রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪৭

প্রকাশিতঃ রোববার, ২৮ অক্টোবর ২০১৮ ১২:০০:২১ অপরাহ্ন

পুলিশ; কিন্তু মা তো...

চেয়ারে বসে খাতার ওপর কিছু একটা লিখছেন একজন নারী। পরনে পুলিশের পোশাক। তার ঠিক সামনেই রয়েছে উঁচু একটা টেবিল। আর সেই টেবিলের মধ্যেই শোয়ানো রয়েছে একটি শিশু। যেখানে বাচ্চাটিকে শোয়ানো রয়েছে টেবিলের সেই অংশটা সামনের দিক থেকে আটকানো। ফলে সামনে থেকে কারও বোঝাই সম্ভব নয় যে ওখানে একটি শিশু রয়েছে। এই হলো পুলিশ মায়ের গল্প। এমনই একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ছবিটিকে ঘিরে প্রশংসা উপচে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। না, ফোটোগ্রাফির জন্য নয় কিন্তু, ছবির মধ্যে যে বাস্তবটা ধরা পড়েছে সেটাই বহুল আলোচিত হচ্ছে। ছবির উর্দি পরা ওই নারী আসলে ভারতের উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসির কোতয়ালি থানার এক কনস্টেবল। নাম অর্চনা জয়ন্ত। নেট দুনিয়া তাকে এখন 'মাদার কপ' নামেই চেনে। এই পুলিশ মা এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন। অর্চনা আগরার বাসিন্দা। কর্মসূত্রে তিনি এখন ঝাঁসিতে। স্বামী ও পরিবার রয়েছে আগরাতেই। ৬ মাস বয়সী কন্যার নাম অনিকা। তাকে নিয়েই ঝাঁসিতে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন। পরিবার-পরিজন কাছে না থাকায় সন্তানকে দেখভালের বিষয়টি পুরোপুরি তার উপরই। শুধু সন্তানকে দেখাশোনাতেই সময় কাটালে তো হবে না! চাকরিও তো আছে। সেটাও আবার পুলিশের মতো টাইট সিডিউলের চাকরি। বাচ্চা এবং চাকরি দুটিকেই সামলানো অর্চনার কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কথায় আছে, যিনি রাঁধেন, তিনি চুলও বাঁধেন। অর্চনার ক্ষেত্রেও বিষয়টা সে রকমই। তিনি এক দিকে থানার কাজও সামলান, আবার সমান তালে মাতৃত্বের দিকটাও খেয়াল রাখেন। এই দুটো কর্তব্যের কোনওটাতেই যাতে এক চুলও খামতি না হয় সেটাও খেয়াল রাখেন একই সঙ্গে। কিন্তু কীভাবে সামলান তিনি দুটি কঠিন কাজ? এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাতকারে অর্চনা বলেছেন, 'সমস্যা তো হয়ই। কিন্তু আমার কাছে দুটিই সমান গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণেই কাজ করার সঙ্গে সঙ্গে মেয়ের দেখাশোনাও করি। তাই যখন কাজে আসি, মেয়েকেও সঙ্গে করে নিয়ে আসি। যাতে অনিকার দেখভাল এবং থানার কাজকর্ম একই সঙ্গে সামলানো যায়। ' থানার ভেতরে না হয় সামলানো গেল; কিন্ত যখন আউটডোরে যেতে হয় তখন? অর্চনা বলেন, 'অনেক সময় ইমারজেন্সিতে ডাকা হয়। তখন উপায় থাকে না। অনিকাকে সঙ্গে নিয়েই থানায় চলে আসি। ওখানেই ওকে ঘুম পাড়ানো, খাওয়ানো সব কিছুই করাতে হয়। সহকর্মীরা ওর অনেক খেয়াল রাখে। ' অর্চনার এই দুই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা দেখে সবাই এখন ধন্য ধন্য করছে। অর্চনা জানান, তিনি ট্রান্সফারের জন্য আবেদন করেছেন। আগরাতে ট্রান্সফার চেয়ে আবেদন করেছেন। ওখানে গেলে অনিকাকে তার পরিবার দেখাশোনা করতে পারবে। আর তার পক্ষেও ভাল ভাবে কাজ করা সম্ভব হবে। এদিকে অর্চনার দুই কাজ সামলানোর দৃশ্য দেখে তাকে পুলিশ বিভাগ পুরস্কৃত করতে যাচ্ছে।
43A Railway Pde Lakemba, NSW 2195
email: editor@amardesh24.com
Copyright © 2016. Allright Reserved amardesh24.com