প্রকাশিতঃ মঙ্গলবার, ১৩ মার্চ ২০১৮ ০৯:২৯:৩২ অপরাহ্ন
কিডনি বিকল হয়ে দেশে প্রতি বছর মারা যাচ্ছে অন্তত ২০ হাজার নারী। অবহেলা, অসচেতনতা, রোগ লুকিয়ে রাখার প্রবণতাসহ নানা কারণে চিকিৎসার বাইরে থেকে যাচ্ছে কিডনি রোগে আক্রান্ত অধিকাংশ নারীরা। সমস্যা সমাধানে আক্রান্ত নারীদের আর্থিক সহযোগিতার পাশাপাশি বিশেষ চিকিৎসা সেবার আওতায় আনার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
কিডনি রোগে আক্রান্ত আমিনা বেগমকে সপ্তাহে ২ বার ছুটে আসতে হয় রাজধানীতে। কিডনি সচল রাখতে বিক্রি করতে হয়েছে জমি, বন্ধ হয়েছে সন্তানের পড়াশোনা। স্বজনদের টাকায় গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে মাঝে মাঝে ডায়ালাইসিস চললেও জীবন নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন এই মধ্যবয়সী।
আমেনা বেগম গণমাধ্যমকে জানান, চিকিৎসার জন্য ছেলের লেখাপড়া বন্ধ করে কাজে লাগিয়ে দিয়েছি। সংসার চালাবে, না আমরা চিকিৎসা ব্যয় বহন করবে। আমাদেরকে একটু সাহায্য করতে হবে। তা না হলেই বিনা চিকিৎসায় মারা যাবো।
লুপাস নেফ্রাইটিস, মূত্রতন্ত্রের প্রদাহ, গর্ভকালীন কিডনি সমস্যা, কিডনি রোগ নিয়ে গর্ভধারণ করার ঝুঁকি কেবল নারীদেরই পোহাতে হয়। এছাড়াও অবহেলার শিকার, জড়তা, লোকলজ্জাসহ নানা কারণে কিডনি চিকিৎসা সেবা নেয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে নারীরা।
অন্য আরেকজন জানান, সরকারের থেকে নারীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হলে খুবই ভাল হবে। কিডনি ডায়ালাইসিস করে এমন ব্যক্তি জানান, এলাকায় যদি এইরকম একটা প্রতিষ্ঠান থাকতো, তাহলে আমাদের কষ্ট করে ঢাকা আসতে হতো না।
দেশে কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত ২ কোটির অর্ধেকই নারী। ২০১৭ সালে জাতীয় কিডনি হাসপাতালে ৭০ হাজার পুরুষ চিকিৎসা নিলেও নারীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৪২ হাজার। এছাড়াও দেশে অসংখ্য নারী স্বামীকে কিডনি দান করলেও স্ত্রীকে স্বামীর কিডনি দেবার ঘটনা ঘটেছে মাত্র ১টি।
কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আবদুস সামাদ গণমাধ্যমকে বলেন, জুনিয়র ডাক্তার যারা আছেন, তাদের প্রশিক্ষণ দিলেই পেটের ভিতর একটা নল দিলেই অনেকেই বাড়িতে বসে ডায়ালাইসিস করতে পারবে।
জেলা হাসপাতালগুলোতে কিডনি রোগের চিকিৎসার সুযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চলে আক্রান্ত নারীদের টেলিমেডিসিনের আওতায় আনার কথা ভাবছে সরকার। জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলাম বলেন, ১৮ জেলা এরইমধ্যে ডায়ালাইসিস মেশিন চলে গেছে। বাকী জেলাগুলোতে পর্যায়ক্রমে সম্প্রসারণ করা হবে।
দেশে ২ কোটি আক্রান্তের জন্য রয়েছে মাত্র ১৩০ জন কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।