শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৯:৫০

প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ২০ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন

হ্যান্ডসেটের ওপর শুল্ক কর সংস্কারের প্রস্তাব

দেশে উৎপাদিত মোবাইল হ্যান্ডসেটের ওপর শুল্ক কর সংস্কারের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এতে সারচার্জ বাদ দিয়ে শুল্কহার ১ ভাগ করার কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে হ্যান্ডসেটের ওপর ১০ ভাগ শুল্ককর ও ১ ভাগ সারচার্জ আদায় করা হচ্ছে। অন্যদিকে অগ্রিম আয়কর ৫ ভাগ বাদ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ খাত থেকে মোট আরোপিত শুল্ক ১৬ ভাগ থেকে কমিয়ে ১ ভাগ করার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইম্পোরটার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমপিআইএ) এর পক্ষ থেকে এসব প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এছাড়া নির্মিত মোবাইল আমদানির ক্ষেত্রে আরোপিত শুল্ক কর সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে মোট আরোপিত শুল্ক (টিটিআই) ৩০ দশমিক ১৯ ভাগ থেকে কমিয়ে ২২ দশমিক ১৯ ভাগ করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি এসব প্রস্তাব উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছেন বিএমপিআইএ’র সভাপতি রুহুল আলম আল মাহবুব। কর সংস্কার প্রস্তাবের যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশীয়ভাবে মোবাইল ফোন উৎপাদনে যে বিশাল বিনিয়োগ প্রয়োজন তা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া সম্ভব নয়। বিশেষ করে শুল্ক সুবিধা ১০ ভাগ থেকে কমিয়ে ১ ভাগ না করলে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং প্রতিটি মোবাইলফোনের মূল্য বেড়ে গ্রাহক কমে যাবে। তিনি বলেন, প্রতিটি বিনিয়োগকারী বিশাল বিনিয়োগ করে মোবাইল কারখানা স্থাপন করেছেন। তাই এ শিল্পের জন্য অন্তত আগামী পাঁচ বছরের জন্য একটি প্রণোদনামূলক শুল্ক কর ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। বিএমপিআইএর সভাপতি বলেন, ইতিমধ্যে ৭টি আন্তর্জাতিক ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান দেশে মোবাইল ফোন শিল্প-কারখানা স্থাপন করেছেন ও করতে যাচ্ছেন। এটি ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আরো একধাপ এগিয়ে যাওয়া। বর্তমান সরকারের প্রণোদনার কারণে দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারে এক নীরব বিপ্লব ঘটে গেছে। তিনি বলেন, মোবাইল ব্যবহারে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে নবম বৃহত্তম দেশ। এটা কম গৌরবের নয়। যার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে দিকনির্দেশনা পেয়েছে। নির্মিত মোবাইল আমদানির ক্ষেত্রে আরোপিত শুল্ক কর সংস্কারের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রচলিত শুল্ক করের হার ১০ ভাগ থেকে কমিয়ে ৫ ভাগ, অগ্রিম আয়কর ২ ভাগের পরিবর্তে ১ ভাগ করতে। সারচার্জ বাদ দিয়ে মূসক অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এসব প্রস্তাবের যুক্তি তুলে ধরে বলা হয়েছে, বাজার চাহিদা অনুযায়ী বর্তমানে যে পরিমাণ ফোন আমদানি হচ্ছে, তার ৩০ ভাগ স্মার্টফোন আমদানি হওয়ার কথা। কিন্তু অতিরিক্ত শুল্কের কারণে আমদানি হচ্ছে মাত্র ২৩ ভাগ। ২০১৬ হতে ২০১৭ সালে স্মার্টফোনের প্রবৃদ্ধি মাত্র ১ ভাগ। ফলে স্মার্ট ফোন বিক্রির কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না। বরং অবৈধ পথে মোবাইল ফোন আমদানি উৎসাহিত হচ্ছে। এতে আরো বলা হয়েছে, দেশে তৈরি মোবাইল দিয়ে মোবাইলের বিপুল চাহিদা সহসাই মেটানো সম্ভব নয়। এ কারণে অন্তত আগামী দুই বছরের জন্য ফোর-জি তথা ইন্টারনেটের বিস্তৃতি বাড়ানোর জন্য নির্মিত মোবাইল আমদানির ক্ষেত্রেও শুল্ক কর হার কমানো প্রয়োজন। এনবিআর চেয়ারম্যানকে দেয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকারের যুগান্তকারী ডিজিটাল বাংলাদেশ পরিকল্পনা আমাদের দেশের উন্নয়নে অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে। এটি অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত হয়েছি। এটিও বলার অপেক্ষা রাখে না যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারই জাতীয় উন্নয়নে প্রযুক্তির ভূমিকা সম্যক উপলব্ধি করেছেন এবং একে প্রণোদনা দিচ্ছেন। এরই অন্যতম প্রকাশ হচ্ছে ২০১৭ সালে দেশে মোবাইল ফোন শিল্প কারখানার নীতিমালা প্রকাশ ও অনুমতি প্রদান। চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে গতি আনার জন্য বর্তমান সরকার সমপ্রতি ফোরজি লাইসেন্স প্রদান করেছেন। কিন্তু বাজার গবেষণা বলছে উচ্চ শুল্কের কারণে গত বছর স্মার্টফোনের বাজার মাত্র ১ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে যা আগের বছরে বেড়েছিল ৩৩ ভাগ। এতে বরা হয়েছে, দেশে তৈরি এবং বিদেশ থেকে আনা উভয় মোবাইল ফোনের জন্যই আগামী কয়েক বছরের জন্য একটি বিশেষ শুল্ক ও কর ব্যবস্থা অবলম্বন করে, ডিজিটাল বংলাদেশ বাস্তবায়ন, সরকারের সামগ্রিক রাজস্ব অর্জন এবং সেই সঙ্গে দেশবাসীর কাছে উন্নয়নের সুফল পৌঁছানোর সহায়ক হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। চিঠিতে এনবিআর চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে, আমরা আপনাকে নিশ্চিত করতে চাই যে, উপরোক্ত শুল্ক হারে অবৈধ আমদানি হ্রাস পাবে এবং সদ্য আবির্ভূত মোবাইল মেনুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিজের বিকাশ ঘটবে। এতে বাংলাদেশের বাজারে স্মার্টফোনের প্রবৃদ্ধি বজায় থাকবে যা ডিজিটাল বাংলাদেশ এর লক্ষ্য অর্জন ত্বরান্বিত করবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি বছর দেশে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানি করা হবে ১২ হাজার কোটি টাকার। হ্যান্ডসেটের সংখ্যা হবে ৩ কোটির বেশি। প্রায় ৫৫টি হ্যান্ডসেট আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এক বছরের মধ্যে প্রায় ১৫শ’ মডেলের মোবাইল ফোন বাংলাদেশে নিয়ে আসবে।
43A Railway Pde Lakemba, NSW 2195
email: editor@amardesh24.com
Copyright © 2016. Allright Reserved amardesh24.com