মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল, ১৪৪৫ | ০৫:০১ অপরাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


রোববার, ০৫ মে ২০১৯ ০২:৪৯:৫৭ পূর্বাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

নিহত ১৪, ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, জলোচ্ছ্বাস

ফণা নামিয়ে ফণীর হানা

অনেকটা ফণা নামিয়ে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। গতকাল ভোর ৬টায় ৬২ মিনিট থেকে ৮৮ কিলোমিটার গতিবেগে সাতক্ষীরা, যশোর, খুলনা অঞ্চলে আঘাত হানে ফণী। আগের দিন ফণীর আঘাতে ভারতের ওড়িশা রাজ্য লণ্ডভণ্ড হয়ে গেলেও বাংলাদেশে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে অনেক কম। শুক্রবার রাত থেকে গতকাল রাত পর্যন্ত ঝড়ে ঘর-গাছ চাপা ও পানিতে ডুবে সারাদেশে প্রাণহানি ঘটেছে ১৪ জনের। আগের দিন ফণীর প্রভাবে ঝড় বৃষ্টি চলাকালে বজ্রপাতে ৮ জনের মৃত্যু হয়। এদিকে সরকারিভাবে জানানো হয়েছে ফণীতে উপকূলীয় এলাকায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ৬৩ জন। বিধ্বস্ত হয়েছে বিভিন্ন এলাকার ঘরবাড়ি। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে গতকাল পর্যন্ত সারাদেশে নৌ যোগাযোগ বন্ধ ছিল। বিঘ্ন ঘটে বিমান চলাচলেও। তবে আজ থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সকালে আঘাত হানে ফণী। দুপুরের দিকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল অতিক্রম করে। ফরিদপুর-ঢাকা অঞ্চল এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে আরো উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপ আকার ধারণ করে ফণী। সন্ধ্যার পর আরো দুর্বল হয়ে ময়মনসিংহ বিভাগের উপর দিয়ে ভারতের আসামের দিকে চলে যায়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ফণীর প্রভাবে গতকাল সরাদেশে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাত হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্যের কারণে রোববারও বৃষ্টিপাত হবে। ফণীর প্রভাবে সাগর খুবই উত্তাল ছিল। তবে ফণী উপকূল অতিক্রম করায় মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এদিকে ফণীর প্রভাবে শুক্রবার রাত থেকে এ পর্যপ্ত ১৪ জনের মৃত্যু ও ১ জন নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় সহস্রাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্থ হয়েছে। বরগুনার পাথরঘাটায় শুক্রবার বিকেলে বিষখালী নদীতে নৌকা ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়। নিহত শারমিন পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউপির মাঝের চরের সবুজ মিয়ার মেয়ে। শারমিন মা-বাবার সঙ্গে কাকচিড়া আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছিল। একই উপজেলায় কাঠের ঘর ধসে দাদি ও নাতি নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন নুরজাহান বেগম (৬০) ও তাঁর নাতি জাহিদুল (৮)। শুক্রবার রাত তিনটার দিকে পাথরঘাটা উপজেলার চরদোয়ানি ইউনিয়নের বাঁধঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া, গতকাল দুপুরে সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নে চোরামনকাটি গ্রামে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে শাহানুর বেগম (৩৫) নামে এক নারী নিহত হন। ভোলার সাত উপজেলায় বিধ্বস্থ হয়েছে প্রায় শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি। জেলার দক্ষিণ দিঘলদী এলাকায় ঘরচাপা পড়ে রাণী বেগম (৫৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া জেলার লালমোহনে জোয়ারের পানিতে ডুবে হাসান নামের ৬ বছরের এক শিশু নিহত হয়েছে। হাসান চরভূতা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে মো. জসিমের ছেলে। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় হাবিব (৩৩) নামে একজনের মৃত্যু ও ১১জন আহত হয়েছে। পিরোজপুরের কাউখালীতে সন্ধ্যা নদীতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা কন্ট্রোল রুম ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার উপজেলার পূর্ব বেতকা গ্রামের নূরুজ্জামান খান সোহাগ এর ছেলে মোরছালিন খান (৪) বাড়ির সামনে একটি ডোবায় পড়ে মারা যায়। ফণীর আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে নোয়াখালীর সুবর্ণচর। ভোর ৪টার বয়ে যাওয়া এ ঝড়ে বিধ্বস্থ হয় শতাধিক বাড়ি। এতে সূবর্ণচর উপজেলার চর ওয়াপদা ইউনিয়নের চর আমানউল্লাপুর গ্রামে ঘরচাপা পড়ে ইসমাইল হোসেন (২) নামের এক শিশু নিহত হয়। