শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ রমজান, ১৪৪৫ | ০৭:৪০ পূর্বাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


বুধবার, ১৫ মে ২০১৯ ০৫:০২:২৪ অপরাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

লিবিয়ায় দুই ক্যাম্পে জিম্মি ছিলেন বাংলাদেশিরা

ইতালি যাওয়ার পথে তিউনিসিয়ায় যেসব বাংলাদেশি নিহত বা জীবিত উদ্ধার হয়েছেন তারা লিবিয়ায় দুটি ক্যাম্পে জিম্মি ছিলেন। জিম্মি করে তাদের কাছ থেকে পুনরায় অর্থ আদায় করা হয়। তারপর ইতালির উদ্দেশে নৌকায় পাঠানো হয়। নৌকাডুবিতে প্রাণ হারান প্রায় ৪০ জন বাংলাদেশি। লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ভূমধ্যসাগর উপকূলে উদ্ধার করা ১৪ জন বাংলাদেশির সঙ্গে ত্রিপোলি দূতাবাসের কর্মকর্তারা আলাপ করে জানতে পেরেছেন, তারা ইউরোপের উদ্দেশে যাওয়ার জন্য অনেক অর্থ ব্যয় করে দুবাই-শারজাহ-ইস্তাম্বুল-আলেকজান্দ্রিয়া-আম্মান প্রভৃতি স্থান হয়ে লিবিয়ায় আসেন। অনেকেই ৪-৬ মাস লিবিয়ায় অবস্থান করেন। তবে লিবিয়ায় আসার পর পরই স্থানীয় লিবীয় এজেন্টদের হাতে জিম্মি হন তারা। পরবর্তীতে তাদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করে দেশ থেকে পুনরায় অর্থ আদায় করা হয়েছে। এক পর্যায়ে সবাইকে লিবিয়ার জোয়ারার দুটি ক্যাম্পে কিছুদিন জিম্মি করে রাখা হয়। ওই সময় তারা প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হন। তাদের পাহারা দিয়ে রাখা হতো যেন তারা পালিয়ে যেতে না পারেন। পরে দেশ থেকে অর্থ পাঠানোর পর ওই বাংলাদেশিদের ইতালি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশিরা দালালদের মাধ্যমে সেখানে গিয়েছেন। এদের মধ্যে নোয়াখালীর তিন ভাই রয়েছেন। এই তিন ভাইয়ের নাম—রোম্মান, রুবেল ও রিপন। ইস্তাম্বুল ও লিবিয়ায় দালালদের শক্ত নেটওয়ার্ক রয়েছে। এছাড়া মাদারীপুরের নুরী ও মিরাজের নাম উল্লেখ করেছেন উদ্ধার বাংলাদেশিরা। তবে তারা তাদের সঠিক নাম-ঠিকানা বা ফোন নম্বর দিতে পারেননি। ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, গত ৪ এপ্রিল থেকে ভয়াবহ যুদ্ধের কারণে লিবিয়ার অনেক এলাকা জাতিসংঘ সমর্থিত সরকারের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত হয়ে গেছে। এই সুযোগে মানব পাচারকারী চক্র আরো বেশি সক্রিয় হয়েছে। এর আগে ত্রিপোলি সরকারের অনুমতি নিয়ে দূরবর্তী স্থানে গিয়ে বাংলাদেশিদের সহায়তা করা সম্ভব হতো। কিন্তু ত্রিপোলির চলমান যুদ্ধের কারণে নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে সরকারের পক্ষ থেকে দূতাবাসকে বর্তমানে ত্রিপোলির বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। সে কারণে সব জায়গায় যেতে পারছেন না ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বুধবার (১৫ মে) সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার দালালরা এসব বাংলাদেশিদের নিয়ে গেছেন। সিলেট থেকেও যারা লিবিয়ায় গেছেন, তারাও এমন দালালদের মাধ্যমে গেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। ইতোমধ্যে সিলেটের ২৩টি ট্রাভেল এজেন্টের বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থাও নিয়েছি। এসব দালালদের সঠিক নাম-ঠিকানা পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিউনিসিয়া উপকূলে নিখোঁজ বাংলাদেশিদের খোঁজ নেয়ার জন্য ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা সেখানে গিয়েছেন। ১৪ মে ত্রিপোলি দূতাবাস থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই প্রতিবেদন পাঠিয়েছে। গত ৯ মে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশে ১৫০ জন যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা রওনা দেয়। নৌকাটিতে ১৩০ জন বাংলাদেশি ছিলেন। মাঝপথে দুটি নৌকায় তাদের তুলে দেওয়া হয়। এরপর গত ১০ মে তিউনিসিয়ার উপকূলে একটি নৌকাডুবিতে প্রায় ৪০ জন বাংলাদেশি নিখোঁজ হন। নৌকাটিতে ৭০-৮০ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে ১৪ জন বাংলাদেশিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশিদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশকঙ্কাজনক। অপর নৌকাটি ইতালি উপকূলে পৌঁছেছে বলে ধারণা করছে ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাস।





আরো খবর