সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৭

প্রকাশিতঃ সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৮:৪৬:২০ পূর্বাহ্ন

অসময়ের বৃষ্টিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইট-ভাটায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: অগ্রহায়ণ মাসের শুরু থেকেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার ৩৮টি ইটভাটায় পুরোদমে চলছে ইট তৈরীর কাজ। প্রত্যেক ভাটায় ২০-৩০ লাখ কাঁচা মাল চুলায় (আগুনে) দেয়ার অপেক্ষায়। ঠিক সেই মূহুর্তে অসময়ের বৃষ্টি। গত শুক্রবার রাত ১০টা থেকে সমগ্র উপজেলায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বিরামহীন বৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে ভাটার মালিকদের মুখের হাঁসি। অনেকের চোখে মুখেই দেখা দিয়েছে বিষাদের চাপ। মালিকদের দেয়া তথ্যে শুধু সরাইল উপজেলায় ৪ কোটি টাকারও অধিক ক্ষতি হয়ে গেছে। রবি শস্যের চিন্তায় অশান্তি ও অস্থিরতা বিরাজ করছে এখানকার কৃষকদের মাঝেও। গতকাল রোববার সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, অধিকাংশ ইটভাটায় প্রথম রাউন্ডের ইট পোড়া হয়ে গেছে। চুলার ভেতর থেকে বের করার কাজ চলছে। আবার কিছু ভাটায় পোড়ার কাজ চলছে। অনেক ভাটায় কাঁচা ইট গুলো সাজিয়ে রেখেছেন চুলায় দেয়ার অপেক্ষায়। দ্বিতীয় রাউন্ডের লাখ লাখ ইটাও প্রস্তুত হয়ে আছে বেশ কয়েকটি ভাটায়। আর এমন সময় কাঁচা ইটের অভিশাপ হয়ে আকাশ থেকে ঝড়ছে বৃষ্টি। গত শুক্রবার সারাদিন আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন। সন্ধ্যা পর্যন্ত সরাইলের কোথাও রোদের দেখা মিলেনি। রাত ১০টা থেকে শুরু হয়ে যায় বৃষ্টি। ইটভাটার শ্রমিকরা তখন সারা দিনের কাজ শেষ করে ঘুমোচ্ছিল। কেউ পলিথিন দিতে পেরেছেন। কেউ পারেননি। অনেকে সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন সারা রাতের হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বিরামহীন বৃষ্টিতে ভাটার লাখ লাখ ইটা গলে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। কেড়ে নিয়েছে মালিকদের স্বপ্ন। কেউ ব্যাংক থেকে চড়া সুদে আবার অনেকে মহাজনী সুদে টাকা এনে ভাটায় ইট উৎপাদন শুরু করেছেন। ইট বিক্রি করে সেই টাকার দায় পরিশোধ করবেন। সব কেড়ে নিয়েছে অসময়ের এ বৃষ্টি। আর ইটভাটায় কর্মরত শ্রমিকরা এখন পুরো বেকার। শাহজাদাপুর ইউনিয়নের মলাইল নদীর পাড়ের কল্যাণ ব্রিকস ও নিউ কল্যাণ ব্রিকসের মালিক নূরুল ইসলাম কালন ও কালিকচ্ছের ধর্মতীর্থ এলাকার আজম ব্রিকসের মালিক রফিক উদ্দিন ঠাকুর বলেন, এ বৃষ্টি এই এলাকার ইট ভাটার মালিকদের বড় ধরনের ক্ষতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আমাদের প্রত্যেকের প্রায় ১০-১৫ লাখ টাকার কাঁচা ইট নষ্ট হয়ে গেছে। সমগ্র উপজেলায় ক্ষতির পরিমাণ ৪ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে তাদের ধারণা। ওদিকে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, সমগ্র উপজেলায় চাষ করা ১৪৫০ হেক্টর জমির রবিশস্য (শীতের ফসল) এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। গত ১৮-২০ ঘন্টার বিরামহীন বৃষ্টির কারণে এখন পর্যন্ত রবিশস্যের বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি। তবে যদি বৃষ্টি অব্যাহত থাকে তাহলে চাষ করা ৪০০ হেক্টর মাসকলাই, ৩৫০ হেক্টর সরিষা ও ৭০০ হেক্টর জমির শাকসব্জির বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাধন কুমার গুহ মজুমদার বলেন, রবিশস্যের এখনো ক্ষতি হয়নি। তবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ১৪৫০ হেক্টর জায়গার রবি শস্যই হুমকিতে থাকবে।
43A Railway Pde Lakemba, NSW 2195
email: editor@amardesh24.com
Copyright © 2016. Allright Reserved amardesh24.com