেও গেছেন। নাঈমই যেমন তাঁর ৮ টেস্টের ক্যারিয়ারের সবশেষ ম্যাচ খেলেছেন ২০১২-র নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। দুই টেস্টের সেই সিরিজের প্রথম ম্যাচেই করেছিলেন নিজের ক্যারিয়ারের একমাত্র সেঞ্চুরি। প্রথম ইনিংসে ২৫৫ বলে খেলা ১০৮ রানের ইনিংসটি নিশ্চিতভাবেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পরীক্ষায় তাঁকে পার করে নিয়েছিল। এরপর হঠাৎ করেই বিবেচনার বাইরে চলে যাওয়া নাঈম ঘরোয়া ক্রিকেটে গত বেশ কয়েক মৌসুম ধরে অক্লান্তেই রান করে চলেছেন। ৫ টেস্টের ক্যারিয়ারে উল্লেখযোগ্য কিছু করতে না পেরে বাদ পড়া তুষার ইমরানও তাই। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ৩০টি সেঞ্চুরি করা এই ব্যাটসম্যানের রানও ১১ হাজার ছুঁই ছুঁই। নাঈম-তুষাররা বয়সের ত্রিশ সীমাও পার করে এসেছেন বহু আগে। কিন্তু পারফরম্যান্স আছে। তবে ফজলে রাব্বিকে সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে সবাইকে বার্তা দেওয়ার যে কথা বললেন মিনহাজুল, সেটি কি ওই দুজনের জন্যও প্রযোজ্য হবে? মিনহাজুলের বক্তব্য থেকেই তা কিছুটা আঁচ করা যেতে পারে। নাঈম বিষয়ে তাঁর ভাষ্য, ‘কিছু কিছু জায়গায় এটাও ভাবতে হবে যে সে কোন জায়গায় ব্যাটিং করে। নাঈম যে জায়গায় ব্যাটিং করে, সেখানে জাতীয় দলে প্রতিষ্ঠিত তিনজন ব্যাটসম্যান আছে। এ ক্ষেত্রে তো এসব দেখতেই হবে। ’ আর তুষারকে নিয়ে বললেন, ‘তুষার লম্বা দৈর্ঘ্যের ম্যাচে ভালো খেলছে। ওই ফরম্যাটে ওকে আমরা দেখেছিও (শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের বিপক্ষে)। আমাদের কাছে কোচের রিপোর্টও আছে। আসলে দেখার অনেক কিছুই আছে। মাথায় আছে। এর পরও আমরা তো চোখের আড়াল করিনি। সে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলছে, খেলুক না। দেশের জন্য যাঁকে যখন প্রয়োজন হবে, অবশ্যই ডাকা হবে। দেখি। ’ সেই ‘দেখা’টা একই নিয়ম অনুসরণ করে হবে তো?
43A Railway Pde Lakemba, NSW 2195
email: editor@amardesh24.com
Copyright © 2016. Allright Reserved amardesh24.com