রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ১২:৩৪

প্রকাশিতঃ বুধবার, ১৫ মে ২০১৯ ০৪:৫২:৫৩ অপরাহ্ন

সন্দেহজনক লেনদেন বেড়েছে শতকরা ৬৪.৫০ ভাগ

বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কাছে গত অর্থবছরে রেকর্ড সংখ্যক সন্দেহজনক লেনদেন ও কর্মকান্ডের রিপোর্ট পাঠিয়েছে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তারা এ কাজ করেছে। এসব এজেন্সির কাছ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিএফআইইউ মোট সন্দেহজনক লেনদেন রিপোর্ট (এসটিআর) এবং সন্দেহজনক কর্মকাণ্ডের (এসএআর) ৩৮৭৮ টি রিপোর্ট পেয়েছে। বিএফআইইউয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগের বছরের তুলনায় এ ধরনের কর্মকান্ড এই অর্থবছরে শতকরা ৬৪.৫০ ভাগ বেশি। গত সপ্তাহে এই বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। মিডিয়ায় প্রকাশিত রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে। ব্যাংকাররা বলছেন, এটা একটা ভাল লক্ষণ যে, ব্যাংক এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা এজেন্সিগুলো অর্থপাচার ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে সন্দেহজনক লেনদেন ও কর্মকাণ্ডের বিষয়ে অধিক হারে দৃষ্টি দিয়েছে। ব্যাংকিং খাতের গোয়েন্দা বিষয়ক এই ইউনিটের প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান বলেছেন, একই সঙ্গে রিপোর্টিং এজেন্সিগুলোর এসটিআর এবং এসএআর জমা দেয়ায় অগ্রগতি বা উন্নতি হয়েছে। উল্লেখ্য, রিপোর্টিং এজেন্সি ও অন্যান্য সূত্র থেকে পাওয়া এসটিআর, এসএআর, নগদ অর্থ লেনদেনের রিপোর্ট, অর্থ পাচার সম্পর্কিত এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অর্থায়ন বিষয়ক রিপোর্ট বিশ্লেষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএফআইইউ। বার্ষিক ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, গত অর্থ বছরে বিএফআইইউ ৬৭৭টি এসটিআর এবং এসএআর রিপোর্ট বিচার বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন অনুসন্ধানী ও আইন প্রয়োগকারী এজেন্সিকে দিয়েছে। আগের বছর এ সংখ্যা ছিল ১২১। এ সংস্থাটি বিভিন্ন রিপোর্টিং এজেন্সি থেকে পাওয়া অনিয়মের অভিযোগ বিশ্লেষণ ও অনুসন্ধান করে থাকে। যদি কোনো অনিয়ম ধরা পড়ে, তাহলে তারা আরো তদন্তের জন্য রিপোর্ট পাঠিয়ে থাকে দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ পুলিশ ও সরকারের অন্যান্য এজেন্সির কাছে। এ কথা বলেছেন, আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান। সরকারের গোয়েন্দা বিষয়ক এজেন্সি বা অনুসন্ধানী এজেন্সিগুলোর কাছে ডিজিটাল হুন্ডি এবং অনানুষ্ঠানিক রেমিটেন্স বিষয়ক সর্বোচ্চ ৬০৯টি এসটিআর এবং এসএআর রিপোর্ট পাঠিয়েছে বিএফআইইউ। বিএফআইইউ কর্তৃক বিস্তারিত তদন্ত ও বিচার বিশ্লেষণ শেষে তদন্তকারী এজেন্সিগুলো এখন পর্যন্ত এ ধরণের ২৭টি মামলা করেছে আদালতে। এর মধ্যে ২০১২ সালের অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনের অধীনে করা হয়েছে ২০টি মামলা। বাকি মামলা করা হয়েছে ২০০৯ সালের সন্ত্রাস বিরোধী আইনের অধীনে। গত বছর কয়েকটি স্পর্শকাতর ঘটনা খুঁজে বের করে বিএফআইইউ আমদানির নামে ইনভয়েসের অধীনে কিছু অর্থ পাচার ও সন্দেহাহাতীত ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া তারা দেখতে পেয়েছে অর্থপাচারে যুক্ত কিছু ইয়াবা ব্যবসায়ীও। বিভিন্ন ব্যাংক, ব্যাংক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মানি চেঞ্জারস, পুঁজিবাজারে মধ্যমস্থতাকারী সহ রিপোর্টিং এজেন্সিগুলো গত বছর ৫৪২২ টি সন্দেহজনক লেনদেনের রিপোর্ট করেছে। এর পরিমাণ ৯২১.৭৫ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ সালে এমন লেনদেন হয়েছে ৩৭৩৬টি। এর মধ্য দিয়ে লেনদেন হয়েছে ১১৬৩ কোটি টাকা। এসটিআর এবং এসএআর’কে সব সময়ই ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে বিশ্ব সম্প্রদায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা বলেন, প্রতিদিন যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রায় ৫৫০০০ এসটিআর এবং এসএআর সম্পন্ন হয়। এসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান, ঢাকা ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেছেন, যদি এসটিআর এবং এসএআর যথাসময়ে না পাঠানো হয়, তাহলে ব্যাংকগুলোকে বড় শাস্তির মুখে পড়তে হয়। অধিক সংখ্যক রিপোর্ট এটাই ইঙ্গিত করে যে, ব্যাংক ও অন্য রিপোর্টিং এজেন্সিগুলো অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অর্থায়নের বিষয়ে আরো বেশি সতর্ক হয়েছে।
43A Railway Pde Lakemba, NSW 2195
email: editor@amardesh24.com
Copyright © 2016. Allright Reserved amardesh24.com