শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ রমজান, ১৪৪৫ | ০৯:২৬ পূর্বাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


বুধবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ ১১:১৮:৩৭ পূর্বাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

ডাকসু নির্বাচনের পুনঃতফসিল দাবি ছাত্রদলের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের জন্য পুনঃতফসিল চেয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।এছাড়া ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নিশ্চিত করতে সাত দফা দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। প্রায় এক যুগ পর মধুর ক্যান্টিনে গিয়ে বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদল। এসময় এসব দাবি করা হয়। ছাতদলের সাত দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, ক্যাম্পাস ও হলে সব ছাত্রসংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে ডাকসু নির্বাচন পিছিয়ে দিয়ে পুন:তফসিল ঘোষণা করা, ভোট কেন্দ্র হলের বাইরে করা, পাশাপাশি ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে বয়সসীমা বাড়ানো, ডাকসুর সভাপতির যে অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা তার ভারসাম্য নিশ্চিত করা, সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর যে হামলা ও নির্যাতন হয়েছে তার নিরপেক্ষ তদন্ত করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান এবং ডাকসুর নির্বাচন পরিচালনা ও উপদেষ্টা কমিটিসহ এ বিষয়ে গঠিত সব কমিটির পুনর্গঠন। সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো তুলে ধরেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান।তিনি বলেন, দীর্ঘ প্রায় তিন যুগ পর ডাকসু নির্বাচন হবে। বিষয়টিকে আমরা ইতিবাচকভাবে দেখছি, ইতিবাচক চিন্তা করছি। তবে নির্বাচনের আগে প্রশাসন আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নেবে বলে আমরা আশাবাদী। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দিকী, সাহিত্য ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া, বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির উপ সাংগঠনিক সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির প্রমুখ। এর আগে বুধবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া, সহসম্পাদক মামুন খান নেতৃত্বে ২৫/৩০ জন নেতাকর্মী মধুর ক্যান্টিনে প্রবেশ করে। পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব হাসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মধুর ক্যান্টিনে যান।সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন।কেন্দ্রীয় নেতাদের ক্যাম্পাসে পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কর্মীরা উজ্জীবিত হন। ছাত্রদলের মধুর ক্যানটিনে যাওয়ার খবর পেয়ে সকাল ১০টার পর থেকেই মধুর ক্যান্টিনে যেতে শুরু করে ছাত্রলীগের হল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের মধুর ক্যানটিনে স্বাগত জানান। ক্যান্টিনে অন্য টেবিলে বসা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি তুহিন কান্তি দাসের সঙ্গেও করমর্দন করেন ছাত্রদলের দুই নেতা। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা টেবিলে বসে চা পান করেন। আজ তাদের কোনো বাধার মুখে পড়তে হয়নি। তবে সেখানে তাঁদের তিন দিক থেকে ঘিরে বিরতিহীনভাবে স্লোগান দিতে থাকেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মধুর ক্যান্টিনের ভেতরে উত্তর-পূর্ব কোণে বসেন। তাদের দক্ষিণ পাশে ছাত্রলীগ ও পশ্চিম পাশে ছাত্র ইউনিয়নসহ বাম সংগঠনের নেতাকর্মীরা বসেন। এদিকে মধুর ক্যান্টিনের ভেতরে-বাইরে সকাল থেকে ছাত্রলীগের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অবস্থান নিয়েছেন। মুহুর্মুহু স্লোগানে নিজেদের অবস্থান জানান দেন তারা। সব ছাত্র সংগঠনের অবস্থানের কারণে দীর্ঘ ৯ বছর পর আবারো চাঙা হয় মধুর ক্যান্টিন। প্রাচ্যের অক্সফোর্ডের মূল আকর্ষণ মধুর ক্যান্টিনে ক্রীড়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতৃত্বের আড্ডা এক সময় বেশ আকাঙিক্ষত ও রোমাঞ্চকর ব্যাপার ছিল।সংঘাতময় জাতীয় রাজনীতির মধ্যেও বিভিন্ন মত ও পথের ছাত্র সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতাদের মধুর ক্যান্টিনে এক টেবিলে আড্ডা রাজনৈতিক সৌহার্দের জানান দিত।তবে প্রায় এক দশক ধরে মধুর ক্যান্টিনে সেই চিত্র নেই। শুধু মধুর ক্যান্টিন কেন ক্যাম্পাস হল কোথাও রাজনৈতিক সহাবস্থান নেই। ২৮ বছর পর অনুষ্ঠেয় ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফের আলোচনামুখর হয়ে উঠেছে ঢাবি। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ২০১০ সালের পর প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল ও বড় ধরণের শোডাউন করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। ৯ বছর আগে ২০১০ সালের ১৮ জানুয়ারি ছাত্রদল সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল ও সমাবেশ করে। ওইদিন ছাত্রলীগের হামলায় আহত হন তৎকালীন ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী।এরপর আর ছাত্রদলকে ক্যাম্পাসে দীর্ঘসময় অবস্থান করতে কিংবা মিছিল-শোডাউন করতে দেখা যায়নি। ওই হামলার এক বছর পূর্তিতে হামলাকারীদের বিচার দাবিতে ছাত্রদল শাহবাগ থেকে থেকে মিছিল বের করে। মিছিলটি ক্যাম্পাসে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। এরপর ছাত্রদল আর ক্যাম্পাসে ঢোকার চেষ্টা করেনি। আগামী ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।





আরো খবর