শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ শাওয়াল, ১৪৪৫ | ০৭:১০ পূর্বাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


মঙ্গলবার, ১৫ জানুয়ারী ২০১৯ ০৩:১৩:২৯ পূর্বাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

১৪ দলের শরিক বিরোধী দলে জাসদ নাকি ওয়ার্কার্স পার্টি!

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের দুই শরিক- বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)।মহাজোটের কার্যকর বিরোধী দলের ভূমিকায় এ দুই দলই অবতীর্ণ হতে চায়। মন্ত্রিসভায় স্থান না পাওয়ার পর দল দুটির শীর্ষ নেতাদের কথায় এমন আভাস পাওয়া গেছে। তাদের মতে, মন্ত্রিসভায় রাখা না রাখার বিষয়টি একান্তই প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) যদি চান, বিরোধী দলের আসনেই বসবেন, পাশাপাশি সংসদে কার্যকর ভূমিকা পালন করবেন তারা। সূত্র জানায়, সরকারি দলের সঙ্গে রাজনৈতিক বোঝাপড়া, সরকারের বাইরে থেকে বিরোধী দল হিসেবে সংসদের ভেতরে ও বাইরে কার্যকর ভূমিকা রাখার বিষয়ে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত নেবেন তারা। তবে আপাতত শরিক দলগুলো নিজেদের ঘর গোছানোটাকেই প্রাধান্য দিচ্ছে। এছাড়া উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় প্রস্তুতির দিকেও মনোযোগ দেবে দলগুলো। ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম প্রধান শরিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি আগামী মে মাসে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই কংগ্রেস থেকে পরবর্তী রাজনৈতিক কৌশল এবং পথচলা ঠিক করবে বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা আগের মেয়াদে সরকারে থেকেও সরকারের ভুল-ত্রুটির সমালোচনা করেছি। বিশেষ করে অর্থ পাচার, ব্যাংকিং খাতের নৈরাজ্য, শেয়ার কেলেঙ্কারি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, গ্যাস-পানি-বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদসহ নানা ইস্যুতে সংসদে এবং সংসদের বাইরে কথা বলেছি। এবার যেহেতু সরকারে নেই। সংসদে এবং সংসদের বাইরে সরকারের ভুল-ত্রুটিগুলো আরও জোরালোভাবে তুলে ধরব।’ রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলে আমরা অতীতে জোটগতভাবে আন্দোলন, নির্বাচন ও পরে সরকার গঠন করেছি। এবারও একসঙ্গে নির্বাচন করেছি। নির্বাচনের পর সরকারে জোটের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা শরিকদের তার মন্ত্রিসভায় রাখবেন কী রাখবেন না- সেটির পুরো এখতিয়ার তার। এ নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) চাইলে আমরা বিরোধী দলেই থাকব, সংসদে কার্যকর ভূমিকা পালন করব।’ জানা গেছে, মন্ত্রিসভায় জায়গা না পাওয়ার পর আওয়ামী লীগের শরিক এই দুই দলই পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে নিজ নিজ দলের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টি আগামী ২০ জানুয়ারি তাদের পলিটব্যুরোর সভা আহবান করেছে। ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভা ডেকেছে হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ। আর ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভা ডেকেছে শরিফ নুরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাসদ। জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার সোমবার যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা সংসদে এবং সংসদের বাইরে কার্যকর ভূমিকা পালন করব। পাশাপাশি দল সংগঠিত করার ক্ষেত্রে আগের চেয়ে আরও বেশি মনোযোগী হব। এছাড়া সামনে উপজেলা নির্বাচন তাই এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি আমরা এখন গুরুত্বসহকারে নিচ্ছি।’ ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট ২৮৮ আসনে জয়ী হয়। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ পায় ২৫৭টি আসন। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ওয়ার্কার্স পার্টি ৩টি, জাসদ ২টি, বাংলাদেশ জাসদ ১টি, তরিকত ফেডারেশন ১টি, জাতীয় পার্টি-জেপি ১টি আসনে জয়ী হয়। জোটগতভাবে নির্বাচন করে সরকার গঠন করলেও এবারই প্রথম মন্ত্রিসভায় শরিকদের কাউকে রাখেননি প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালে প্রথম সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। এই সরকারে জাতীয় পার্টি থেকে আনোয়ার হোসেন ও জাতীয় সমাজতান্ত্রি দল-জেএসডি থেকে আসম আবদুর রবকে মন্ত্রিসভার সদস্য করা হয়। এরপর ২০০৮ সাল থেকে গত তিনটি নির্বাচনেই জোটবদ্ধভাবে অংশ নিয়ে এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও গত দুই সরকারের মন্ত্রিসভায় শরিকদের রেখেছিল দলটি। তবে এবার সে ধারাবাহিকতায় ব্যত্যয় ঘটান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ অবস্থায় শরিক দলগুলোর অনেকেই নিজেদের পরবর্তী করণীয় এবং লক্ষ্য ঠিক করে সামনের দিকে এগোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।





আরো খবর