বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০৩:২২

প্রকাশিতঃ বুধবার, ১৩ জুন ২০১৮ ০৪:৫২:০৫ অপরাহ্ন

প্রবাসী আয়ে ভ্যাট-ট্যাক্স নেই: এনবিআর

প্রবাসীরা আড়াই লাখ টাকার বেশি আয় করলে কর দিতে হবে বলে ফেসবুক ঘুরে বেড়ানো পোস্টকে অপপ্রচার জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর। তাদের ধারণা, বৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানোকে নিরুৎসাহিত করে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠাতে এই চক্রান্ত করা হয়েছে। প্রবাসীরা বৈধ পন্থার মতো অবৈধ পন্থাতেও বিদেশ থেকে স্বজনদের কাছে অর্থ পাঠান। বৈধ চ্যানেলে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠালে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে যোগ হয়। কিন্তু হুন্ডির মাধ্যমে পাঠালে সে অর্থ রিজার্ভে যোগ হয় না। কিন্তু হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাঠানোর প্রবণতা রয়েছে, অবশ্য তা ঠেকানোর চেষ্টা করছে সরকার। এই অবস্থায় প্রবাসীদের মধ্যে করারোপের গুজব ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এই প্রেক্ষিতে বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি স্পষ্ট করে এনবিআর। এর আগে ফেসবুকে একই বিষয় জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। গত ৭ জুন আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এতে ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো-কমানোর বিষয়ে কোনো ঘোষণা আসেনি। অর্থাৎ আগের মতোই আয় আড়াই লাখ টাকার বেশি হলেই তাকে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। অবশ্য চাকরিজীবীদের জন্য আরও কিছু ছাড় আছে। যেমন, বেতনে পাওয়া বাড়িভাড়া এক লাখ ৮০ হাজার টাকা বা মূল বেতনের ৫০ শতাংশের মধ্যে যেটি কম, সেটি করের আওতামুক্ত। এ ছাড়া চিকিৎসা ভাতা ৬০ হাজার এবং পরিবহন ভাতা ৩৬ হাজারেরও কোনো আয়কর দিতে হয় না। এর বাইরেও আয়ের একটি অংশ বিনিয়োগ করলে করে ছাড়া পাওয়া যায়। তবে বাংলাদেশ প্রবাসী আয়কে উৎসাহ দিতে বরাবর একে করমুক্ত রাখে। এই ধারাবাহিকতা আগামী অর্থবছরেও চালু থাকবে। তবে ফেসবুকে গুজব রটেছে যে, দেশের মতো প্রবাসেও আড়াই লাখ টাকার বেশি আয় করলে এবং তা দেশে পাঠালে সেটি করের আওতায় আসবে। এই গুজবটি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ায় প্রবাসীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আর এটি বৈধ পথে প্রবাসী আয় দেশে পাঠানোতে প্রতিবন্ধক হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এনবিআর গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ‘২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে বিদেশ থেকে প্রেরিত রেমিটেন্সের উপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আরোপিত হয়েছে মর্মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও গুজব।’ এই গুজব ছড়ানোতে চক্রান্ত দেখছে এনবিআর। তারা বলেছে, ‘দেশের বৈধ রেমিটেন্স প্রবাহ বন্ধ করে হুন্ডির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণের অপপ্রয়াস হিসাবে এ প্রচারণা চালানো হতে পারে।’ জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা সৈয়দ এ মুমেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জানায়, মূল্য সংযোজন কর আরোপিত হয় পণ্য বা সেবা সরবরাহের উপর। প্রবাসীরা দেশের বাইরে যে সেবা দিয়ে থাকেন তার বিনিময়ে বৈদেশিক মুদ্রা আহরিত হয়। তাদের সব কাজ ভ্যাট আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৩ এর উপ-ধারা ২(ক) মোতাবেক সেবা রপ্তানি হিসাবে বিবেচিত। সুতরাং এ রপ্তানি কার্যক্রম ভ্যাটের আওতা বহির্ভূত। ‘অর্থাৎ রেমিটেন্স সীমা নির্বিশেষে এ খাতের উপর কোন ভ্যাট প্রযোজ্য নয়। তাই প্রবাসীরা বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে যে কোন পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিটেন্স প্রেরণ করতে পারেন’- বিজ্ঞপ্তিতে জানায় এনবিআর। হুন্ডির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠালে তা জাতীয় অর্থনীতিতে কোনো ভূমিকা রাখ পারে না জানিয়ে হুন্ডি পরিহার করতেও সবাইকে অনুরোধ করেছে এনবিআর। সংস্থাটি হুন্ডি বা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধের বিষয়ে সবসময় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
43A Railway Pde Lakemba, NSW 2195
email: editor@amardesh24.com
Copyright © 2016. Allright Reserved amardesh24.com