বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল, ১৪৪৫ | ১২:৩৭ অপরাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


শুক্রবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ ০৪:১২:৩১ পূর্বাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড: এবার কি কর্তৃপক্ষের টনক নড়বে?

বুধবার রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি যেন ৯ বছর আগে সংঘটিত নিমতলী ট্র্যাজেডিরই পুনরাবৃত্তি। ২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলী অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছিল ১২০ জনেরও বেশি নারী-পুরুষ। সেই নিমতলীরই এক কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত চকবাজারের চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পাশের চারতলা একটি ভবনে আগুন লাগে এবং তা আশপাশের আরও কয়েকটি ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। এ সম্পাদকীয় লেখা পর্যন্ত অন্তত ৭০ জনের মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, প্রাণহানির সংখ্যাটি আরও বড় হবে। ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেছেন, উদ্ধারকাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার পর হতাহতের সঠিক তথ্য জানা যাবে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানানোর ভাষা আমাদের নেই। আমরা শুধু মৃতদের আত্মার শান্তি কামনা করতে পারি। আর যারা অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন, তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। বুধবারের অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত কারণ সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া না গেলেও এর ভয়াবহতার কারণ অনেকটাই স্পষ্ট। পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেছেন, ভবনটিতে রাসায়নিক গুদাম ছিল। এছাড়া নিচতলায় কয়েকটি গাড়ি ছিল, যেগুলো গ্যাসে চলে। আগুনের কারণে গাড়িগুলো বিস্ফোরিত হয়। আরেকটি গাড়ি ছিল, যার ভেতর ছিল অনেকগুলো সিলিন্ডার। ওই সিলিন্ডার হয়তো আশপাশের বাড়িতে ও হোটেলে গ্যাস সরবরাহের জন্য রাখা হয়েছিল। ওই গাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। এ কারণে মৃতের সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেড়ে যায়। আমরা জানি, রাসায়নিক পদার্থ অত্যন্ত দাহ্য। তা আগুনের স্পর্শে এলে কতটা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে সেই অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। নিমতলী অগ্নিকাণ্ডের পর পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদামগুলো সরিয়ে ফেলার দাবি উঠেছিল জোরেশোরে। এ পরিপ্রেক্ষিতে তালিকা করে ৮০০ রাসায়নিক গুদাম ও কারখানা কেরানীগঞ্জে সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। কিন্তু কাজটি সম্পাদন হয়নি আজও। তাই বলা যায়, এরই পরিণতিতে চকবাজারের অগ্নিকাণ্ড ঘটল। এজন্য যদি কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করা হয়, তাহলে কি ভুল হবে? নিমতলী ট্র্যাজেডির প্রতিটি বর্ষপূর্তিতে আমরা বলে এসেছি, আর কয়টি অগ্নিকাণ্ডের পর কর্তৃপক্ষের টনক নড়বে? পুরান ঢাকাবাসীকে এই ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করতে হবে আর কতদিন? আমরা আশা করব, চুড়িহাট্টার মর্মান্তিক ঘটনার মধ্য দিয়ে টনক নড়বে কর্তৃপক্ষের। পুরান ঢাকা থেকে অনতিবিলম্বে সব রাসায়নিক গুদাম ও কারখানা সরিয়ে নেয়া হবে। এ ব্যাপারে আর যেন বিলম্ব না ঘটে সেজন্য সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে পদক্ষেপ নেয়া হবে, এটাই কাম্য। অগ্নিকাণ্ড যে কোনো সময় ঘটতে পারে। সেজন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে, প্রতিটি ভবনে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন। আরও মনে রাখা দরকার, বছরের এ মৌসুমটি অগ্নিকাণ্ডের জন্য অনুকূল সময়। গত কয়েক দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তাই এ সময় অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে সবারই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। বলা হয়ে থাকে, সাবধানের মার নেই। একটু সচেতনতা ও সাবধানতা আমাদের রক্ষা করতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা থেকে।





আরো খবর