প্রকাশিতঃ শনিবার, ২৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:৪৪:১৯ পূর্বাহ্ন
পর্যটকদের জন্য মঙ্গল আলোক নিয়ে প্রস্তুত শ্রীমঙ্গল
এই সপ্তাহে দীর্ঘ ছুটি পাচ্ছেন চাকরিজীবীরা। আর পরিবার নিয়ে সময় কাটাতে অনেকেই ছুটছেন দেশের পর্যটন স্থানগুলোতে। দেশের অন্যতম পর্যটন প্রসিদ্ধ স্থান চায়ের রাজধানী-খ্যাত শ্রীমঙ্গল। তাই প্রস্তুত পর্যটকদের বরণ করে নিতে।
চাকরিজীবী অনেকে বৃহস্পতিবার অফিস শেষে বিকেলে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। এরপর শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। ২৯ এপ্রিল বুদ্ধপূর্ণিমার সরকারি ছুটি। ৩০ এপ্রিল যদিও ছুটি নেই, কিন্তু অনেকে দিনটাকে ছুটির সঙ্গেই মিলিয়ে দিয়েছেন। কারণ, পরের দুদিন আবার টানা ছুটি। ১ মে মহান মে দিবসের সরকারি ছুটি। পরদিন ২ মে শবে বরাতের ছুটি। পরদিন বৃহস্পতিবার অনেকেই ছুটি নিয়ে নিয়েছেন। পরের দুদিন শুক্র ও শনিবার তো সাপ্তাহিক ছুটি রয়েছেই। এভাবে অনেকে ছুটিটাকে দীর্ঘ করে নয় দিন বানিয়েছেন।
ছুটি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকেই বেরিয়ে পড়েছেন। সবুজের স্বাদ নিতে প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকেরা ভিড় জমাতে শুরু করেছেন শ্রীমঙ্গলে। সেখানের চারদিকে সবুজের সমারোহে সজ্জিত সারি সারি চা-বাগানের নয়নাভিরাম দৃশ্য মুগ্ধ করে পর্যটকদের। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই), টি মিউজিয়াম, বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন, হাইল হাওর, মৎস্য অভয়াশ্রম বাইক্কা বিল, মিনি চিড়িয়াখানা, বার্ড পার্ক, নীলকণ্ঠ সাত রঙের চা কেবিন, চা–কন্যা ভাস্কর্য, বধ্যভূমি-৭১–সহ নানা স্পট ঘুরে দেখেন দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা।
এর পাশাপাশি রয়েছে লাল পাহাড়, শঙ্কর টিলা, গরম টিলা, ভাড়াউড়া লেক, ব্রিটিশদের সমাধিস্থল ডিনস্টন ওয়ার সিমেট্রি, হরিণছড়া গলফ মাঠ, নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী পল্লি, সুদৃশ্য জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ, হিন্দুদের তীর্থস্থান সুপ্রাচীন নির্মাই শিববাড়ি। চা-বাগানঘেরা পাহাড়ের উঁচু-নিচু টিলা ঘেঁষে কোথাও কোথাও দেখা যায় গারো, খাসিয়া, ত্রিপুরা, মণিপুরিসহ নানা জাতির বাস। চা-বাগান আর মণিপুরিপাড়ায় রয়েছে মণিপুরি হস্তশিল্পের বিশাল মেলা।
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা গেল, ফয়সাল মোহাম্মদ নামের পর্যটকের। চাকরিজীবী ফয়সাল মোহাম্মদ বলেন, ‘লম্বা ছুটি নির্ঝঞ্ঝাট ও নিরাপদে উপভোগ করতে শ্রীমঙ্গল ও সিলেট আমার খুব পছন্দের একটি জায়গা। এর আগেও এখানে আমি এসেছি। এবার এসেছি পরিবার নিয়ে। পরিকল্পনা রয়েছে এক সপ্তাহ এখানে থেকে শহুরে জীবনের ক্লান্তি ঘোচানো।’
শ্রীমঙ্গলে শ্যামলী বাস কাউন্টারের ব্যবস্থাপক আরিফুর রহমান জানান, অনেক পর্যটক শ্রীমঙ্গলে এসেছে। এই সপ্তাহের পুরো সময়টাতে আরও অনেক পর্যটক আসবেন বলে মনে করছেন তিনি।
শ্রীমঙ্গল ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক তাপস দাশ বলেন, পর্যটকদের সেবা দিতে শ্রীমঙ্গল ট্যুর গাইড কাজ করে। পর্যটকদের দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখানোর জন্য ট্যুর গাইডরা ইতিমধ্যে বুকড হয়ে আছেন।
শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সদস্য ও গ্রিনলিফ রেস্ট হাউস অ্যান্ড ইকো ট্যুরিজমের স্বত্বাধিকারী এস কে দাশ সুমন বলেন, শ্রীমঙ্গলের হোটেলগুলোর ৮০ শতাংশ কক্ষ এর মধ্যে ভাড়া হয়ে গেছে। পর্যটকদের জন্য তাদের হোটেলসহ বিভিন্ন হোটেল, রেস্টহাউস বিশেষ ছাড় দিচ্ছে বলেও তিনি জানান।
শ্রীমঙ্গল ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মইনউদ্দিন বলেন, বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ট্যুরিস্ট পুলিশের টহল রয়েছে। পর্যটকেরা যাতে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে ছুটির আনন্দ উপভোগ করে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন, সেভাবে প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ।