প্রকাশিতঃ শনিবার, ২৪ মার্চ ২০১৮ ১২:০১:৫৬ অপরাহ্ন
প্রাথমিক স্কুলের দপ্তরী নিয়োগে সাংসদের প্রভাব ও ঘুষ লেনদেন
রাজশাহীর তানোরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী নিয়োগে ঘুষ লেনদেন ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ পরীক্ষার পর তিন মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। এতে করে পরীক্ষায় অংশ নেয়া প্রার্থীদের মাঝ থেকে কাটছেনা ধোয়াশা। কখন কিভাবে হবে ফলাফল ঘোষণা এমন অনিশ্চয়তায় দিন পার করছেন ১২২ জন পরীক্ষার্থী। সেই সাথে এত দিনেও ফলাফল ঘোষণা না হবার কারণে প্রার্থীসহ জনসাধারনের মাঝে সাংসদসহ তার অনুসারিদের বিরুদ্ধে বিরাজ করছে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ। অভিযোগ রয়েছে, সাংসদ প্রভাব খাটানোর কারণেই পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণায় বিলম্ব ঘটছে। এই নিয়োগে বড় অংকের ঘুষ লেনদেন হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, গত বছর প্রায় সারা বছর ধরেই তানোরে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী নিয়োগের ব্যাপারে চলে নানা কার্যক্রম। কিন্তু কোন ভাবেই ক্ষমতাসীন দলের নেতা বা তাদের চাচা-ভাতিজারা কোন ভাবেই নিয়োগ পরীক্ষার দিনক্ষণ ঠিক করতে পারছিলেন না। অবশেষে গত বছরের ডিসেম্বর মাসের ৮/৯ তারিখে নেয়া হয় মৌখিক পরীক্ষা। পরীক্ষা নেবার পর প্রায় সাড়ে তিন মাস অতিবাহিত হলেও রহস্যজনক কারণে দেয়া হচ্ছেনা ফলাফল। যদিও পরীক্ষা নেবার এক মাসের মধ্যে ফলাফল ঘোষণার নিয়ম থাকলেও রাজনীতির গ্যাড়াকল আর ঘুষ লেনদেন এবং পদ ভাগাভাগির কারণে আটকে আছে ফলাফল ঘোষণা। একাধিক পরীক্ষার্থী জানান, শুধুমাত্র নেতাদের চাহিদা পুরুন না হবার কারণে হচ্ছেনা ফলাফল ঘোষণা। একেক নেতার একেক প্রার্থী থাকা এবং এক স্কুলের জন্য একাধিক ব্যাক্তির নিকট থেকে টাকা আদায় করার কারণে কাকে রেখে কাকে দিবে চাকুরী- এমন সমস্যার কারণে হচ্ছেনা ফলাফল ঘোষণা। একেক জনের কাছে থেকে ১২ লাখ থেকে ১৪ লাখ টাকাও আদায় করা হয়েছে বলেও জানান একাধিক প্রার্থী।
জানা গেছে, নিয়োগ বোর্ডে ছিলেন সাংসদের প্রতিনিধি হিসেবে একে সরকার ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান মিয়াঁ, উপজেলা চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি ছিলেন একই কলেজের প্রভাষক আব্দুল খালেক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার। নিয়োগ বোর্ডে থাকা একব্যাক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নামমাত্র নিয়োগ বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। এসব নিয়োগ ক্ষমতাসীনদের বিবেচনায় হয়। তাঁরা যাকে নিয়োগ দিবেন তিনিই নিয়োগ পাবেন। হয়তোবা একাধিক প্রার্থী থাকার কারণে হচ্ছেনা ফলাফল ঘোষণা। তবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শামিম আহম্মেদ খান জানান, চলতি মাসের যে কোন দিন ফলাফল ঘোষণা করা হতে পারে। এতদিন কি কারণে ফলাফল ঘোষণা হলো না জানতে চাইলে তিনি জানান, একসাথে অনেক নিয়োগ। তাই একটু দেরি হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। এছাড়া আর কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।