প্রকাশিতঃ সোমবার, ১৯ অক্টোবর ২০২০ ০২:৪৭:৩৬ অপরাহ্ন
করোনার মহামারির মধ্যে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে প্রতিটি পূজামণ্ডপ এক একটি কন্টেইনমেন্ট জোন বা নো এন্ট্রি জোন। সেখানে প্রবেশ করতে পারবেন না কোনোই দর্শনার্থী। আদালত জানিয়ে দিয়েছেন, ছোট মণ্ডপ হলে তার ৫ মিটার এবং বড় মণ্ডপ হলে তার ১০ মিটারের মধ্যে কোনো দর্শনার্থী প্রবেশ করতে পারবেন না। মণ্ডপের চারদিকে ফিতা মেপে ওই সীমানা তৈরি করতে হবে। দর্শকশূন্য রেখে পূজা পরিচালনার ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করবে পুলিশ প্রশাসন। প্রতিটি মণ্ডপের বাইরে ঝুলিয়ে রাখতে হবে নো এন্ট্রি লেখা বোর্ড। অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া সহ ভারতীয় মিডিয়ায় এসব খবর প্রকাশিত হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের সব পূজার জন্য এই নির্দেশ কার্যকর বলে সোমবার রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিশ্বের অন্য সব দেশের সঙ্গে করোনার ভয়াবহতা দেখা দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। পূজার সময় মণ্ডপে মণ্ডপে নামে মানুষের ঢল। এর ফলে পশ্চিমবঙ্গে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে দাবি করে সম্প্রতি চিকিৎসকরা রাজ্য সরকার বরাবরে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু তাতে টনক নড়েনি রাজ্য সরকারের। পরে করোনার মধ্যে পূজোর সবচেয়ে বড় আয়োজন দুর্গোৎসব বন্ধ রাখার দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থে মামলা করা হয়। সেই মামলার রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট সোমবার। এদিন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে চান, লাখ লাখ মানুষের ভিড় কয়েক হাজার পুলিশ দিয়ে কীভাবে সামলানো যাবে? রাজ্য সরকরের তরফে বলা হয়- পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হবে। বিচারপতি পাল্টা জানতে চান, রাজ্যে ৩৪ হাজার পূজা হচ্ছে। এর মধ্যে শুধু কলকাতায় তিন হাজার পূজামণ্ডপ আছে। কিন্তু রাজ্যে আছে ৩০ হাজার পুলিশ। খুব বেশি হলে তা ৩২ হাজার হতে পারে। এই পুলিশ পূজার ভিড় সামলানোর জন্য যথেষ্ট নয়। তাই প্রতিটি পূজামণ্ডপ কন্টেইনমেন্ট জোন বা নো এন্ট্রি জোন করতে হবে। কোনো দর্শনার্থী মণ্ডপে প্রবেশ করতে পারবেন না। পাশাপাশি রায়ে বলা হয়, পূজা কমিটিগুলো পূজার আয়োজনে মণ্ডপে একসঙ্গে ২০ জনের বেশি প্রবেশ করতে দিতে পারবেন না। পূজার উদ্যোক্তা যারা প্রবেশ করবেন তাদের নামের তালিকাও মণ্ডপের সামনে টাঙিয়ে দিতে হবে।
সাধারণ দর্শক ভার্চুয়াল প্রতিমা দর্শন করবেন। আদালতের রায় অনুযায়ী কাজ হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে রাজ্য পুলিশের উচ্চ কর্মকর্তাদের কাছে লক্ষ্মীপূজার পর আদালতে রিপোর্ট জমার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।