মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:০৬

প্রকাশিতঃ শনিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০১:৩৮:০৪ পূর্বাহ্ন

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার শর্ত

দেশে প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর সব স্কুল-কলেজে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে আবারও ক্লাস শুরু হবে। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পালন করতে হবে বিশেষ কিছু শর্ত।

আবার খোলার পর এসব শর্ত ঠিক মতো পালিত হচ্ছে কিনা বা স্কুল খোলার পর করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি কেমন হয় তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি বাংলা। 

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আগামী রোববার মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক হবে, সেখানেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর করণীয় নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মাধ্যমিক উইংয়ের পরিচালক মো. বেলাল হোসাইন বলেন, ‘আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবো এবং প্রতিটি স্কুলের ওপর প্রতি সপ্তাহে রিপোর্ট দেয়া হবে। যেখানে পর্যাপ্ত শ্রেণি কক্ষ নেই সেখানে বিকল্প দিনে ক্লাস হবে।’

মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, তিনটি বিষয় অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে - তাপমাত্রা পরীক্ষা করে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের ব্যবস্থা করা, প্রবেশের পর স্বাস্থ্যবিধি মানা বিশেষ করে মাস্ক ব্যবহার এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। মোটা দাগে এগুলো অবশ্য করণীয়। এরপর পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী বিষয়গুলো বলব আমরা। স্কুলগুলো ইতোমধ্যেই এগুলো জানে এবং তারা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে। 

কী ধরনের নির্দেশনা গেছে?
কর্মকর্তারা বলছেন সরকারিভাবে স্কুলগুলোতে ইউনিসেফের সহায়তায় তৈরি করা একটি নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবস্থানের সময় শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাইকে সবসময় মাস্ক পরতে হবে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের তিন ফুট শারীরিক দূরত্বে রাখা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিদিন নিয়মিত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। 

নির্দেশনা অনুযায়ী শ্রেণি কক্ষে ৫ ফুটের চেয়ে ছোট আকারের বেঞ্চিতে একজন ও এর চেয়ে বড় আকারের বেঞ্চিতে দুজন শিক্ষার্থী বসানো যাবে।

কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথম দিকে পাবলিক পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরাই বেশি আসবে। বাকিদের স্কুলে আসার জন্য রোটেশন সিস্টেম অর্থাৎ আজ যারা আসবে তারা কাল আসবে না-এই নীতি অনুসরণের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এছাড়া ১২ সেপ্টেম্বরের আগেই স্কুলগুলোকে পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত করা ছাড়াও স্কুলে কোভিড সংক্রান্ত ব্যবস্থা অর্থাৎ হাত ধোয়া, তাপমাত্রা পরীক্ষা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

শিক্ষকরা কতটা প্রস্তুত?
বরিশালের শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাদ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পাপিয়া জেসমিন বলেন, হাত ধোয়ার আলাদা ব্যবস্থা করেছি। স্কুল ঘর পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। মাস্ক ও তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থাও হয়েছে।

অন্যদিকে ওই এলাকাতেই পূর্ব কর্ণকাঠী আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুন নাহার শিখা বলছেন তারাও সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এখন পুরোপুরি প্রস্তুত।

গত বছর মার্চে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে বা সরাসরি ক্লাস বন্ধ রাখা হয়েছে।

এর মধ্যে কয়েক দফা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কথা বলা হলেও শেষ পর্যন্ত কোভিড সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসায় ছুটি এগারই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল।

এখন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না এলেও ব্যাপক টিকাদান কর্মসূচির পাশাপাশি সংক্রমণের হার কমে আসায় কোভিড কারিগরি পরামর্শক কমিটির সাথে আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, এ সিদ্ধান্তের ফলে মূলত প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক ও মাদ্রাসাসহ সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই খুলে দেয়া হবে।

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আগেই পনের অক্টোবর খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হলেও, এখন মন্ত্রণালয় বলছে শিক্ষার্থীদের এক ডোজ টিকা দেয়ায় এবং কোভিড পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চাইলে নিজেরা নির্ধারিত সময়ের আগেই তা খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারবে।

43A Railway Pde Lakemba, NSW 2195
email: editor@amardesh24.com
Copyright © 2016. Allright Reserved amardesh24.com