বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০৯:০৪

প্রকাশিতঃ শুক্রবার, ১৭ মে ২০১৯ ০২:০৬:১৪ অপরাহ্ন

ইরানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানো উচিত যুক্তরাষ্ট্রের: সৌদি পত্রিকা

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই বৃহস্পতিবার আরব নিউজের সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, শাস্তি থেকে রেহাই পেতে পারে না ইরান। এছাড়া ইরানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিও আহ্বান জানানো হয়েছে। সৌদির রাজধানী রিয়াদ থেকে প্রকাশিত পত্রিকাটি জানায়, মঙ্গলবার দুটি তেল পাম্পে সশস্ত্র ড্রোন হামলা ও তার দুদিন আগে আরব আমিরাত উপকূলে তেল ট্যাংকারে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্য দিয়ে ইরান ও দেশটির ছায়াবাহিনী মারাত্মক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এ ব্যাপারে একটি আন্তর্জাতিক তদন্ত হওয়া উচিত। আরব নিউজ বলছে, কেবল সৌদি আরবেই না, পুরো অঞ্চল কিংবা বিশ্বের জন্য ইরানের হুমকির বিষয়ে বিশ্ব নেতাদের বারবার সতর্ক করে আসছে রিয়াদ। ২০১৬ সালের শেষের দিকে মার্কিন নৌবাহিনীতে তিনবারের হামলার আগে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের হুমকির বিষয়ে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বুঝতে পারেননি। ‌‘বিশ্ব অর্থনীতিকে পর্যুদস্ত করে দিতেই সাম্প্রতিক তেল ট্যাংকার ও পাম্পিং স্টেশনে হামলা চালানো হয়েছে। এজন্যই বিশ্ব অর্থনীতির প্রাণশক্তি তেলসরবরাহে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।’ সৌদি পত্রিকাটি বলছে, বিশ্ব অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করে দিতে কিংবা নতুন করে যাতে ভীতিপ্রদর্শন করতে না পারে, সেজন্য ইরানকে ছাড় দেয়া যাবে না। এর আগে ২০০৮ সালে প্রয়াত সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ ‘সাপের মাথা কেটে ফেলতে’ যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করেছিলেন। মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের নানা তৎপরতার কথা উল্লেখ করে তিনি এ দাবি করেন। এর এক দশক পর সৌদি সিংহাসনের উত্তরসূরি মোহাম্মদ বিন সালমান ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেইকে মধ্যপ্রাচ্যের নতুন হিটলার হিসেবে আখ্যায়িত করেন। সৌদি পত্রিকাটি আরও জানায়, আমরা বর্তমানে ২০১৯ সালে রয়েছি। কিন্তু অত্র অঞ্চলে তার ধ্বংসাত্মক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। কখনো সেটা সরাসরি নিজেই আবার কখনো-বা তার সশস্ত্র ছায়া বাহিনীর মাধ্যমে এ ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ইরান। ‘কাজেই সৌদি যুবরাজ এক্ষেত্রে সঠিক কথাই বলেছেন যে প্রশমিতকরণ শব্দটি ইরানের ক্ষেত্রে খাটবে না, যেভাবে হিটলারের বেলায়ও তা কাজে লাগেনি।’ রিয়াদ থেকে প্রকাশিত পত্রিকাটির সম্পাদকীয় বলছে, আরব নিউজের দৃষ্টিতে সেক্ষেত্রে যৌক্তিক পদক্ষেপ হতে পারে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র নজির স্থাপন করছে এবং সেটা কার্যকরও হয়েছে। যেমন, যখন বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট আসাদ সাইরেন গ্যাস ব্যবহার করছিলেন, তখন সিরিয়ায় আক্রমণ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ‘আমাদের যুক্তি হচ্ছে, নিষেধাজ্ঞা ইরানকে সঠিক বার্তা দিচ্ছে না। তাদের কঠোর আঘাত হানা উচিত। তাদের দেখানো উচিত এখনকার পরিস্থিতি একেবারে ভিন্ন। আমরা সুনির্দিষ্ট শান্তিমূলক প্রতিক্রিয়া চাচ্ছি, যাতে ইরান বুঝতে পারে যে তাদের প্রতিটি পদক্ষেপের পরিণাম ভোগ করতে হবে।’ আরব নিউজ জানায়, কাজেই এখন সময় এসেছে, কেবল ইরানের পরমাণু কর্মসূচির লাগাম টানাই নয়, বিশ্বের স্বার্থে তারা মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ককে সহায়তা না করে, তা নিশ্চিত করা। এদিকে সৌদি তেল পাম্পে হামলা চালাতে হুতি বিদ্রোহীদের ইরান নির্দেশ দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সৌদি আরবের প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন সালমান। ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীরা। বৃহস্পতিবার এক টুইটবার্তায় তিনি বলেন, সম্প্রসারণবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে হুতিদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে ইরান। বাদশাহ সালমানপুত্র আরও বলেন, ইরানের নির্দেশে হুতি বিদ্রোহীরা এই সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। মঙ্গলবার সৌদি আরবের দুটি তেলপাম্পে হামলা চালানোর দাবি করেছে তারা। যদিও সৌদির দাবি, এতে তাদের তেল উত্তোলন ও রফতানি বাধাগ্রস্ত হয়নি। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবায়ের বলেন, ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে হুতি বিদ্রোহীরা। বিপ্লবী গার্ডের নির্দেশই মেনে চলে তারা। কাজেই সৌদি স্থাপনায় হামলা চালাতে ইরান নির্দেশ দিয়েছে, তা প্রমাণের জন্য এটাই যথেষ্ট।
43A Railway Pde Lakemba, NSW 2195
email: editor@amardesh24.com
Copyright © 2016. Allright Reserved amardesh24.com