মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল, ১৪৪৫ | ১০:২৬ পূর্বাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


শনিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ ০১:৪৩:০৬ পূর্বাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

পাকিস্তানকে পানিতে মারতে চায় ভারত

কাশ্মীরের পুলওয়ামায় হামলার পরদিনই পাকিস্তানি পণ্যের আমদানি শুল্ক ২০০ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছিল ভারত। তুলে নিয়েছে মোস্ট ফেভার্ড নেশন (এমএফএন) মর্যাদাও। পাকিস্তানকে একঘরে করার প্রচার চালাচ্ছে সারাবিশ্বে। সেনাবাহিনীতেও শুরু হয়েছে যুদ্ধপ্রস্তুতি। ১৪০টি যুদ্ধবিমান নিয়ে পরদিন রাতেই পাক-সীমান্তে মহড়া চালায় বিমানবাহিনী। ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তানে পাল্টা হামলার অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেই। এবার জাতশত্রু পাকিস্তানকে পানিতে মারার হুমকি দিলেন দেশটির পানিসম্পদ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ি। খবর এনডিটিভি, ইকোনমিক টাইমসের।। বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ি হুশিয়ারি দিয়েছিলেন, ভারতের পেটের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা পাকিস্তানের বড় তিনটি নদীর জলপ্রবাহ বন্ধ করে দেয়া হবে। শুক্রবার সেটাই আরও স্পষ্ট করলেন গডকড়ি। বললেন, ‘তিন নদীর জল বন্ধ করে ভারতের দিকে ঘুরিয়ে দেয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে মন্ত্রণালয়কে। সেই অনুযায়ী কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। পরিকল্পনার রূপরেখা চূড়ান্ত হলেই প্রধানমন্ত্রীর দফতরে জানানো হবে। সবুজ সংকেত পেলেই দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।’ কিন্তু ভারতের এই শেষ অস্ত্রেও একচুলও কাবু হয়নি ভারত। এত বড় হুমকিতেও কার্যত নিরুত্তাপ। পাকিস্তানের প্রভাবশালী দৈনিক ডনের রিপোর্ট অনুযায়ী, এ নিয়ে বিরোধিতা করবে না ইসলামাবাদ। পাক পানিসম্পদ মন্ত্রালয়ের সচিব খাওয়াজা শুমাইলকে উদ্ধৃত করে ‘ডন’ বলছে, ‘এ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই পাক সরকারের। আন্তর্জাতিক পানিচুক্তি যদি তিন নদীর জল পাকিস্তানের দিকে আসা বন্ধ করে ভারতে ঘুরিয়ে দেয়া সমর্থন করে, তাহলে তাদের কোনো আপত্তি নেই।’ টুইট বার্তায় তিনি জানান, ‘কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে পাকিস্তানে যে পানি সরবরাহ করা হতো এবার থেকে তা যাওয়া বন্ধ করে দেয়া হবে। আমরা পূর্ব পাড়ের নদীগুলোর পানির দিক পরিবর্তন করে দিয়ে তা জম্মু-কাশ্মীর ও পাঞ্জাবের বাসিন্দাদের সরবরাহ করব।’ তিনি আরও জানিয়েছেন ‘রবি নদীর ওপর শাহপুর-কান্দিতে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। সর্বোপরি উঝ প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের নদীর পানি জম্মু-কাশ্মীরের কাজে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষণ করা হবে এবং রবি-বিপাশা নদীর বাকি পানি অন্য রাজ্যেও পাঠানো হবে।’ উপরের সব প্রকল্পই জাতীয় প্রকল্প হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে বলেও টুইটে জানান তিনি। সিন্ধুর উপত্যকায় মোট ছয়টি নদী রয়েছে। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে তিনটিই ভারতের দিক থেকে পাকিস্তানে প্রবাহিত। এর মধ্যে পূর্ব দিকে রয়েছে ইরাবতী, শতদ্রু এবং বিপাশা। পশ্চিম দিকের তিনটি নদী হল সিন্ধু, বিতস্তা এবং চন্দ্রভাগা। এই ছয়টি নদীর জলবণ্টন নিয়েই ১৯৬০ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু এবং পাক প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের মধ্যে চুক্তি হয়। সেটাই সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি। এই চুক্তি অনুযায়ী, পশ্চিমের তিন নদী সিন্ধু, ঝিলম এবং চন্দ্রভাগার জল ব্যবহারের অধিকার পাকিস্তানের এবং ভারতীয় ভূখণ্ডে কোনোভাবেই ওই তিন নদীর প্রবাহে অন্তরায় বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবে না ভারত। অন্য দিকে পূর্ব দিকের ইরাবতী, শতদ্রু এবং বিপাশা নদীর জল ব্যবহারের অধিকার ভারতের। রোম যখন পুড়ে মরছিল, নিরু তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল- কাশ্মীর হামলা নিয়ে ঠিক এরকমই একটা বদনামের মধ্যে পড়ে গেছেন ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অভিযোগ উঠেছে, পুলওয়ামায় হামলার খবর শোনার পরও হাসি-ঠাট্টায় মেতেছিলেন মোদি। নিশ্চিন্তে ফটশুট করছিলেন। স্থানীয় পত্রিকায় এ খবর দেখার পর মোদির গায়ে ‘ফটোশুট সরকার’ তকমা লাগিয়ে দিয়েছেন বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী। শুক্রবার ওই টুইটের পরপরই তার প্রতিবাদ করে বিজেপি। দলীয় বিবৃতিতে জানায়, ‘হাসি-তামাশা দূরের কথা, ওই খবর শোনার পর সামনে সাজানো খাবার-দাবার কিছুই মুখে তোলেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিন্দুমাত্র দেরি না করে ৭টায় রামনগর ছেড়ে দিল্লির উদ্দেশে উড়ে যান।’ সরকারের তরফ থেকেও মোদির সেদিনকার কর্মসূচির বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়েছে। কংগ্রেস অভিযোগ তোলে, পুলওয়ামায় সিআরপি জওয়ানদের ওপর যখন জঙ্গি হামলা হয়, সে সময় নৈনিতালে জিম করবেট জাতীয় উদ্যানে তথ্যচিত্রের শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন মোদি। শুধু ব্যস্ত থাকাই নয়, রামনগরের সরকারি অতিথিশালায় বসে রীতিমতো চা-পকোড়া আড্ডায় মেতেছিলেন তিনি। স্থানীয় সংবাদপত্রে মোদির কর্মসূচি সবিস্তার প্রকাশিত হওয়ার পরই সেটাকে হাতিয়ার করে তীব্র আক্রমণে নামে কংগ্রেস। কংগ্রেসের এ প্রচারণাকে গুজব প্রমাণ করতে এদিন প্রধানমন্ত্রীর সফরের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ প্রকাশ করে পাল্টা আক্রমণে নেমেছে বিজেপি। সরকারি সূত্রে প্রকাশিত সেই বিবরণে বলা হয়েছে, মোদি সকাল ৭টায় দিল্লি থেকে দেহরাদুনের উদ্দেশে রওনা দেন। খারাপ আবহাওয়ার জন্য সেখানে চার ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়। ১১টা নাগাদ জিম করবেট জাতীয় উদ্যানে যান মোদি।





আরো খবর