শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০২:৪২

প্রকাশিতঃ বৃহস্পতিবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:২৫:৪২ অপরাহ্ন

বাংলাদেশে রাজনীতিকদের ওপর দমন-পীড়নের নিন্দা ইইউ পার্লামেন্টের

বাংলাদেশের অবনতিশীল মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। পার্লামেন্ট বিশেষ করে সংবাদ মাধ্যম, শিক্ষার্থী, মানবাধিকার কর্মী ও বিরোধী রাজনীতিকদের ওপর চলমান দমন-পীড়নের কঠোর সমালোচনা করেছে। গতকাল ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের বিতর্ক শেষে নেয়া প্রস্তাবে এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবে সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান ও আইনজীবী মীর আহমেদ বিন কাশেমের গুমের ঘটনাসহ বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ও অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রস্তাবে মিয়ানমারে নৃশংসতার শিকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে গঠনমূলক ভূমিকা রাখার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করা হয়েছে। একইসাথে রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন থেকে বিরত থাকতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা, নিরাপদ ও মর্যাদাসম্পন্ন প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। পার্লামেন্ট সদস্যদের ভোটাভুটিতে পাস হওয়া এ প্রস্তাবে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য আর্থিক ও ত্রাণ সহায়তা জোরদার করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। বির্তকের অংশ নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ডেলিগেশন প্রধান জ্যঁ লিমবার্ড বলেন, তৈরি পোশাক খাতে নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও শ্রম অধিকার অক্ষুন্ন রাখার জন্য ইউরোপীয় ক্রেতাদের সংগঠন অ্যাকর্ডের দেয়া সুপারিশের পূর্ণ সুবিধা বাংলাদেশ না নেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করছি। সন্ত্রাসবাদের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি মানবাধিকারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। বাংলাদেশে অব্যাহত গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড এবং কঠোর আইন প্রণয়নের বর্তমান ধারাতে আমি উদ্বিগ্ন। জ্যঁ লিমবার্ড সব দলের অংশগ্রহনে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আশা করেন, যাতে বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন থাকবে। নাগরিক সমাজের ওপর আক্রমন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে সুইডেনের সুরাইয়া পোস্ট বলেন, বাংলাদেশকে অবশ্যই সংবাদমাধ্যম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে আটক সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও ছাত্রদের মুক্তি দিতে হবে। তিনি জাতিসঙ্ঘের বিরোধীতা ও রোহিঙ্গাদের নিজ ইচ্ছার বিরুদ্ধে মিয়ানমারে ফেরত না পাঠানোর জন্য বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানান। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় প্রখ্যাত ফটো সাংবাদিক শহীদুল আলমের আটকের বিষয়টি উল্লেখ করেন নেদারল্যান্ডের মারিটজি। তিনি বলেন, এটি বাক স্বাধীনতার পরিপন্থী। তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ খারিজ করতে হবে। দু:খজনকভাবে শহীদুল আলমই বাংলাদেশের একমাত্র নিপীড়িত ব্যক্তি নন। হয়রানি, আটক ও গুমের একটি পদ্ধতি বাংলাদেশে চালু রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশ শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পেতে পারে কিনা তা যাচাই করার আহ্বান জানিয়ে মারিটজি বলেন, মানবাধিকারের জন্য জবাবদিহিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর তা সমুন্নত রাখতে আমাদের সম্ভব সবকিছু করা প্রয়োজন। চেক রিপাবলিকের টমাস বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির নিয়ে ইইউ চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না। সেখানে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা অপব্যবহার হচ্ছে। মানুষ গুম হয়ে যাচ্ছে। সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবীরা সরকারের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এটা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হওয়ার জন্যই বাংলাদেশের গুমের মাধ্যমে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন চেক রিপাবলিকের অপর রাজনীতিক হেটম্যান।
43A Railway Pde Lakemba, NSW 2195
email: editor@amardesh24.com
Copyright © 2016. Allright Reserved amardesh24.com