সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৪

প্রকাশিতঃ সোমবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৪০:১৭ পূর্বাহ্ন

হার্টের আকার বৃদ্ধি পেলে

হার্ট বড় হওয়ার অনেক কারণ আছে, তন্মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলো হলো অনিয়ন্ত্রিত উচ্চরক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার, জন্মগত হৃদরোগ, হার্টের ভাল্বের সমস্যা, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, বাত ব্যথা থেকে হৃদরোগ, বাতজ্বর, হার্ট ব্লক, মাদক সেবন, কেমোথেরাপি, রেডিও থেরাপি ইত্যাদি। তবে কারণ যাই হোক না কেন, হার্ট যখন বড় হয়ে যায় তখন রোগীর লক্ষণগুলো একই ধরনের হয়ে থাকে প্রত্যেক ব্যক্তির হৃৎপিণ্ড বা হার্ট একটি নির্দিষ্ট মাপের হয়ে থাকে। সাধারণভাবে ওই ব্যক্তির মুষ্টিবদ্ধ হাতের আকারের কাছাকাছি পরিমাণ মতো হয়ে থাকে। হার্ট মানুষের মুষ্টির মতোই একটি মাংসপিণ্ডের থলে যার মধ্যে রক্ত ভর্তি থাকে এবং মাংসপেশি সংকোচন করে মানে থলের মধ্যে থাকা রক্তে চাপ প্রয়োগ করে রক্তকে হার্টের সঙ্গে সংযুক্ত বড় রক্তনালিতে প্রেরণ করে থাকে, যার জন্য হার্টকে একটি মেকানিক্যাল পাম্প বলা হয়ে থাকে। প্রতি মিনিটে ৭২ বার হার্ট সংকোচন করে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ রক্ত রক্তনালিতে প্রেরণ করে সারা শরীরে রক্ত প্রবাহ নিশ্চিত করে থাকে। সারা শরীরে রক্ত প্রবাহ নিশ্চিত করতে হার্টকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে কাজ করতে অথবা শক্তি খরচ করতে হয়। তবে যদি কোনো কারণে হার্টকে অধিক শক্তি প্রয়োগ করতে হয় বা অধিক পরিমাণে কর্মসম্পাদন করতে হয় এবং সেটা যদি দীর্ঘ সময় ধরে অব্যাহত রাখতে হয়, তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে গিয়ে হার্টের কলেবর বৃদ্ধি ঘটে, হার্টে মাংসপেশির পরিমাণ বৃদ্ধি ঘটে থাকে। শুরুর দিকে শুধুমাত্র হার্টের দেয়াল মোটা হতে থাকে এবং ভিতরে ফাঁপা অংশের আকার ছোট হতে থাকে। এই অবস্থা মানে হার্টের অধিক কর্মতৎপরতা যদি আরও বেশি সময় ধরে বজায় রাখতে হয়, তবে প্রাকৃতিক নিয়মেই হার্টের ভিতরে ফাঁপা অংশ বড় হয়ে থাকে। এতে হার্টের বাহ্যিক আকারও বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। কখনো কখনো বুকের খাঁচার অর্ধেক জায়গা হার্ট দখল করে নিয়ে থাকে ফলে খাঁচার ভিতর থাকা ফুসফুস ও অন্যান্য অঙ্গ সংকুচিত হয়ে পড়ে। হার্টের আকার বৃদ্ধির ফলে, মানে মাংসপেশির পরিমাণ বৃদ্ধির ফলে অধিক পরিমাণে অক্সিজেন ও রসদের প্রয়োজন ঘটে থাকে। যেহেতু সরবরাহের পথ বা রক্তনালি আগের আকারই থেকে যায় ফলশ্রুতিতে, হার্ট অক্সিজেনের ও রসদের ঘাটতিতে ভুগতে থাকে। রসদ ও অক্সিজেনের ঘাটতির ফলে হার্ট দুর্বল হয়ে পড়ে, কর্মক্ষমতা কমে যায়, ব্যক্তির বুকে ব্যথা অনুভূত হয় বিশেষ করে পরিশ্রমকালীন, পরিশ্রমকালীন মাথা হালকা অনুভূত হতে পারে, বুক ধড়ফড় করতে পারে, শ্বাসপ্রশ্বাস ঘন হয়ে যেতে পারে। এ অবস্থা বেশি দিন চলতে থাকলে রোগীর হার্টে অনেক ধরনের জটিলতা দেখা দিয়ে থাকে এবং হার্ট ধীরে ধীরে আরও দুর্বল হতে থাকে। দীর্ঘসময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর যখন হার্টের আয়তন আরও বেশি বৃদ্ধি পায়, হার্ট তখন অত্যধিক দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলশ্রুতিতে রোগীর হার্ট ফেইলুর সৃষ্টি হয়ে থাকে। এতে পূর্ব আলোচিত উপসর্গের সঙ্গে আরও বেশকিছু উপসর্গ যোগ হয় যেমন রাতে শ্বাসকষ্ট হওয়া বা শুকনো কাশীর উদ্বেগ হওয়া বিশেষ করে ভরা পেটে বিছানায় শুতে যাওয়ার সময়, পেট ফেঁপে যায়, পেটের আকার বড় হয়ে যায়, পেটে অত্যধিক গ্যাস উৎপন্ন হয় ইত্যাদি। তাই এসব বিষয়ে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। ডা. এম শমশের আলী (কার্ডিওলজিস্ট) সিনিয়র কনসালটেন্ট (প্রা.), ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।
43A Railway Pde Lakemba, NSW 2195
email: editor@amardesh24.com
Copyright © 2016. Allright Reserved amardesh24.com