মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০২:১৩

প্রকাশিতঃ বুধবার, ০৭ এপ্রিল ২০২১ ১০:৪৪:৪৬ অপরাহ্ন

সম্পর্ক গভীর করার চেষ্টা, পাকিস্তানের সফরে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী

চীনের সাথে মিলে দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নে নেতৃত্ব দিচ্ছে পাকিস্তান। এবার তাদের সাথে সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করছে রাশিয়া। সে উদ্দেশ্যে গত মঙ্গলবার পাকিস্তান সফরে গিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।

আজ বুধবার পাকিস্তানের বেসামরিক এবং সামরিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন ল্যাভরভ। বৈঠকে বাণিজ্য, অর্থনীতি এবং সন্ত্রাস বিরোধী সহযোগিতার ওপর জোর দেয়া হয়। এর সঙ্গে আফগানিস্তানসহ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিভিন্ন ইস্যু আলোচনায় উঠে আসে। শীতল যুদ্ধের সময় বিপরীত অবস্থানে থাকা দুই দেশ অতীতকে কবর দিয়ে সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের যে চেষ্টা করছে তার ফল হিসেবে এই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। কৌশলগত বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে উভয় পক্ষ এমন অবস্থানে এসে পৌঁছেছে। 

২০১২ সালের পর এই প্রথম পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ সফর করছেন ল্যাভরভ। এর মধ্য দিয়ে সম্পর্ক ঊর্ধ্বমুখী হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লি থেকে সরাসরি ফ্লাই করে পাকিস্তান যাওয়ার পথ বেছে নিয়েছেন। এ থেকে বোঝা যায় যে, রাশিয়া এখন এ অঞ্চলে শুধু ভারতকেই মিত্র হিসেবে দেখে এমন নয়। নয়া দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সের্গেই ল্যাভরভ। পরে তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, উভয় দেশ ভারতে বাড়তি সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে। তবে ভারতে কি ধরণের সরঞ্জাম উৎপাদন করতে চায় রাশিয়া সে বিষয়ে তিনি সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি।

ভারতে অস্ত্র বিক্রিতে রাশিয়াকে টপকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল অস্ত্র বিক্রি করতে থাকে। এর আগে ভারতে সবচেয়ে বেশি অস্ত্রের সরবরাহকারী ছিল রাশিয়া। রাশিয়ার সঙ্গে যেকোনো অস্ত্র বিক্রির চুক্তি থেকে ভারতকে দূরে সরিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। এক্ষেত্রে ভারতকে বার বার সতর্ক করেছে ওয়াশিংটন। তাদেরকে সতর্ক করেছে এই বলে যে, যদি ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনে তাহলে ভারতের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে এই নৈকট্যের বিষয়টি মাথায় রেখে রাশিয়াও তার সুযোগ বিস্তারের কৌশল নিয়েছে। তারা এখন পাকিস্তানের দিকেও মুখ ঘুরিয়েছে, যা নয়া দিল্লির উদ্বেগে বিঘ্নিত হয়নি।

২০১৬ সালে ভারতের কড়া আপত্তির পরেও রাশিয়া ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানে সন্ত্রাসবিরোধী মহড়ায় সেনা পাঠিয়েছিল। রাশিয়াকে এক্ষেত্রে কতটা গুরুত্ব দেয় পাকিস্তান তা বোঝাতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি রাওয়ালপিন্ডিতে নূর খান এয়ারবেজে গিয়েছিলেন। সেখানে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছেন দুই নেতা। তারপর বুধবার তাদের মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গেও সাক্ষাত করেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ল্যাভরভের এই সফরকে আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, বিশেষ করে আফগানিস্তান পরিস্থিতিতে। ল্যাভরভের সফরের আগে মস্কোকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতির একজন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বলে বর্ণনা করেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, বৈশ্বিক সম্প্রদায় যেসব সমস্যার মোকাবিলা করছে তার প্রেক্ষাপটে উভয় দেশের অবস্থান এক- এমন অবস্থার প্রেক্ষিতে তাদের মধ্য সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।

 

সূত্র: এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। 

 

43A Railway Pde Lakemba, NSW 2195
email: editor@amardesh24.com
Copyright © 2016. Allright Reserved amardesh24.com