বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান, ১৪৪৫ | ০৫:১৬ অপরাহ্ন (GMT)
ব্রেকিং নিউজ :
X
শিরোনাম :
  • নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে আ.লীগ: কাদের
  • ইসি নয়, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে হার্ডলাইনে যাবে বিএনপি


মঙ্গলবার, ১৫ জানুয়ারী ২০১৯ ০৫:৪৭:০৮ পূর্বাহ্ন Zoom In Zoom Out No icon

নাব্যতা সংকটে ‘ফরিদপুর নদীবন্দর’ অচলপ্রায়

ফরিদপুর সিএন্ডবি ঘাটকে পূর্ণাঙ্গ নৌ বন্দর ঘোষণা করার পর চার বছর পেরিয়ে গেলেও কোন ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত হয়নি আজো। এমনকি নাব্যতা সংকটে বন্দরটিও এখন অচলপ্রায়। পদ্মা নদীর তীরে শতবছরের ঐহিত্যবাহী ফরিদপুরের সিএ্যন্ডবি ঘাটকে ২০১৫ সালে ‘ফরিদপুর নদীবন্দর’ ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে এঘাটটিকে ঘিরে আশায় বুক বেঁধেছিল এ বন্দর দিয়ে পণ্য আনায়ণ ও প্রেরণকারী ব্যবসায়ীরা। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েক হাজার শ্রমিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও প্রত্যাশা করেছিলো বন্দরটিকে ঘিরে তাদের জীবন মান উন্নয়নের। কিন্তু সুদীর্ঘ সময়েও বন্দরের দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন না হওয়ায় হতাশ এখানের সংশ্লিষ্টরা। বন্দর ইজারাদার কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি নাফিজুর রহমাস তাপস জানান, প্রাক্তণ এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের প্রচেষ্টায় ঘাটটি নদী বন্দরে উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে চট্রগ্রাম, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন বন্দর থেকে সরাসরি পণ্য আসে ফরিদপুর নদী বন্দরে। অন্যদিকে ফরিদপুর থেকে প্রতিদিন গরু, ধান ও পাটসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহন করা হয় বিভিন্ন এলাকায়। বিভিন্ন বন্দর থেকে সিমেন্ট, বালু, কয়লা, রডসহ কমপক্ষে ৫০ ধরণের পণ্য আনা-নেওয়া করা হয় বলেও দাবী করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘নাব্যতা সংকট দূর না হলে মালামাল পরিবহন কমে যাবে, এতে কমে যাবে রাজস্ব আদায়ও।’ তিনি দ্রুত নদীটি ড্রেজিং করে ফরিদপুর নৌবন্দরে পণ্যবাহী জাহাজ যাতায়াতের সুব্যবস্থা করার পাশাপাশি বন্দরের নূন্যতম সুযোগ সুবিধা প্রদান করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান তিনি। ফরিদপুর নৌ বন্দরের কয়লা ও রড সিমেন্ট ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, বিআইডব্লিউটিএ’র উদাসিনতায় অদ্যাবদি সংস্থাটির নিজস্ব কোন স্থায়ী জায়গা বা অফিস হয়নি, নেই সংযোগ সড়কও। তিনি বলেন, একটি মাত্র পন্টুন দিয়ে ধীর গতিতে খালাস হচ্ছে বন্দরে আসা কয়েকশ জাহাজ ও পণ্যবাহী কার্গোর মালামাল। মাল বোঝাই জাহাজের নাবিক মো. দীন ইসলাম জানান- বন্দরে সার, সিমেন্ট, চাল, পাথর, কয়লা, বালুসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী জাহাজকে সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষা থাকতে হয় পদ্মা নদীতে। এতে প্রতিনিয়ত লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে এ রুট দিয়ে পণ্য বহনকারী জাহাজ-কার্গোর মালিক ও পণ্য সরবরাহকারী ব্যবসায়ীদের। পাশাপাশি বন্দর পুরোপুরি সচল না থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়ছে ঘাট শ্রমিকরা। কুষ্টিয়ার সিমেন্ট ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান জানান, সময় মত মালামাল না আসায় ও আটকে থাকা নৌযান থেকে ছোট ছোট নৌযান ব্যবহার করে পণ্য খালাস করে ঘাটে আনায় ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। ফরিদপুর নদী-বন্দরের কুলি শ্রমিকের সরদার জাফর শেখ জানান, এই বন্দরের ছয় হাজার বেশি শ্রমিকের জীবন-জীবিকা রয়েছে। যাদের একটি বড় অংশ এখন অলস সময় কাটাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘নদীর নাব্যতা না থাকায় কার্গো জাহাজ এখন কম আসছে। এতে বেকার হয়ে পড়ছে শ্রমিকরা।’ ফরিদপুর চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, ফরিদপুর নদী বন্দরটি এই অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এই ঘাটটিকে বন্দর ঘোষণার পরেও বিআইডব্লিউটিএ’র দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন কর্মকান্ড না থাকায় বন্দরটি দিন দিন তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। বিআইডব্লিউটিএ এর পোর্ট অফিসার সেলিম রেজা বলেন, ‘ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে এরই মধ্যে জরিপের কাজ শুরু হয়েছে। জরিপ শেষে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে। এছাড়াও এই বন্দরের বড় ধরণের উন্নয়ন কাজের জন্য ইতিমধ্যেই বড় ধরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।’





আরো খবর