প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ২৭ জুলাই ২০১৮ ১২:০৭:০৬ অপরাহ্ন
অন্তঃসত্ত্বা নারী চন্দ্রগ্রহণ দেখলে গর্ভস্থ সন্তানের কী ক্ষতি হয়?
শতাব্দীর দীর্ঘতম চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে শুক্রবার মধ্যরাতে। এদিন প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে ছায়াচ্ছন্ন থাকবে চাঁদ। আর এই চন্দ্রগ্রহণকে ঘিরে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। অনেক হয়তো অপেক্ষা করে আছেন কখন দেখা মিলবে চন্দ্রগ্রহণের।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের জানিয়েছে, শুক্রবার পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ১৩ মিনিট ৬ সেকেন্ডে শুরু হওয়া চন্দ্রগ্রহণ শেষ হবে ভোর ৫টা ৩০ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে।
এই বিশ্বজগতে প্রাকৃতিক জগতের মধ্যেও নানা পরিবর্তন হয়ে থাকে। চন্দ্রগ্রহণ কিংবা সূর্যগ্রহণ প্রকৃতির খুবই সাধারণ একটি বিষয়। তবু বলা হয়ে থাকে, এই খাওয়ার রান্না করতে নেই কারণ তার মধ্যে তাহলে বিষক্রিয়া তৈরি হয়৷এই কারণে হয় গ্রহণের আগে নয়তো গ্রহণের পরে খাওয়ার তৈরির একটি রীতি প্রচলিত রয়েছে৷ আর বলা হয়ে থাকে অন্তঃসত্ত্বা নারী চন্দ্রগ্রহণ দেখলে গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি হয়। জেনে রাখা ভালো সবই ভুল ধারণা।
প্রসঙ্গত, গ্রহণের সময় সূর্য, চাঁদ এবং পৃথিবী সমান রেখায় চলে আসে৷ তাই জোয়ার-ভাঁটাও তৈরি হয়৷
এদেশে বহুল প্রচলিত কিছু কুসংস্কার রয়েছে বিয়ের হলুদের অনুষ্ঠানে বিধবাদের অংশ নিতে দেয়া হয় না। বিয়ের পরপরই যদি কনের স্বামীর মৃত্যু হয় তবে ঐ কনেকে ‘অপয়া স্বামীখাকি’ বলা হয়। আবার নতুন বউ বিয়ের পর কিংবা কারো সন্তান জন্মানোর পর পরই যদি চাকরিতে প্রমোশন কিংবা ব্যবসায় উন্নতি হয় তবে ঐ বউ কিংবা সন্তানের ভাগ্যে প্রমোশন কিংবা ব্যবসায় উন্নতি হয়েছে বলে ধরা হয়। আসলে কিন্তু কারো ভাগ্যে কারো প্রমোশন বা ব্যবসায় উন্নতি হয় না। এর কোনো বৈজ্ঞানিক যুক্তি নেই।
তাই চন্দ্রগ্রহণ জড়িয়ে নানা কুসংস্কার রয়েছে যার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। যেমন, গ্রহণের সময় ঘরের বাইরে বেরতে নেই, খাবার থাকলে তা ফেলে দিতে হয়, অন্তঃসত্ত্বা নারীদের খুবই সাবধানে থাকতে হয়।
আসুন জেনে নেই অন্তঃসত্ত্বা নারী চন্দ্রগ্রহণ দেখলে গর্ভস্থ সন্তানের কী ক্ষতি হয়?
অন্তঃসত্ত্বা নারী
অনেকে প্রশ্ন করেন অন্তঃসত্ত্বা নারীদের চন্দ্রগ্রহণ দেখলে তাঁদের গর্ভস্থ সন্তানের কি ক্ষতি হয়?
একেবারেই তা হয় না। জ্যোতিষ মতে, এমন ধারণা একেবারেই ভুল। গ্রহণের সময়ে অন্তঃসত্ত্বা নারীরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। তাঁর বা সন্তানের কোনও ক্ষতির সম্ভাবনাই নেই এর থেকে।
খাওয়া বা পান করা
অহরহর শুনে থাকবেন চন্দ্রগ্রহণের সময়ে কিছু খাওয়া বা পান করা কি উচিত? গ্রহণের সময়ে খাওয়া পা পান করায় বৈজ্ঞানিক ভাবে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। যোগ নেই ধর্মের সঙ্গেও। শুধুই কুসংস্কারের বশে আজকের যুগেও অনেকে গ্রহণের সময়ে খাওয়াদাওয়া বা পানি পানও করেন না। এমনকী, বাড়তি খাবার থাকলে তা ফেলেও দেন অনেকে।
পশুদের ব্যবহারে পরিবর্তন
চন্দ্রগ্রহণের সময়ে নাকি অনেক পশুদের ব্যবহারে পরিবর্তন দেখা যায়! চন্দ্রগ্রহণের সময় পশু-পাখিরা অযথা ডাকাডাকি করে, ডানা ঝাপটায়। এর কারণ, অসময়ে অন্ধকার হয়ে যাওয়া। ২০১০ সালেই এমন তথ্যই প্রকাশ করা হয় পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্ব বিভাগের তরফ থেকে।
মানুষের মন
মানুষের মনে কি কোনও প্রভাব ফেলে চন্দ্রগ্রহণ? নাসা এমন তথ্য মানতে একেবারেই রাজি নয়। চন্দ্রগ্রহণের সময়ে কোনও ব্যক্তির মানসিক সমস্যা হলে তা একেবারেই তার মনের ব্যাপার। ছোট থেকে শুনে আসা ভয়গুলিই কাজ করে। এর কোনও বৈঞ্জানিক ভিত্তি নেই বলেই জানাচ্ছে নাসা।
অসুস্থ
চন্দ্রগ্রহণের সমেয় মানুষ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক সমীক্ষায় এমন তথ্যই উঠে এসেছিল। চন্দ্রগ্রহণের সময়ে প্রচুর মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা,করোনারি, ইউরিনারি, হেমারেজের সমস্যা নিয়ে। কিন্তু, শারীরিক এই সমস্যাগুলি যে চন্দ্রগ্রহণের জন্যই হয়েছিল তা প্রমাণ সাপেক্ষ।
শতাব্দীর এই দীর্ঘতম চন্দ্রগ্রহণ ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশ থেকে দেখা যাবে। এছাড়াও দেখতে পারবেন এশিয়া, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ইউরোপের মানুষও।