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৩০ থেকে ৩৫ জন। লক্ষীপুরের রামগতি উপজেলার চর আলভীতে ঘরচাপা পড়ে নিহত হয়েছে আনোয়ারা বেগম নামের এক নারী। এছাড়াও আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। এদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কা জনক। সকালের ওই ঝড়ে ৫ শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। শুক্রবার বিকালে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া, মিঠামইন ও ইটনা উপজেলায় বজ্রপাতে প্রাণ গেছে ৬ জনের। নেত্রকোনার মদন উপজেলায় গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের কদমশ্রী হাওরে নিহত হয়েছে একজন। নিহত কৃষকের নাম আবদুল বারেক (৩৫)। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটে স্পিডবোট ও ট্রলার চলাচলের সময় দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে এক যাত্রী। আহত হন ১০ জন। এছাড়া নিখোঁজ আমির হামজা নামে ৬ বছরের এক শিশু। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় বজ্রপাতে আপেল মিয়া (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এদিকে সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে গাছের নিচে চাপা পড়ে দাদা ও নাতনির মৃত্যু হয়েছে। এসময় আহত হয়েছে আরো ৮ জন। গুরুতর আহত সম্‌্রাট হোসেন ও মুকুল হোসেনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার বিকাল ৩টার দিকে কাজিপুর উপজেলার ভানুডাঙ্গা বাজারে এই ঘটনা ঘটে। নিহত বিথি খাতুন (৮) কাজিপুর উপজেলার ভানুডাঙ্গা গ্রামের মুকুল হোসেনের মেয়ে ও মুকুল হোসেনের পিতা ইসমাইল হোসেন (৫৫)। এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ্‌ কামাল শনিবার দুপুরে সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ফণীর সর্বশেষ অবস্থা ও প্রস্তুতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে বরগুনায় দুজন, ভোলা ও নোয়াখালীতে একজন করে মোট চারজন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে ৬৩ জন। সংবাদ সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান, সংসদ সদস্য ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, তথ্য সচিব আব্দুল মালেক, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা জয়নাল আবেদিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ভোলায় ঘরচাপায় নিহত ১, শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ভোলা প্রতিনিধি: ফণী’র আঘাতে ভোলার সাত উপজেলায় প্রায় শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। নিহত হয়েছেন একজন। জেলার দক্ষিণ দিঘলদী ৭নং ওয়ার্ডের কোড়ালিয়া গ্রামে ঘরচাপা পড়ে রাণী বেগম (৫৫) নামে গৃহবধূ নিহত হয়েছেন। এছাড়াও চর মোজাম্মেল, চর জহিরউদ্দিন, চর নিজাম, ঢাল চর, কুকরী-মুকরী, চর পাতিলাসহ কয়েকটি চরে ঘরবাড়ি ও গাছের ডাল ভেঙে পড়ে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এদিকে ভোলার জেলা প্রশাসন দুপুর ১২টায় ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবেলা এবং ঝড় পরবর্তী করণীয় নিয়ে দীর্ঘ সভা করছেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিকের সভাপতিত্বে সভায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ এনজিও কর্মীরাও উপস্থিত আছেন। উপকূলের প্রায় ৪২ হাজার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। বরগুনায় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে নৌকা ডুবে শিশুর মৃত্যু বরগুনা প্রতিনিধি : বরগুনার পাথরঘাটায় গত শুক্রবার বিকালে বিষখালী নদীতে নৌকা ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিহত শারমিন পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউপির মাঝের চরের মো. সবুজ মিয়ার মেয়ে। শারমিন মা-বাবার সঙ্গে কাকচিড়া আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছিল। এ বিষয়ে কাকচিড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন পল্টু জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাব থেকে বাঁচতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কাকচিড়া ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছিলেন প্রবাসী সবুজ মিয়া। তাদের বহনকারী নৌকাটি বিষখালী নদীর কাকচিড়া উপকূলে ঢেউয়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। সবুজ ও তার স্ত্রী সাঁতরে তীরে উঠলেও বাঁচানো যায়নি শারমিনকে। ঘণ্টাখানেক পর তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বরগুনায় ফণী’র তাণ্ডবে ঘর ধসে দাদি-নাতি নিহত বরগুনা প্রতিনিধি: বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ফণীর তাণ্ডবে ঘর ধসে দাদি ও নাতি নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- নূরজাহান বেগম (৬০) ও তার নাতি জাহিদুল (৮)। গত শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে পাথরঘাটা উপজেলার চরদোয়ানি ইউনিয়নের বাঁধঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রিপন তাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। হতাহতদের উদ্ধার তদারকি করতে ঘটনাস্থলে ম্যাজিস্ট্রেট গিয়েছেন বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ঘর চাপা পড়ে নিহতদের মধ্যে নূরজাহানের স্বামীর নাম আবদুল বারেক। তার নাতি জাহিদের বাবার নাম ইব্রাহিম। এ বিষয়ে চরদুয়ানি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শাহিন মিয়া বলেন, ফণীর ঝড়ে ইউনিয়নের আরও ৪০-৪৫টি ঘর উড়ে গেছে। এ ঘটনায় কতজন আহত হয়েছেন, তা এখনো জানা যায়নি। গ্রামবাসী জানায়, ইব্রাহিম হোসেনের বাড়িটি কাঠের ছিল। বাড়ির একটি কক্ষে দাদি নূরজাহানের সঙ্গে ঘুমিয়েছিল জাহিদুর। রাতে প্রচণ্ড ঝড় ও বৃষ্টিতে কক্ষটি ভেঙে পড়লে ঘটনাস্থলেই দাদি-নাতির মৃত্যু হয়। পটুয়াখালীতে নিহত ১, আহত ১১ পটুয়াখালী প্রতিনিধি: ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র আঘাতে পটুয়াখালী জেলায় ৬ হাজার ১৮ একর আবাদকৃত জমির ফসল, ২ হাজার ৯২টি কাঁচাঘর, ৩ হাজার ১২৫টি গাছ, ১০ কি. মিটার বেড়িবাঁধ, ১৭৫টি গবাদি পশুর ক্ষতি হয়েছে। এ ঘূর্ণিঝড়ে কলাপাড়া উপজেলায় হাবিব (৩৩) নামে একজনের মৃত্যু ও ১১ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল দুপুর ১টায় জেলা প্রশাসক দরবার হলে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র আঘাতে ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক তথ্য অবহিতকরণের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের আয়োজিত প্রেসব্রিফিং সভায় এ ক্ষতির কথা জানান জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী। এ ঘূর্ণিঝড়ে ৩রা মে শুক্রবার রাতে গাছের ডাল পড়ে হাবিব নামে এক ব্যক্তি আহত হন এবং বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় রাতেই তার মৃত্যু হয়। হাবিব কুয়াকাটা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. হারুনের ছেলে বলে স্থানীয়রা জানান। প্রেসব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ফণী’র আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা ছিল, কিন্তু আল্লাহ্‌র রহমতে তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। সকল মসজিদ ও মন্দিরে দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়েছে। জেলার ৩৯১টি সাইক্লোন শেল্টারসহ বিভিন্ন স্কুলে দেড় লক্ষাধিক লোক আশ্রয় নিয়েছিল তাদের খাওয়া-দাওয়াসহ কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। জেলায় ৬ হাজারের অধিক ভলান্টিয়ার কাজ করেছেন। মির্জাগঞ্জ ও কলাপাড়া উপজেলায় অরক্ষিত বেড়িবাঁধ (ভাঙা বেড়িবাঁধ) দিয়ে জোয়ারে পানি উঠে ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে কিন্তু কোনো হতাহত হয়নি। প্রেসব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মামুনুর রশিদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হেমায়েত উদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নুরুল হাফিজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান, ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. ফিরোজ আহম্মেদ, প্রেস ক্লাবের আহ্বায়ক স্বপন ব্যানার্জি প্রমুখ। এদিকে আবহাওয়া অফিস বিপদমুক্ত ঘোষণা করেছে। ফণী এখন নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। সমুদ্রবন্দর সমূহে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিস। লক্ষ্মীপুরে ৫ শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত, নিহত ১ লক্ষ্মীপুর ও কমলনগর প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে লক্ষ্মীপুরে রামগতির চরআলগী এলাকায় ঘর চাপা পড়ে আনোয়ারা বেগম নামে এক নারী নিহত ও নারী-পুরুষসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদের রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক। এদিকে ঘূর্ণিঝড় ফনির আঘাতে লণ্ডভণ্ড রামগতি উপজেলার চরআলগী, চরআবদুল্লাহ, চররমিজ, বড়খেরীসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় ৫ শতাধিক বাড়িঘর। উপড়ে পড়েছে কয়েকশ’ গাছপালা। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন। এসময় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরষ করা হয়। রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রফিকুল হক, উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শরাফ উদ্দিন আজাদ সহেল ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আমান উল্যা ক্ষতিগ্রস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এছাড়া কমলনগর, রায়পুর, সদর ও রামগঞ্জেও কিছু কিছু স্থানে কাঁচাঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। প্রায় ৬শ’ হেক্টর জমির ধান, সয়াবিন ও রবিশস্যের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী জানায়, হঠাৎ ভোরে কিছু বুজে উঠের আগে ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় সব। ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন কয়েকশ’ পরিবার। কিভাবে এসব ঘর নির্মাণ করা হবে, সে চিন্তায় এখন তাদের চোখে মুখে। এছাড়া নদীর তীরবর্তী এলাকায় প্রচণ্ড জোয়ারের ফলে পানি নিমাঞ্চলে ঢুুকে পড়েছে। দেখা দিয়েছে মেঘনার ভয়াবহ ভাঙন। অপরদিকে ঝড়ে হওয়ায় ও বৃষ্টি এবং জোয়ারের পানিতে অনেক রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তারা। দ্রুত পুনর্বাসন করার দাবি জানান ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। রামগতি উপজেলা চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দিন আজাদ সহেল জানান, এ উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া গবাদিপশুরও অনেক ক্ষতি হয়েছে। সরকার দ্রুত এসব অসহায় মানুষের পুনর্বাসন করার দাবি জানান এ জনপ্রতিনিধি। সিরাজগঞ্জে গাছচাপায় দাদা-নাতনির মৃত্যু কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে গাছের নিচে চাপা পড়ে দাদা ও নাতনির মৃত্যু হয়েছে। এসময় আহত হয়েছে আরো ৮ জন। গুরুতর আহত সম্‌্রাট হোসেন ও মুকুল হোসেনকে বগুড়া শহীদ জিয়উর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার বিকেল ৩টার দিকে কাজিপুর উপজেলার ভানুডাঙ্গা বাজারে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত বিথি খাতুন (৮) কাজিপুর উপজেলার ভানুডাঙ্গা গ্রামের মুকুল হোসেনের মেয়ে ও মুকুল হোসেনের পিতা ইসমাইল হোসেন (৫৫)। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাজিপুরে ভানুডাঙ্গা গ্রামে আজ হাটের দিন ছিলো। দুপুর থেকে লোকজন হাটে আসতে শুরু করে। এর মধ্যে প্রচণ্ড ঝড় ও বৃষ্টি শুরু হয়। এসময় হাটের পুরাতন একটি পাইকর গাছ হাটে আসা লোকজনের ওপর উপড়ে পড়ে। এসময় গাছের নিচে চাপা পড়ে ১০ জন আহত হয়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে বগুড়ার ধুনট ও শহীদ জিয়উর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। আহতদের মধ্যে ইসমাইল হোসেন ও তার নাতনি বিথিকে ধুনট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। ধুনুট স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক মুসফিক দেওয়ান ইসমাইল হোসেন ও তার নাতনি বিথির মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। কাজিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে.এম. লুৎফর রহমান জানান, ঝড়ে ভানুডাঙ্গায় দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা সম্পর্কে দাদা ও নাতনি। কয়রায় ৪ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি: খুলনার কয়রা উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে গত তিনদিনে ৪ শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। গতকাল দুপুরের জোয়ারে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধের তিনটি স্থান ছাপিয়ে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের ওই সব স্থানে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগিতায় লোকজন মেরামতের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে শুক্রবার যারা স্থানীয় ১১৬টি সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছিলেন তারা শনিবার দুপুরের পর থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। তবে যাদের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে তাদের অনেকেই সাইক্লোন শেল্টারে অবস্থান করছেন। কয়রা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ফণির কারণে গত তিন দিনে (বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার) উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ৪৩৩টি কাঁচাঘর সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৪০০ কাঁচা ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে কিছু স্থানে বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে স্থানীয় চিংড়ি ঘেরের কোনো ক্ষতি হয়নি। ফণীর প্রভাবে স্থানীয় নদীতে পানি বৃদ্ধি হওয়ায় ৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়রা সদর ইউনিয়নের হরিণখোলা, ঘাটাখালী, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের গাববুনিয়া, মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া ও দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের মাটিয়াভাঙ্গা ও চরামুখা এলাকা। এসব এলাকায় বাঁধ উপচে নদীর পানি প্রবেশ করেছে। ঘাটাখালী গ্রামের আত্তাব শেখ বলেন, ‘ঝড়ে ঘরবাড়ি ও গাছগাছালির ক্ষতি হলিও ঘেরের মাছ ভালো আছে ভেবে কিছুটা স্বস্তিতে আছি। তবে বাঁধের যে অবস্থা তাতে কখন কি হয়ে যায় বুঝতি পারছি না।’ মাটিয়াভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য গাজী বেলাল হোসেন জানিয়েছেন, গ্রামের বেশিরভাগ লোকের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। কাউখালীতে জোয়ারের পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু কাউখালী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি: পিরোজপুরের কাউখালীতে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে সন্ধ্যা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা কন্ট্রোল রুম ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গতকাল উপজেলার পূর্ব বেতকা গ্রামে নূরুজ্জামান খান সোহাগের ছেলে মোরছালিন খান (৪) বাড়ির সামনে একটি ডোবায় পড়ে মারা যায়। নিহতের বাবা জানান দুপুরে বাড়ি থেকে ছেলেকে নিয়ে বের হলে বাড়ির সামনে কিছুদূর আগাবার পর ছেলেকে না দেখে ফিরে গিয়ে দেখে বাড়ির সামনে ডোবায় পানিতে পড়ে যায় মোরছালিন। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে কাউখালী হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সিদ্দিকুর রহমান মৃত ঘোষণা করে। উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাঈদ মিয়া মনু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মৃদুল আহম্মেদ সুমন, সয়না রঘুনাথপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন পলাশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এলাকায় শোক নেমে আসে। শরণখোলায় বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে ৬ গ্রাম প্লাবিত শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি: বাগেরহাটের শরণখোলার সাউথখালীতে শনিবার সকাল ১০টার দিকে ঘূর্ণিঝড় ফণীর জোয়ারের তোড়ে পাউবোর ৩৫/১ পোল্ডারের দুটি পয়েন্ট বিধ্বস্ত হয়ে ৬টি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্তত পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া ফণী আতঙ্কে শুক্রবার রাতে উপজেলার ৮৫টি সাইক্লোন শেল্টার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেয়া আনুমানিক ২০ হাজার মানুষ পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় শনিবার সকাল থেকে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে। উপজেলার কোথাও কোনো প্রাণহানি কিংবা উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে জেলা প্রশাসন ও এনজিও জেজেএস’র পক্ষ থেকে শুক্রবার রাত এবং শনিবার সকালে ও দুপুরে শেল্টারগুলোতে আশ্রয় নেয়া মানুষদের মাঝে চিড়া, গুড়, মোমবাতি ও দিয়াশলাই বিতরণ করেছেন। শনিবার সকাল ১০টায় সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বগী ও দক্ষিণ সাউথিখালী এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর ওই বেড়িবাঁধের দুটি স্থান জোয়ারের পানির তোড়ে বিধ্বস্ত হয়ে আলাদা হয়ে গেছে। প্রবল স্রোতে ওই স্থান দুটি থেকে ফসলের মাঠে পানি ঢুকে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে বগী, দশ ঘর, সাত ঘর, দক্ষিণ সাউথখালী, গাবতলা ও চালিতাবুনিয়া গ্রামের পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ফেনীতে শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ফেনী প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে ফেনীর সোনাগাজীসহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। গাছপালা উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। গাছপালা পড়ে ও মহিষের গুতোয় আহত হয়েছে অন্তত ৫ জন। সোনাগাজীর চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলন জানান, সকাল সাড়ে ৯টায় ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া, দক্ষিণ চরচান্দিয়া, জলদাস পাড়া, জেলে পাড়াসহ একাধিক এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ে তার ইউনিয়নের অর্ধশত কাঁচা ও আধাপাকা ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়। এ সময় কাঁচা ঘরবাড়ি হেলে পড়ে, বাড়ির টিনের চাল উপড়ে পড়ে। ঘরের মালামাল নষ্ট হয়। ভোর থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে পুরো উপজেলা। জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে জমির ফসল। ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। দুপুর ১২টার দিকে সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ধান গবেষণা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ওই এলাকার লাইলী আক্তার, জান্নাতুর লাহের, আছিয়া খাতুন, আনিছুল হক, রেজাউল হক, আবু সুফিয়ান, আলাউদ্দিন, নুরের নবী, বেলাল হোসেন, বেবি আক্তার, আবুল কাশেমসহ অন্তত ৩০টি পরিবারের ঘরবাড়ি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দক্ষিণ চরচান্দিয়া গ্রামের আলেয়া বেগম জানান, হঠাৎ ঝড়ে তার ঘর ভেঙে পড়ে। ঘরের সব মালামাল পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। জলদাস পড়া গ্রামের মোহন দাস জানান, ঝড়ে তার ঘরের চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে। ঘরের আলমিরাসহ সকল মালামাল পার্শ্ববর্তী ডোবায় পড়ে রয়েছে। ঘর মেরামতের জন্য প্রশসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা চেয়েছেন। তার মতো ওই এলাকার হরিপদ দাস, হরেন্দ্র দাস, যুধিষ্ঠি দাসসহ অনেকের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসকের ঘূর্ণিঝড় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (এনডিসি) রাশেদুজ্জামান বলেন, সোনাগাজীতে সাতটি বসতঘর সম্পূর্ণ, ৬৭ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ১৫শ’ একর জমির ফসল ক্ষতি হয়েছে। রাঙ্গাবালীতে বিধ্বস্ত শতাধিক ঘরবাড়ি রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় ফণীর হানায় পটুয়াখালীর সাগর উপকূলীয় দ্বীপ উপজেলা রাঙ্গাবালীতে শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। শুক্রবার রাতে ফণীর প্রভাবে ব্যাপক ঝড়ো হাওয়া প্রবাহিত হয়। এতে রাঙ্গাবালী উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়াও শত শত গাছপালা উপড়ে পড়েছে। তবে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি ছিল চোখে পড়ার মতো। শুক্রবার বিকালেই উপজেলার বিচ্ছিন্ন চরগুলো থেকে কয়েক হাজার মানুষ ও গবাদিপশু সরিয়ে আনা হয়েছিল। যার কারণে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে দাবি উপজেলা প্রশাসনের। ওসমানীনগরে জনজীবনে দুর্ভোগ ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি: ফণীর প্রভাব পড়েছে সিলেটের ওসমানীনগরে। প্রলয়ঙ্কারী এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শনিবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে টানা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। বিরূপ আবহাওয়ায় জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। সকাল ৬টা থেকে ওসমানীনগরে শুরু হয় বৃষ্টি। ফলে সকালের শুরুতেই বেড়ে যায় কর্মজীবী মানুষের দুর্ভোগ। বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার কারণে রাস্তা ঘাটে যান চলাচল কমে যাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন বাজারে রিকশা ও অটোরিকশা সংকটও দেখা দেয়। ফলে অনেকে বাসা থেকে বের হয়ে গন্তব্যে যেতেও বিড়ম্বনার শিকার হন। এ সুযোগে রিকশা ও অটোরিকশা চালকরা ভাড়ার পরিমাণও বাড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফণীর প্রভাবে ভাবে ওসমানীনগরে ঝড় হলেও কোনো ধরনের ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। রংপুরে দিনভর দমকা হাওয়া ও বৃষ্টি স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর থেকে: ঘূর্ণিঝড় ফণীর তেমন প্রভাব পড়েনি বিভাগীয় জেলা রংপুরে। গতকাল মধ্যরাত থেকে থেমে থেমে দমকা হাওয়া ও বৃষ্টিতে কিছু গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ফণী রংপুরের উপর দিতে প্রবাহিত হওয়ার খবরে তথ্য অফিসের উদ্যোগে জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে দিনভর মাইকিং করে মানুষকে নিরাপদে থাকার আহ্বান জানানো হয়। আমতলী-তালতলীর তিন শতাধিক কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত আমতলী (বরগুনা) থেকে মো. আবু সাইদ খোকন: ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে আমতলী-তালতলী উপজেলার উপকূলীয় নিম্নাঞ্চলে ২০ গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। চরাঞ্চলের তিন শতাধিক আধা কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত ও সহস্রাধিক গাছপালা উপড়ে পড়েছে। দুই উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাহিরের দুই লক্ষাধিক লোকজন সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছিল। শনিবার সকাল থেকে তারা আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়ে বাড়ি ঘরে ফিরে গেছেন। বন্যা শেষ হলেও সাগর ও পায়রা নদী উত্তাল রয়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে তিন ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে সাগর ও পায়রা সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সকালে বন্যায় সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেয়া মানুষের মাঝে ইউএনও মো. সরোয়ার হোসেনও পৌর মেয়র মো. মতিয়ার রহমান উদ্যোগে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ২০ ঘণ্টা দক্ষিণাঞ্চল বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল।





আরো খবর