বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০১

প্রকাশিতঃ সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:২১:৫৪ অপরাহ্ন

কিশোরীকে দলবেঁধে ধর্ষনের মামলায় ফাঁসির ৫ আসামি আপিলের রায়ে খালাস

দেড় যুগ আগে এক কিশোরীকে দলবেঁধে ধর্ষণের দায়ে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত পাঁচ আসামি হাই কোর্টের রায়ে খালাস পেয়েছেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, রাষ্ট্রপক্ষ দণ্ডিতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে না পারায় উচ্চ আদালত খালাসের এই রায় দিয়েছেন।

এ মামলার ডেথ রেফারেন্স (মৃতুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের আবেদন) ও আসামিদের আপিল ও জেল আপিলের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার রায় দেয়।

 

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোজাম্মেল হক রানা সিদ্দিকী। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এ কে এম ফজলুল হক খান ফরিদ,এ এম মাহবুব উদ্দিন, বজলুল কবির, আফিল উদ্দিন, সাকিব মাহবুব, সাইফুর রহমান রাহি ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী এস এম শফিকুল ইসলাম।

ফজলুল হক ফরিদ বলেন, “মামলার বাদী যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, তার আলামত পাওয়া যায়নি বলে মেডিকেল রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

“তাছাড়া মামলার বাদী যে জবানবন্দি দিয়েছেন, তার সাথে মামলার বিবরণ, সাক্ষীদের বক্তব্যের মধ্যে অসামঞ্জস্য ছিল। ফলে ধর্ষণের অভিযোগটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হয় না।”

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনাকারী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোজাম্মেল হক অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থতার জন্য সাক্ষীদের আচরণকে দায়ী করেন।

তিনি বলেন, “মোট ১২ জন সাক্ষীর মধ্যে দুই প্রধান সাক্ষী আদালতে গিয়ে সাক্ষ্য দেয়নি। আর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন সাক্ষী আসামিদের পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়ায় তাদের বৈরী ঘোষণা করা হয়।

“তাছাড়া মেডিকেল রিপোর্টে ধর্ষণের আলামতের প্রমাণ পাওয়ার কথা বলা হয়নি। যে কারণে মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হয়নি।”

এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে নোট পাঠাব। তিনি সিদ্ধান্ত দিলে আপিল করা হবে।”

ঘটনার ১৩ বছর পর ২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এই মামলার ছয় আসামির মধ্যে পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল নেত্রকোনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।

ওই রায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি ২৫ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, নেত্রকোনা সদর থানার বাহাদুরপুর গ্রামের ওই কিশোরী ২০০২ সালের ২০ জুলাই মার সঙ্গে পূর্বধলা উপজেলার সাতপাটি আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার পথে রাতে কুমারখালী এলাকার হোগলা পাকা রাস্তার ব্রিজের উপর পৌঁছালে পাঁচ আসামি ছুরি ও ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে রিকশার গতিরোধ করে ওই কিশোরীকে ধরে জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। পরে পাশের একটি ভবনে নিয়ে পুনরায় ধর্ষণ করা হয়।

এদিকে খবর পেয়ে পুলিশ উপস্থিত হলে আসামিরা ওই কিশোরীকে নিয়ে বিলের পানিতে নেমে গিয়েছিল বলে মামলায় বলা হয়েছে। পরে ওই কিশোরীকে ফেলে পালিয়ে যায়।

ঘটনার পরদিন ওই কিশোরী নিজেই পূর্বধলা থানায় মামলা করেন। তখন তার বয়স ছিল ১৫ বছর। 

ঘটনার চার মাসের মাথায় তদন্ত শেষ করে ওই বছরের ৮ নভেম্বর অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। তার ১০ বছর পর ২০১২ সালের ৯ অক্টোবর আদালতে ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়। তারও তিন বছর পর ২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং একজনকে খালাস দিয়ে বিচারিক আদালতের রায় হয়। 

 

43A Railway Pde Lakemba, NSW 2195
email: editor@amardesh24.com
Copyright © 2016. Allright Reserved amardesh24.com