মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল, ১৪৪৫ | ০৭:৩৬ পূর্বাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


বৃহস্পতিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:২৯:২৩ অপরাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

নির্বাচনে থাকবে ৩ স্তরের নিরাপত্তা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পুলিশ, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেবে ইসি। আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে সেনাবাহিনী। প্রতি জেলায় সেনাবাহিনীর ছোট আকারে একটি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশের ভৌগোলিক অবস্থা বিবেচনা করে, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিবেদন ও সার্বিক দিক লক্ষ্য রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। বৃহস্পতিবার জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে করে নির্বাচন কমিশন। বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা, অন্য চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে জানানো হয়, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিবেদন অনুযায়ী ভোটের নিরাপত্তা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিপত্রের মাধ্যমে তা জানিয়ে দেবে। কার্যপত্রে উল্লেখ করা হয়, ভোটকেন্দ্রের বাইরে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবেন সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা। র‌্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে টহল দেবেন। তারা ভোটকেন্দ্রের ভেতরে বা ভোট গণনা কক্ষে ঢুকতে পারবেন না। অবশ্য রিটার্নিং বা প্রিসাইডিং কর্মকর্তা চাইলে স্ট্রাইকিং ও মোবাইল টিমের সদস্যরা প্রয়োজনে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন। নির্বাচনের আগে ও পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে, মেট্রোপলিটন এলাকা, মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে ও বিশেষ এলাকায় (পার্বত্য অঞ্চল, দ্বীপ এলাকা ও হাওর) পৃথক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। এছাড়া, গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী সহিংসতাপ্রবণ এলাকাগুলোর জন্য থাকবে আলাদা সতর্কমূলক ব্যবস্থা। ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী, ভোটকেন্দ্রের পাহারায় মেট্রোপলিটন এলাকার সাধারণ কেন্দ্রে পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশের মোট ১৬ জন সদস্য নিযুক্ত থাকবেন। এর মধ্যে অস্ত্রসহ পুলিশ ৩ থেকে ৫ জন, অঙ্গীভূত আনসার ১১ জন ও গ্রাম পুলিশের ১ জন সদস্য নিযুক্ত থাকবেন। এসব এলাকার গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে মোট ১৭ জন ও অস্ত্রসহ ৪ থেকে ৬ সদস্য নিযুক্ত থাকবেন। এর মধ্যে অস্ত্রসহ পুলিশ থাকবেন ন্যূনতম ৪ জন। মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশের মোট ১৪ জন সদস্য নিযুক্ত থাকবেন। এর মধ্যে অস্ত্রসহ পুলিশ ১ জন, অঙ্গীভূত আনসার ১২ জন ও গ্রাম পুলিশের ১ থেকে ২ জন সদস্য নিযুক্ত থাকবেন। এসব এলাকার গুরুত্বপূর্ন কেন্দ্রে মোট ১৫ জন ও অস্ত্রসহ ৩ থেকে ৪ সদস্য নিযুক্ত থাকবেন। এর মধ্যে অস্ত্রসহ পুলিশ থাকবেন ন্যূনতম ২ জন। অন্যদিকে, পার্বত্য এলাকা, হাওর, দ্বীপাঞ্চলকে বিশেষ এলাকা চিহ্নিত করে সেসব এলাকায় পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশের মোট ১৫ জন সদস্য নিযুক্ত থাকবেন। এর মধ্যে অস্ত্রসহ পুলিশ ২ জন, অঙ্গীভূত আনসার ১২ জন ও গ্রাম পুলিশের ১ থেকে ২ জন সদস্য নিযুক্ত থাকবেন। এসব এলাকার গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে মোট ১৬ জন ও অস্ত্রসহ ৪ থেকে ৫ সদস্য নিযুক্ত থাকবেন এর মধ্যে অস্ত্রসহ পুলিশ থাকবেন ন্যূনতম ৩ জন। ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা ভোট গ্রহণের দুই দিন আগে এবং ভোটের দিন ও ভোটের পরের দিনসহ চার দিন মাঠে থাকবেন। আনসার সদস্যরা ভোট গ্রহণের তিন দিন আগে মাঠে নেমে থাকবেন পরের দিন পর্যন্ত। আগামী ২৪ থেকে ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে যেকোনো দিন মাঠে নামবে সেনাবাহিনী। তবে এর আগে ১৫ ডিসেম্বর থেকে পরিস্থিতি অবলোকন (রেকি) করবেন তারা। সেনাবাহিনীর প্রতিটি টিমের সঙ্গে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। বিজিবি, কোস্টগার্ড ও আর্মড পুলিশের সদস্যরা জেলা, উপজেলা ও থানাসমূহে মোবাইল স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবেন। তারা রিটার্নিং অফিসার ও প্রিজাইডিং অফিসারের চাহিদার ভিত্তিতে ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে কিংবা ভোট গণনাকক্ষের শান্তিশৃংখলা রক্ষার্থে থাকবেন। এছাড়া, ইভিএমের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্বে থাকবেন। অন্যদিকে, র‌্যাব স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে এবং নির্বাচনী এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করবে। নির্বাচনি সামগ্রী আনা-নেওয়া, নির্বাচন কার্যালয়সমূহের নিরাপত্তা, ভোট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। ভোটারদের জন্য আস্থার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য কাজ করবেন পুলিশ সদস্যরা। নির্বাচনে পুলিশের ১ লাখ ৮৪ হাজার ৬৫৭ জন মোতায়েন থাকবেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও আচরণবিধি প্রতিপালনে ১ হাজারের বেশি জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবেন। প্রার্থী ও সমর্থকদের আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করতে মাঠে থাকবেন ৬৫২ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও ৬৪০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট। সবমিলিয়ে ভোটের মাঠের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৬ লাখের বেশি সদস্য মাঠে নামছেন। নির্বাচন কমিশনের একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোট গ্রহণের আগে ও পরে সব মিলিয়ে মোট সাত দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জন্য প্রায় ৪১০ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ টাকা নির্বাচনের আগে অগ্রিম দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।





আরো খবর