আজ সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড় ফণী আঘাত হানতে পারে এমন শঙ্কায় কুয়াকাটা উপকূলীয় অঞ্চল ও পায়রা বন্দরসহ তৎসংলগ্ন এলাকার মানুষের মধ্যে এক ধরনের উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। স্বাভাবিক জোয়ারে চেয়ে বর্তমানে দুই ফুট পানি উঁচু হয়ে বড় বড় ঢেউ উপচে পরছে সাগরে কিনারে। বেড়িবাধের বাইরে সকল মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে কুয়াকাটা উপকুলীয় অঞ্চল পায়রা বন্দর, তৎসংলগ্ন এলাকায় দক্ষিণের বাতাসে গতি বাড়তে শুরু করছে এবং আকাশ মেঘলা রয়েছে। সেই সঙ্গে রাতে দুই দফা হালকা বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে পর্যটকদের সৈকতে নামতে নিষেধ করছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র আজ সকাল ৯টার দিকে হোটেল মোটেল আবাসিক মালিকদের নিয়ে জরুরি সভার করেছেন। এতে বলা হয়েছে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার জন্য পর্যাপ্ত সাইক্লোন্ট সেন্টার না থাকায় এখানকার সকল আবাসিক হোটেলগুলিকে খুলে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
যাতে এ অঞ্চলের মানুষের কোন দুর্ভোগ না হয়। আবহাওয়া অফিস থেকে বারবার বলা হয়েছে আজ সন্ধ্যার পরপর ঘূর্ণিঝড় ফণী আঘাত হানতে পারে। সে লক্ষে ঘূর্নিঝড় মোকাবেলায় ব্যাপক তৎপর দেখা গেছে জেলা ও উপজেলা কর্মকর্তাদের ইউনিয়নে ইউনিয়নে সভা ও গনসংযোগ করেছেন তারা। সিপিপি সদস্যরা দিনরাত কঠোরভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ অঞ্চলে স্ব্যাস্থসেবার জন্য ১৩টি মেডিকেল টিম এবং ১৫৪টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এদিকে উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড় ফনি’র ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোষ্টগার্ড, পুলিশ ,ফায়ার সার্ভিসসহ সেবাদানকারী সংস্থার কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
সভায় ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত হানার আগেই দুর্গত এলাকা থেকে যেন মানুষদের সরিয়ে নেয়া যায় এবং সকল সাইক্লোন শেল্টারগুলো ব্যবহার করা যায় সে জন্য প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেয়া হয়।
বৈঠকে জানানো হয়েছে জেলায় ৩৯১টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ১১১টি মেডিকেল টিম গঠন করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। খাবার মজুদ রয়েছে। সকাল থেকে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সিপিপি’র প্রায় ৬৫২৫ জন স্বেচ্ছাসেবক জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে সাধারন জনগনকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসার আহবান জানাচ্ছে।
এছাড়া জেলা খাদ্য বিভাগ এবং ফায়ার সার্ভিসকে দুর্যোগ পরবর্তী যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োহনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। নদী বন্দর কতৃপক্ষ সকল রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে। সেনাবাহিনীর চারটি টিম জেলার ৮টি উপজেলা দূর্যোগ মোকাবেলায় কাজ করবে বলে সভায় জানানো হয়। এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর রহমান মানবজমিনকে জানান দুর্যোগ মোকাবেলায় উদ্ধার কাজের জন্য আমাদের সকল প্রস্ততি নেওয়া হয়েছে।