রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৪

প্রকাশিতঃ শনিবার, ২১ নভেম্বর ২০২০ ০২:০৬:৫১ অপরাহ্ন

২ শতাধিক প্লটের মালিক

কাপড়ের সেলসম্যান থেকে ‘গোল্ডেন মনির’

অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও বিদেশি মুদ্রা রাখার অভিযোগে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার মনির হোসেন নব্বইয়ের দশকে গাউছিয়া মার্কেটের একটি কাপড়ের দোকানের সেলসম্যান হিসেবে কাজ করতেন। সময়ের ব্যবধানে তিনি স্বর্ণ চোরাচালানকারী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তার নাম হয়ে যায় গোল্ডেন মনির। রাজধানীর মেরুল বাড্ডার বাসা থেকে মনিরকে গ্রেফতারের পর শনিবার এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছে র‌্যাব।

মেরুল বাড্ডার ডিআইটি প্রজেক্টে মনিরের বাসায় শুক্রবার রাতে অভিযানে যায় র‌্যাব। ছয়তলা বাড়িতে র‍্যাব-৩ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসুর নেতৃত্বে শুক্রবার মধ্যরাতে শুরু হয়ে শনিবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চলে।

অভিযানে মনিরের বাড়ি থেকে নগদ ১ কোটি ৯ লাখ টাকা, ৪ লিটার মদ, ৮ কেজি স্বর্ণ, একটি বিদেশি পিস্তল, কয়েক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। অস্ত্র ও মদের পাশাপাশি ৯ লাখ টাকা মূল্যের ১০টি দেশের বৈদেশিক মুদ্রা জব্দ করেছে র‌্যাব।

র‌্যাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মনিরের বাড়িতে পাঁচটি গাড়ি পাওয়া গেছে, যার মধ্যে তিনটি গাড়ির বৈধ কাগজপত্র নেই বলে সেগুলো জব্দ করা হয়েছে।

একটি গোয়েন্দা সংস্থার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানিয়েছেন। 

তিনি বলেন, নব্বইয়ের দশকে গাউছিয়া মার্কেটের একটি কাপড়ের দোকানের সেলসম্যান হিসেবে কাজ করতেন মনির। এরপর রাজধানীর মৌচাকের একটি ক্রোকারিজ দোকানে তিনি কাজ নেন। সে সময় এক লাগেজ ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরিচয় হলে মনির লাগেজ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন। 

আশিক বিল্লাহ  বলেন, ঢাকা-সিঙ্গাপুর–ভারত, এই রুটে তিনি প্রথমে লাগেজে করে কাপড়, কসমেটিক, ইলেকট্রনিকস, কম্পিউটারসামগ্রী, মোবাইল, ঘড়িসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে আনা-নেয়া করতেন। এই কাজগুলো করতে করতে তিনি লাগেজ স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েন।

‘পরে বায়তুল মোকাররমে একটি জুয়েলারি দোকান দেন মনির। সময়ের ব্যবধানে মনির বড় ধরনের স্বর্ণ চোরাচালানকারী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তার নাম হয়ে যায় গোল্ডেন মনির।’ 

চোরাচালানের দায়ে ২০০৭ সাল বিশেষ ক্ষমতা আইনে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয় বলে জানান র‍্যাবের এই মুখপাত্র। 

আশিক বিল্লাহ আরও বলেন, ভূমিদস্যুতার মাধ্যমে মনির অসংখ্য প্লটের মালিক হয়েছেন। রাজউক থেকে প্লটসংক্রান্ত সরকারি নথিপত্র চুরি করে এবং অবৈধভাবে রাজউকের বিভিন্ন কর্মকর্তাকে দাফতরিক কাজে ব্যবহার করে রাজউক, পূর্বাচল, বাড্ডা, নিকুঞ্জ, উত্তরা এবং কেরানীগঞ্জে নামে-বেনামে অন্তত দুই শতাধিক প্লট নিজের করে নেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনির ৩০টির বেশি প্লটের কথা স্বীকার করেছেন।

মনিরের ১ হাজার ৫০ কোটি টাকার উপর সম্পদের তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে র‌্যাব। বাড্ডা, নিকেতন, কেরানীগঞ্জ, উত্তরা, নিকুঞ্জে দুইশর বেশি প্লট রয়েছে তার।

43A Railway Pde Lakemba, NSW 2195
email: editor@amardesh24.com
Copyright © 2016. Allright Reserved amardesh24.com